লাদাখে আরও সেনা পাঠাচ্ছে চীন, দুর্গ গড়ছে ভারত
সবুজদেশ ডেস্কঃ
গালওয়ান সীমান্তে ভারত-চীন সংঘর্ষের পর লাদাখে যুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে। এরই মধ্যে উভয় দেশই রণসাজে সাজছে।
সংঘর্ষে ২০ সেনার মৃত্যুর পর দেশের অন্যপ্রান্ত থেকে লাদাখে বিপুল সেনা মোতায়েন করছে ভারত। রীতিমতো লাদাখে দুর্গ গড়ছে দেশটি।
ভারতের বিমানবাহিনী এ অঞ্চলে ফাইটার জেট ও সেনাবাহিনী কামান মোতায়েন করেছে। চীনও বসে নেই। সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে দেশটি তাদের সেনা মোতায়েন করেছে। এনেছে বোমারু বিমান ও ফাইটার স্কোয়াড্রনও।
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর প্রদেশ থেকে একটি বাহিনীকে লাদাখ পোস্টে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অন্যান্য এলাকা থেকেও একই নির্দেশ দেয়া হয়েছে বাহিনীগুলোকে।
মানালি হয়ে লেহ-লাদাখ যাওয়ার হাইওয়েজুড়ে রয়েছে সেনাবাহিনীর গাড়িবহর। সেই বহরে রয়েছে যুদ্ধে ব্যবহৃত বন্দুক এবং সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয় সামগ্রী। রয়েছে এম-৭৭৭ কামান, যা সম্প্রতি সেনাবাহিনীতে আনা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর তরফে ইতিমধ্যে পাঞ্জাব ও হিমাচল প্রদেশের বর্তমানে শান্তিপূর্ণ রয়েছে এমন এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি ব্রিগেড এবং ইঞ্জিনিয়ার রেজিমেন্টকে লাদাখের দিকে পাঠানো হয়েছে।
অনুমান করা হচ্ছে, এর মধ্যেই পূর্ব লাদাখে দুটি বিভাগের সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনী যখন মোতায়েনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, তখন ভারতীয় বিমানবাহিনীও (আইএএফ) পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার পূর্ববর্তী এলাকায় যুদ্ধবিমান জড়ো করার কাজ শুরু করেছে।
আইএএফ চীন সীমান্তবর্তী ঘাঁটিগুলোয় কয়েকটি সুখোই-৩০এমকেআই ও মিগ-২৯ বিমান এবং জাগুয়ার ফাইটার সদস্যদের লাদাখে পাঠিয়েছে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে লেহ, শ্রীনগর, অবন্তীপুর, বারেইলি, চাবুয়া, হাসিমারা ও তেজপুর।
সেনাবাহিনীতে আসা নতুন অ্যাপাচে হেলিকপ্টারও স্থানান্তরিত করা হয়েছে লাদাখের রাজধানী লেহতে। এ হেলিকপ্টারগুলোর অনেক উচ্চতায় কাজ করার এবং দুর্দান্ত নজরদারির ক্ষমতাও রয়েছে।
হিমাচল প্রদেশের সঙ্গে থাকা চীন সীমান্তের সুমডো এবং কৌরিক অঞ্চলে অতিরিক্ত সেনা পাঠানো হয়েছে। এপ্রিলে এসব এলাকায় চীনের বেশ কয়েকটি হেলিকপ্টার অনুপ্রবেশ করেছিল।
চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) গলওয়ান ভ্যালি, প্যাংগং তসো, দেপসাং, গোগড়া-হট স্প্রিংস এবং চুসুলের মতো অঞ্চলে তাদের বাহিনীর সদস্যদের জড়ো করেছে।
প্যাংগং তসোর উত্তর তীরে ফিঙ্গার-৪ থেকে ৮ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি নতুন দুর্গ নির্মিত হয়েছে। চীন জে-১১ এবং জে-৮ যোদ্ধাকে গালওয়ান এবং হট স্প্রিংস অঞ্চলে মোতায়েন করেছে।
এছাড়া তিব্বতের কাশগার ও হোতান রেঞ্জে বোমারু বিমান জড়ো করেছে দেশটি। চীন তিব্বতের আটটি ও উত্তরের অন্যান্য এলাকার বিমানঘাঁটিতে ২০টি ফাইটার স্কোয়াডন মোতায়েন করতে পারে।
উচ্চতা এবং কম বায়ুমণ্ডলীয় চাপের কারণে চীনা জেটগুলোর অস্ত্র এবং জ্বালানি বহন ক্ষমতা সীমিত।
এর আগে প্রয়োজনে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে হলেও নিজেদের সীমান্ত রক্ষার অঙ্গীকার করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, ভারতের সীমান্তের ভেতরে কোনো বিদেশি সৈন্য নেই এবং সীমানার ভেতরের কোনো অংশের দখলও তারা হারায়নি।