ঢাকা ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শতকোটি টাকার ব্যবসা

Reporter Name

‘আগে সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত টাকা গুনতাম। সেই দিন আর নেই; ভাটা পড়েছে। এখন সব মিলিয়ে এ এলাকাতেই দিনে শতকোটি টাকার ব্যবসা হচ্ছে।’

নারায়ণগঞ্জের পাইকারি বাজার নিতাইগঞ্জের অতীত আর বর্তমানকে এভাবেই তুলে ধরলেন সেখানকার পাইকারি ব্যবসায়ী আলী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শেখ হায়দার আলী।

নিতাইগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের বড় পাইকারি বাজার ঢাকার মৌলভীবাজার ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মতোই একসময় জমজমাট ছিল নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ। এখান থেকেই নদীপথে মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, নোয়াখালী, কিশোরগঞ্জ ও সিলেটের ব্যবসায়ীরা ভোগ্যপণ্য নিয়ে যেতেন। আর কুমিল্লা, ময়মনসিংহসহ কয়েক জেলার ব্যবসায়ীরা পণ্য কিনে নিয়ে যেতেন সড়কপথে। দিন বদলেছে। সেই সঙ্গে জৌলুশ হারিয়েছে নিতাইগঞ্জও। বর্তমানে বড় কোম্পানিগুলো নিজেরাই সারা দেশের ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে ভোগ্যপণ্য পৌঁছে দিচ্ছে। তা ছাড়া, যানজটের কারণে অনেকে সরাসরি নিতাইগঞ্জে আসতে চান না। ফলে আগের চেয়ে ক্রেতা কমে গেছে।

নিতাইগঞ্জে দিনের বেলায় ট্রাকে পণ্য ওঠানো-নামানো সীমিত করায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। শহরের ভেতরে যানজট কমাতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এ সিদ্ধান্ত নেয়।

অবশ্য এত কিছুর পরও নিতাইগঞ্জে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ কোটি টাকার বেচাবিক্রি হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত না থাকলেও পুরোনো ব্যবসায়ীরা বলছেন, ময়দা ও গমের ভুসির জন্য নিতাইগঞ্জ এখনো অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এখনো প্রতি রাতে ৩৫০ থেকে ৪০০ ট্রাক পণ্য আসা-যাওয়া করে এ পাইকারি বাজারে। ময়দা মিলের চাহিদা মেটাতে কার্গোতে করে প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে হাজার হাজার বস্তা গম আসছে। মিলে ময়দা উৎপাদনের পর তা পাইকারদের হাত ঘুরে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেল, মূল সড়ক থেকে অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়েছে ব্যবসা। আড়ত থেকে চাল, ডাল ও ময়দার বস্তা এবং ভোজ্যতেলের ড্রাম নিয়ে শীতলক্ষ্যার ঘাটে বেশ কিছু ট্রলারে ওঠাচ্ছেন শ্রমিকেরা। তাঁরা বলেন, পণ্য যাবে নরসিংদী ও মুন্সিগঞ্জে।

লেনদেনের সুবিধার জন্য বেশ কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা আছে এ বাজারে। তবে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকাটির রাস্তাঘাট ভাঙাচোরা। বৃষ্টি হলেই পানি জমে। পানি সরে গেলে কাদায় থকথক। তখন চলাফেরা কিংবা পণ্য ওঠানো-নামানোতে সমস্যা হয়।

নিতাইগঞ্জের পুরোনো ব্যবসায়ীদের একজন শেখ ওয়াজেদ আলী। ১৯৭২ সাল থেকে ব্যবসা করছেন। তাঁর দুটি ময়দার মিল আছে। সেখানে প্রতিদিন ৬০ টন ময়দা উৎপাদিত হয়। ঢাকা ও গাজীপুরের ব্যবসায়ীদের কাছে এই ময়দা পাইকারি দরে বিক্রি হয়। বর্তমানে মানভেদে ময়দার কেজি ১৯ থেকে ৩০ টাকা।

জানতে চাইলে ওয়াজেদ আলী বলেন, নিতাইগঞ্জে ছোট-বড় ৭২টি ময়দার মিল আছে। সারা দেশের ময়দার চাহিদার বড় অংশ মেটায় নিতাইগঞ্জ।

