র‌্যাবের এএসপি পরিচয় তিনি ইতিপূর্বে বিয়ে করেছিলেন ৮টি। ৯ম বিয়ের বৌ-ভাত অনুষ্ঠান করার প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু তার সেই অনুষ্ঠান আর করা হয়নি। এর আগেই আসল র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হলেন তিনি। ২ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে র‌্যাবের সিনিয়র এএসপি মোঃ আলেপ উদ্দিন ও মোঃ মশিউর রহমানের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকা থেকে মোঃ শাহীন আলম তারেক ওরফে লিটন ওরফে এএসপি সজিব (২৯) নামের ওই প্রতারককে গ্রেফতার করে।

বুধবার সন্ধ্যায় পাঠানো র‌্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সজিব মূলত একজন পেশাদার প্রতারক চক্রের সদস্য। তার নিজ এলাকায় সে প্রতারক লিটন হিসেবে পরিচিত। সে র‌্যাব-১১ এর এএসপি পরিচয়ে এ পর্যন্ত ৯টি বিয়ে করেছে বলে জানা যায়। সজিব দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ এলাকায় র‌্যাবের এএসপি পরিচয় দিয়ে সাধারণ লোকের কাছ থেকে মামলার তদবির, আসামি ছাড়ানোর জন্য উৎকোচ গ্রহণ করাসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংগঠিত করে আসছিল। সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোড এলাকায় এএসপি হিসেবে অনেকের কাছে সে পরিচিত। লোকজনের কাছে বিশ্বাস যোগ্যতা অর্জন করার জন্য সে বিশেষ কৌশলের আশ্র্রয় নিত। এমনকি সে তার মোবাইলে ফটোশপের মাধ্যমে পুলিশ ও র‌্যাবের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার র‌্যাংকব্যাজ পরিহিত ছবির সাথে তার নিজের ছবি এডিটিং করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণাসহ বিভিন্ন ধরণের অপরাধও করত। এমন কি প্রধানমন্ত্রী তাকে রাষ্ট্রীয় পদক পরিয়ে দিচ্ছেন সম্বলিত একটি ভুয়া ছবিও তার মোবাইলে রাখে।

র‌্যাব জানায়, সজিব শুধু এএসপি পরিচয়ই দিত না। প্রতারণা করার জন্য মানুষের শ্রেণি বুঝে সে কখনও পুলিশের এসআই, কখনও র‌্যাবের ওয়ারেন্ট অফিসার পরিচয় প্রদান করে আসছিল। র‌্যাব-১১ এর আভিযানিক দল তার কাছে বিপুল পরিমান বিয়ের দাওয়াত কার্ড জব্দ করে যা তার নিজের বিয়ের। ঐ কার্ডগুলোতে বর হিসাবে তার নাম এএসপি সজিব লিখা। দাওয়াত কার্ডগুলোর উপরে র‌্যাব ও পুলিশের বিভিন্ন উর্ধ্বর্তন কর্মকর্তার নাম ঠিকানা লেখা ছিল।

সজিব জানায়, সে ৭ দিন পূর্বে নতুনভাবে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় তার নবম বিয়ে সম্পন্ন করেছে। ১২ অক্টোবর হাজী  ইব্রাহীম খলিল শপিং কমপ্লেক্স এন্ড প্রিয়ম নিবাসস্থ তাজমহল চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে তার বৌ-ভাত অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। এ বৌ-ভাত অনুষ্ঠানের দাওয়াত কার্ডও তিনি ছাপিয়েছিলেন। এছাড়াও ভুয়া এএসপি নারারায়ণগঞ্জ ও তার আশে পাশের এলাকা থেকে বিদেশে লোক পাঠানোর কথা বলে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। ১ অক্টোবর সিদ্ধিরগঞ্জ হাউজিং এলাকায় প্রতারণার উদ্দেশ্যে তিন কোটি টাকা মূল্যের একটি বাড়ি ক্রয়ের জন্য এএসপি পরিচয় প্রদান করে ভয়ভীতির প্রদর্শের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার পিতার নাম হাজী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। তাদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার এখলাসপুর এলাকায়।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here