ঢাকা ০২:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ২০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ কতদিন চলবে!

সবুজদেশ ডেস্ক:

ছবি সংগৃহীত-

 

এক এক করে তিন বছরে পা দিতে যাচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধ। এরই মধ্যে রণক্ষেত্রে বিশাল একটি অংশ হারিয়েছে কিয়েভ। লাগাতার যুদ্ধে ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছে জেলেনস্কির বাহিনী। যদিও দেশটির পূর্বাঞ্চলে এখনো রুশ সেনাদের অগ্রগতি ঠেকিয়ে রাখছে ইউক্রেনের সেনারা। তবে কুরাখোভ শহরের কাছে রুশ অবস্থান দ্বারা আটকা পড়েছে অনেক সেনা।

অন্যদিকে আগামী মাসেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুদ্ধবিরোধী ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণ কিয়েভের সামরিক সহায়তাকে আরও সংকুচিত করার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে আরও এক বছর যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে কি ইউক্রেন?

সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা বিবিসি। ওই প্রতিবেদনে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীতে কর্মরত বেশ কয়েকজন কমান্ডার ও সৈনিকের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে যুদ্ধে স্বজন হারিয়েছেন, বাড়ি ছেড়েছেন অথবা বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন ইউক্রেনীয় নাগরিকদের মন্তব্যও তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে।

রুশ সামরিক অভিযানের পর ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া ৩১ বছরের কমান্ডার সুরাত বিবিসির প্রতিবেদককে জানান, যখন যুদ্ধ শুরু হয় তখন তিনি মনে করেছিলেন এটি তিন বছর চলতে পারে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এ যুদ্ধ আগামী ১০ বছর লড়তে হবে। যদিও ট্রাম্পের যুদ্ধ বন্ধের ইচ্ছাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না সুরাত, তবে একটি কার্যকর চুক্তিতে পৌঁছাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে বলে মনে করেন এই সেনাসদস্য।

সুরাত জানান, তিনি খুবই বাস্তবিকভাবে চিন্তা করতে চান। এখানে ইউক্রেনের জন্য কোনো ন্যায়বিচার অপেক্ষা করছে না। তবে তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে যেতে চান বলেও জানান।

আরেক সেনাসদস্য জানান, আলোচনার মাধ্যমে কেবল যুদ্ধ সাময়িকভাবে থামতে পারে, তবে আগামী এক-দুই বছর পর তা আবারও ইউক্রেনের ঘাড়ে ফিরে আসবে। ইউক্রেনের এক সেনা জানান, ইউক্রেনবিহীন পৃথিবীতে বেঁচে থাকার পরিবর্তে তিনি জয়ের জন্য মৃত্যুকে বরণ করতেও রাজি আছেন।

ইউক্রেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ডেনিপ্রোতে ক্রামগত রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনে চলছে। সেখানকার বাসিন্দারা জানান, ইউক্রেনের উচিত এখনই যুদ্ধ থামিয়ে আলোচনায় আসা। এমনকি বিভিন্ন জরিপে নাগরিকরা যুদ্ধের পরিবর্তে আলোচনাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। বিশেষ করে নারীরা মনে করছেন এই যুদ্ধে সামরিকভাবে কেউ জয়ী হতে পারবে না।

ডেনিস নামে একজন নারী বলেন, ইউক্রেনের হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা সরকারীভাবে স্বীকার করা সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। তিনি মনে করেন, যুদ্ধে ৪ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয় নিহত এবং আহত হয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন, আরও বেশি মানুষের মৃত্যু সমস্যার সমাধান করবে না। তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধবিরতি চাই, আমরা আরও অনেক বছর ধরে যুদ্ধ চালাতে পারব না।

বলা হচ্ছে, উভয় পক্ষের আলোচনায় ইউক্রেনের নারীদের সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, যারা যুদ্ধে তাদের বাবা, ভাই, স্বামী ও সন্তানদের হারিয়েছেন। তারা মনে করছেন, এমনকি শান্তির জন্য ইউক্রেনকে তার ভূমি রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দিতে হতে পারে।

সবুজদেশ/এসইউ

About Author Information
আপডেট সময় : ০৯:৪৭:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪
১৬ Time View

রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ কতদিন চলবে!

আপডেট সময় : ০৯:৪৭:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

 

এক এক করে তিন বছরে পা দিতে যাচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধ। এরই মধ্যে রণক্ষেত্রে বিশাল একটি অংশ হারিয়েছে কিয়েভ। লাগাতার যুদ্ধে ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়েছে জেলেনস্কির বাহিনী। যদিও দেশটির পূর্বাঞ্চলে এখনো রুশ সেনাদের অগ্রগতি ঠেকিয়ে রাখছে ইউক্রেনের সেনারা। তবে কুরাখোভ শহরের কাছে রুশ অবস্থান দ্বারা আটকা পড়েছে অনেক সেনা।

অন্যদিকে আগামী মাসেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুদ্ধবিরোধী ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণ কিয়েভের সামরিক সহায়তাকে আরও সংকুচিত করার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে আরও এক বছর যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারবে কি ইউক্রেন?

সম্প্রতি ইউক্রেন যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা বিবিসি। ওই প্রতিবেদনে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীতে কর্মরত বেশ কয়েকজন কমান্ডার ও সৈনিকের বক্তব্য তুলে ধরা হয়। একইসঙ্গে যুদ্ধে স্বজন হারিয়েছেন, বাড়ি ছেড়েছেন অথবা বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন ইউক্রেনীয় নাগরিকদের মন্তব্যও তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে।

রুশ সামরিক অভিযানের পর ইউক্রেনের সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া ৩১ বছরের কমান্ডার সুরাত বিবিসির প্রতিবেদককে জানান, যখন যুদ্ধ শুরু হয় তখন তিনি মনে করেছিলেন এটি তিন বছর চলতে পারে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এ যুদ্ধ আগামী ১০ বছর লড়তে হবে। যদিও ট্রাম্পের যুদ্ধ বন্ধের ইচ্ছাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না সুরাত, তবে একটি কার্যকর চুক্তিতে পৌঁছাতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে বলে মনে করেন এই সেনাসদস্য।

সুরাত জানান, তিনি খুবই বাস্তবিকভাবে চিন্তা করতে চান। এখানে ইউক্রেনের জন্য কোনো ন্যায়বিচার অপেক্ষা করছে না। তবে তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে যেতে চান বলেও জানান।

আরেক সেনাসদস্য জানান, আলোচনার মাধ্যমে কেবল যুদ্ধ সাময়িকভাবে থামতে পারে, তবে আগামী এক-দুই বছর পর তা আবারও ইউক্রেনের ঘাড়ে ফিরে আসবে। ইউক্রেনের এক সেনা জানান, ইউক্রেনবিহীন পৃথিবীতে বেঁচে থাকার পরিবর্তে তিনি জয়ের জন্য মৃত্যুকে বরণ করতেও রাজি আছেন।

ইউক্রেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ডেনিপ্রোতে ক্রামগত রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনে চলছে। সেখানকার বাসিন্দারা জানান, ইউক্রেনের উচিত এখনই যুদ্ধ থামিয়ে আলোচনায় আসা। এমনকি বিভিন্ন জরিপে নাগরিকরা যুদ্ধের পরিবর্তে আলোচনাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। বিশেষ করে নারীরা মনে করছেন এই যুদ্ধে সামরিকভাবে কেউ জয়ী হতে পারবে না।

ডেনিস নামে একজন নারী বলেন, ইউক্রেনের হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা সরকারীভাবে স্বীকার করা সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। তিনি মনে করেন, যুদ্ধে ৪ লাখেরও বেশি ইউক্রেনীয় নিহত এবং আহত হয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন, আরও বেশি মানুষের মৃত্যু সমস্যার সমাধান করবে না। তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধবিরতি চাই, আমরা আরও অনেক বছর ধরে যুদ্ধ চালাতে পারব না।

বলা হচ্ছে, উভয় পক্ষের আলোচনায় ইউক্রেনের নারীদের সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করতে হবে, যারা যুদ্ধে তাদের বাবা, ভাই, স্বামী ও সন্তানদের হারিয়েছেন। তারা মনে করছেন, এমনকি শান্তির জন্য ইউক্রেনকে তার ভূমি রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দিতে হতে পারে।

সবুজদেশ/এসইউ