লটারিতে মাশরাফিকে পেয়ে গেল জেমকন খুলনা
সবুজদেশ ডেস্কঃ
আজ (রোববার) দুপুরে বিপ টেস্টে পাস করার পরপরই শুরু হয় নতুন প্রশ্ন, তাহলে কোন দলে খেলবেন মাশরাফি বিন মর্তুজা? প্রথমে শুধুমাত্র ফরচুন বরিশাল আগ্রহ প্রকাশ করলেও, একে-একে এ দৌড়ে নাম লেখায় বেক্সিমকো ঢাকা, মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী ও জেমকন খুলনা। ফলে মাশরাফির ভাগ্য নির্ধারণে দ্বারস্থ হতে হয় লটারির।
সন্ধ্যায় বিসিবির কনফারেন্স রুমে হওয়া লটারিতে ভাগ্যের শিকে ছিঁড়েছে খুলনার। তিন দলকে পেছনে ফেলে লটারিতে মাশরাফিকে পেয়েছে জেমকন খুলনা। ফলে পঞ্চপাণ্ডবের তিনজনই পড়ে গেলেন এক দলে। সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে মাশরাফিও এখন খুলনার। তবে দলের বায়ো-বাবলে যোগ দেয়ার করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হতে হবে মাশরাফিকে।
লটারি প্রক্রিয়ায় চার দলের প্রতিনিধি ছাড়া বিসিবির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস। একটি পটে রাখা হয় চার দলের নাম লেখা চারটি কুপন। সেখান থেকে একটি তুলেন জালাল ইউনুস, যেখানে লেখা ছিল জেমকন খুলনার নাম।
স্বাভাবিকভাবেই ‘এ’ ক্যাটাগরির খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত হবেন মাশরাফি। তবে এ ক্যাটাগরির পুরো ১৫ লাখ টাকা পারিশ্রমিক পাবেন না মাশরাফি। যে কয় ম্যাচ তিনি খেলবেন, সেই আনুপাতিক হারে তার পারিশ্রমিক দেবে খুলনা। করোনা পরীক্ষায় উৎরে গেলে মঙ্গলবারের ম্যাচেই মাঠে দেখা যেতে পারে মাশরাফিকে।
মাশরাফিকে দল বুঝিয়ে দেয়ার লটারি শেষে জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘আপনারা দেখেছেন যে একের বেশি দল আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যে কারণে স্বচ্ছতা রাখার জন্য লটারি করা হয়েছে। যাতে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বজায় থাকে। লটারিতে সব দলের সমান সুযোগ ছিল। সবাই নিজেদের নামের টোকেন রেখেছে। সব দলের প্রতিনিধির সামনে লটারি করা হয়েছে। যেখানে খুলনা পেয়েছে মাশরাফিকে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘মাশরাফি ফেরায় আমরা খুশি। আমরা তাকে মাঠে দেখতে চাই। সে খুবই পরিশ্রমী খেলোয়াড়। যে দলেই খেলুক, আমার বিশ্বাস সে ভালো করবে। তার জন্য সবসময় শুভকামনা। মাশরাফি আমাদের অন্যতম আইকন খেলোয়াড়। যে দলেই খেলবে, সে অনেক বড় একটা অনুপ্রেরণা। মাশরাফি নিজেও সবাইকে অনুপ্রাণিত করে, অধিনায়কত্ব না করলেও সামনে থেকে নিজের কাজটা সে করতে পারবে।
মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যানের মতে, মাশরাফির অন্তর্ভুক্তি টুর্নামেন্টেরও জৌলুশ বাড়াবে। তার ভাষ্য, ‘অবশ্যই (টুর্নামেন্টের জৌলুশ বাড়বে)। এখন তো আমরা মাঠে দর্শক পাচ্ছি না। তবে মাশরাফির জন্য টিভির সামনে হয়তো অনেক দর্শক আরও আগ্রহ নিয়ে খেলা দেখবে। বেশি ম্যাচ হয়তো থাকবে না। তবে তারা যদি সেমিফাইনাল, ফাইনালে কোয়ালিফাই করে অবশ্যই টুর্নামেন্টের জৌলুশ বাড়বে।’
লটারি শেষে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন জেমকন খুলনার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ইনাম আহমেদ ও অপারেশন ম্যানেজার ইমরান খানও। কাজী ইনাম বলেছেন, ‘আমরা খুবই রোমাঞ্চিত যে, মাশরাফি বিন মর্তুজাকে পেয়েছে জেমকন খুলনা। মাশরাফি এর আগে কখনও বিপিএলেও খুলনার হয়ে খেলেনি। এবার বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে মাশরাফিকে আমরা পেয়েছি। আমি নিশ্চিত তার অনুপ্রেরণায় অন্য খেলোয়াড়রাও আরও ভাল খেলবে এবং দলও আরও ভাল করবে।’
একই দলে তিন বড় তারকা মাশরাফি, সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর উপস্থিতির বিষয়ে খুলনার অপারেশন ম্যানেজার ইমরান খানের ভাষ্য, ‘এটা আমার মনে হয় বাংলাদেশের দর্শকরা খুব ভালোভাবেই নেবেন। দুজন আইকনকে প্রথম পেয়ে যাওয়াটা আমাদের ভাগ্যের বিষয় ছিল। যেহেতু একটি দল প্রথমে কাউকে নেয়নি। ঐ কারণেই আমরা দুজন আইকনকে পেয়েছিলাম। আর এটা তো আপনারা দেখলেনই, পুরোপুরি ভাগ্যের বিষয় ছিল। আমরা পেয়ে গেছি, আমরা আশা করছিলাম মাশরাফি যেন আমাদের দলে খেলে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এখন আমরা পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে আছি। মাশরাফির অন্তর্ভুক্তির পর আমরা অবশ্যই চাইব যে, দল আরও ভাল খেলবে। আমরা টেবিলের এক-দুইয়ের মধ্যেই থাকতে চাই। মাশরাফি আমাদের ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র। যে কোনো দলে তার থাকাটা অনেক বড় বিষয়। আমরা মনে করি, মাশরাফির অন্তর্ভুক্তি জেমকন খুলনার জন্য অনেক বড় একটা প্রাপ্তি।’