ঝিনাইদহঃ
উপজেলা নির্বাচনের শেষ ধাপে আগামিকাল ১৪ অক্টোবর ঝিনাইহের কোটচাঁদপুর ও মহেশপুর উপজেলার ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। ভারতীয় সীমান্তবর্তী এই দুই উপজেলার মধ্যে কোটচাঁদপুর উপজেলা নির্বাচনে সম্পূর্ণভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে ভোট গ্রহনের কাজে ব্যবহৃত ভোটিং মেশিন সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে পৌছে গেছে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনার বেগম কবিতা খানম প্রিজাইডিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ উদ্বোধন করে গেছেন। পরের দিন নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন। সে সময় তিনি নির্বাচনে অনিময় হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নির্দেশ মোতাবেক লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি দলীয় প্রার্থী।
বিএনপি মনোনিত ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক অভিযোগ করেছেন ভোটের কোন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু নেই। নৌকার প্রার্থীরা ভোটের প্রচার কাজ করলেও তাদের প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিএনপি মনোনিত প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। বিএনপি নেতা সাবেক পৌর মেয়র সালাউদ্দীন বুলবুল সিডলকে আটক করা হয়েছে। যদিও সাবেক এই পৌর মেয়র সিডল জামিনে জেল থেকে বের হয়েছেন।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকার প্রার্থী শরিফুননেছা মিকি। তার দাবি নির্বাচনে সকল প্রার্থীরা মাঠে রয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই ভোট করছে। কোন প্রার্থীর প্রচার কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে না।
এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী শরিফুননেছা মিকি, বিএনপি মনোনিত প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী খায়রুল হোসেন সাথী। খাইরুল হোসেন সাথী দির্ঘদিন সংবাদিকতার সাথে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে।
পুরুষ ভাইস চেয়াম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, আওমামীলীগ সমর্থিত আব্দুল করিম, কামাল হাওলাদার, রেজাউল ইসলাম রেজা, রিয়াজ হোসেন, শরিফুল ইসলাম, বিএনপি সমার্থত রোস্তম কবির এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নিমাই চন্দ্র দে। এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, আ’লীগ সমর্থিত রুবিনা খাতুন, তৃতীয় লিঙ্গের পিংকী খাতুন এবং বিএনপি সমর্থিত নাছিমা ইসলাম।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানিয়েছে, কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ৫৩ ভোট কেন্দ্রে ২৯৫ টি বুথে ভোট নেওয়া হবে। সব ক’টি বুথেই থাকবে ইলেট্রনিক ভোটিং মেশিন। এই উপজেলায় মোট ভোটার রয়েছে এক লাখ ৮ হাজার ৮৮২ জন। সুষ্ঠ্যভাবে ভোট গ্রহনের লক্ষ্যে বুথ সংখ্যার দ্বিগুন ভোটিং মেশিন এসেছে বলে জানিয়েছে উপজেলা নির্বাচন অফিস।
ঝিনাইদহ এবারই প্রথম কোন ভোটে ইলেট্রিক মেশিনে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে এ উপজেলার ভোটরদের মধ্যে একটা কৌতুহলের জন্ম হয়েছে।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ এ উপজেলার নির্বাচনের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী সমর্থিত প্রার্থীরা জয়লাভ করে। বিন্তু এবারের নির্বাচনে জামায়াতের কোন প্রার্থী ভোটে অংশ নিচ্ছেন না।
বিএনপি মনোনিত প্রার্থী আব্দুর রাজ্জাক নির্বাচনের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বলে কিছু নেই। ভোটের মাঠে না যাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত আমাদের কর্মী সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নির্বাচনের আচরণ বিধি ভঙ্গ করে জেলার তিনজন সংসদ সদস্য ভোটের প্রচার করছেন। নৌকার পক্ষে প্রতিটি গ্রামের নির্বাচনী সভা করলেও আমাদের করতে দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামীলীগের নির্বাচনী সভা থেকে নৌকার ভোট চাওয়া হচ্ছে না। সেখান থেকে বলা হচ্ছে ধানের শীষের ভোটাররা যে মাঠে না যায় সে জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিএনপির একমাত্র নির্বাচনী অফিস ভেঙ্গে তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। সমস্ত পোষ্টার ছিড়ে ফেলা হয়েছে। এখন আর পোষ্টার টানাতে দেওয়া হচ্ছে না। বৃহস্পতিবার আমার ধানের শীষের প্রচার মাইক ভাঙ্গচুর করা হয়েছে। এসব ঘটনা লিখিত ভাবে নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় রিটার্নিং অফিসারকে জানানো হয়েছে কিন্তু সন্তোষজনক কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান ভোটের সুন্দর পরিবেশ রয়েছে দাবি করে জানান, এবারই প্রথম জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ইলেট্রিক ভোটিং মেশিনে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ভোটিং মেশিন পৌছে গেছে। প্রার্থীরা উৎসবের সাথে নির্বাচনের প্রচার প্রচারনা করেছন। কোথায় কোন অভিযোগ পেলে আইন শৃঙ্খলার দ্বায়িত্বে থাকা মেজিষ্ট্রেট ও পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে।