ঢাকা ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাশ আটকে রেখে তিন লাখ টাকা আদায়

Reporter Name

সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরপর তিনবার ভুল অপারেশনে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এরপর তার লাশ আটকে রেখে তিন লাখ টাকার বিলও আদায় করা হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ধামরাই উপজেলার নান্নার ইউনিয়নের জলশীন গ্রামের মো. লাল মাহমুদের স্ত্রী রোকসানা আক্তারকে বুধবার সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় তার অপারেশন (সিজার) হয়।

এতে তিনি একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। রোকসানার অভিভাবকরা জানান, অপারেশনের পর তার পেটের ভেতরের স্তরে কোনো সেলাই না দিয়েই শুধু ওপরের স্তরে সেলাই দিয়ে তাকে কেবিনে দেয়া হয়।

কিন্তু তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে গাইনি ডা. ফরিদা পারভিনকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। ওই দিন রাত ১০টার দিকে তার দ্বিতীয় দফা অপারেশন করা হয়। এতেও তার রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে অভিভাবকদের কোনো মতামত না নিয়েই বৃহস্পতিবার সকালে তার তৃতীয় দফা অপারেশন করা হয়। এরপর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে জরুরিভিত্তিতে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। এতে অভিভাবকদের মনে সন্দেহ হয়।

শুক্রবার সকালে প্রসূতি ও নবজাতককে রিলিজ করে দেয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তারা চাপ দেন। কিন্তু তিন লাখ টাকা বিলের জন্য রোকসানার মরদেহ ও তার নবজাতককে হাসপাতালে আটকে রাখে কর্তৃপক্ষ। বেলা ৩টার দিকে তিন লাখ টাকা বুঝে পাওয়ার পর লাশ ও নবজাতককে রিলিজ দেয়া হয়। নিজ গ্রামে জানাজা শেষে রোকসানার লাশ দাফন করা হয়। ধামরাইয়ের জলশীন গ্রামের মো. নুর ইসলামের মেয়ে রোকসানা।

রোকসানার বড় ভগ্নিপতি ধামরাই পৌরসভার বাগনগর মহল্লার বাসিন্দা মো. শওকত খান বলেন, ডা. ফরিদা পারভিন ভুল অপারেশন করে রোকসানাকে মেরে ফেলেছেন। আবার বেশি বিল নেয়ার জন্য তার লাশ আইসিইউতে রেখে দেয়া হয়। অভিযোগ করে তিনি বলেন, লাশ আটকে রেখে তিন লাখ টাকা বিল নিয়েছে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘হায়াত মওত’ একমাত্র আল্লাহর হাতে। সব চিকিৎসকই সর্ব শক্তি দিয়ে রোগীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। এ ক্ষেত্রেও তার কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।

About Author Information
আপডেট সময় : ১০:৪৩:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
৬৯৭ Time View

লাশ আটকে রেখে তিন লাখ টাকা আদায়

আপডেট সময় : ১০:৪৩:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরপর তিনবার ভুল অপারেশনে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। এরপর তার লাশ আটকে রেখে তিন লাখ টাকার বিলও আদায় করা হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ধামরাই উপজেলার নান্নার ইউনিয়নের জলশীন গ্রামের মো. লাল মাহমুদের স্ত্রী রোকসানা আক্তারকে বুধবার সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় তার অপারেশন (সিজার) হয়।

এতে তিনি একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। রোকসানার অভিভাবকরা জানান, অপারেশনের পর তার পেটের ভেতরের স্তরে কোনো সেলাই না দিয়েই শুধু ওপরের স্তরে সেলাই দিয়ে তাকে কেবিনে দেয়া হয়।

কিন্তু তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে গাইনি ডা. ফরিদা পারভিনকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। ওই দিন রাত ১০টার দিকে তার দ্বিতীয় দফা অপারেশন করা হয়। এতেও তার রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে অভিভাবকদের কোনো মতামত না নিয়েই বৃহস্পতিবার সকালে তার তৃতীয় দফা অপারেশন করা হয়। এরপর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে জরুরিভিত্তিতে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। এতে অভিভাবকদের মনে সন্দেহ হয়।

শুক্রবার সকালে প্রসূতি ও নবজাতককে রিলিজ করে দেয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তারা চাপ দেন। কিন্তু তিন লাখ টাকা বিলের জন্য রোকসানার মরদেহ ও তার নবজাতককে হাসপাতালে আটকে রাখে কর্তৃপক্ষ। বেলা ৩টার দিকে তিন লাখ টাকা বুঝে পাওয়ার পর লাশ ও নবজাতককে রিলিজ দেয়া হয়। নিজ গ্রামে জানাজা শেষে রোকসানার লাশ দাফন করা হয়। ধামরাইয়ের জলশীন গ্রামের মো. নুর ইসলামের মেয়ে রোকসানা।

রোকসানার বড় ভগ্নিপতি ধামরাই পৌরসভার বাগনগর মহল্লার বাসিন্দা মো. শওকত খান বলেন, ডা. ফরিদা পারভিন ভুল অপারেশন করে রোকসানাকে মেরে ফেলেছেন। আবার বেশি বিল নেয়ার জন্য তার লাশ আইসিইউতে রেখে দেয়া হয়। অভিযোগ করে তিনি বলেন, লাশ আটকে রেখে তিন লাখ টাকা বিল নিয়েছে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘হায়াত মওত’ একমাত্র আল্লাহর হাতে। সব চিকিৎসকই সর্ব শক্তি দিয়ে রোগীকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। এ ক্ষেত্রেও তার কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।