অন্য ভোগ্যপণের ব্যবসার বিষয়ে শেখ ওয়াজেদ আলী বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারি বাজার গড়ে উঠেছে। তাই দূরের জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা বর্তমানে নিতাইগঞ্জে আসেন না। তবে নারায়ণগঞ্জ ও আশপাশের কয়েকটি জেলার পাইকারেরা কমবেশি আসেন। তাঁদের জন্যই নিতাইগঞ্জ টিকে আছে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিতাইগঞ্জে ১০০-র বেশি চালের আড়ত, ৫০টির মতো গমের আড়ত, ডালের ১০০টি, লবণের ৫০টি, তেল-চিনির প্রায় ৪০০টি, ময়দা ৬৮টি, ভুসি মালের হাজারখানেক ছোট-বড় আড়ত আছে। ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের কারখানা আছে কয়েক শ। এখানকার আড়ত ও কারখানায় কাজ করেন প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক।

নিতাইগঞ্জে লবণ পরিশোধনের কারখানা ও গরিবে নেওয়াজ সল্ট নামে আড়ত আছে জামাল দেওয়ানের। ১৯৭৫ সাল থেকে তিনি এই পাইকারি বাজারে ব্যবসা করেন। নিজের কারখানায় পরিশোধিত লবণের ব্র্যান্ড-ফুলকপির পাশাপাশি এসিআই, মোল্লাসহ বিভিন্ন কোম্পানির লবণ পাইকারি বিক্রি করেন তিনি। খাওয়ার লবণ ছাড়া ডাইং কারখানা ও ট্যানারির জন্য লবণ বিক্রি হয় তাঁর আড়তে।

জামাল দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ক্রেতা অনেক কমে গেছে। তারপরও লবণের ব্যবসা খুব একটা খারাপ বলা যাবে না। দিনে গড়ে ৩০০ কার্টন লবণ বিক্রি হয়। প্রতি কার্টনে ২৫ কেজি লবণ থাকে। তিনি আরও বলেন, লবণ কিনতে নিতাইগঞ্জে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের ব্যবসায়ীরাই বেশি আসেন।

ডালের জন্য বেশ বিখ্যাত নিতাইগঞ্জ। আড়তের পাশাপাশি বেশ কিছু ডালের মিল আছে এখানে। ডালের আস্ত দানা নিয়ে এসে এসব মিলে ভাঙানো হয়। তবে সিটি, তীর, ফ্রেশের মতো বড় প্রতিষ্ঠান বাজারের বড় অংশ দখল করে নেওয়ায় নিতাইগঞ্জের ডালের মিলের অবস্থা খারাপ। অনেক মিল এখন বন্ধ।

জনতা এন্টারপ্রাইজের নিজের ডালের মিলের পাশাপাশি আড়তও আছে। তবে আড়তে তীর ব্র্যান্ডের ডালের বস্তাই বেশি দেখা গেল। আড়তের কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ পোদ্দার বলেন, ‘বড় কোম্পানির সঙ্গে আমরা দামে পারি না। তাই তাদের ডালই বিক্রি করি।’ বললেন, দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ বস্তা ডাল বিক্রি করেন।

বছর পনেরো আগেও ভৈরব, ময়মনসিংহ, সিলেট, কুমিল্লার ব্যবসায়ীরা নিতাইগঞ্জ থেকে ভোগ্যপণ্য কিনে নিয়ে যেতেন। ভৈরবে আগে প্রতিদিন তিনটি কার্গোতে করে পণ্যসামগ্রী নিয়ে যেতেন ব্যবসায়ীরা। এ তথ্য দিয়ে চিনির পুরোনো পাইকারি ব্যবসায়ী আলী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শেখ হায়দার আলী বলেন, আগে সারা দিনই বিভিন্ন জেলার পাইকারদের ভিড়ে জমজমাট থাকত নিতাইগঞ্জ। এখন কেবল ময়দার ব্যবসা জমজমাট আছে। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার টন গম ও ময়দা বিক্রি হয় নিতাইগঞ্জে।

শেখ হায়দার আলী বলেন, গত বছরও আশপাশের জেলার ছোট ব্যবসায়ীরা ছোট ট্রাক নিয়ে পণ্য কিনতে আসতেন। বিভিন্ন পণ্য কিনে নিয়ে আবার দিনে দিনে চলে যেতেন। তবে দিনের বেলায় ট্রাক প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করায় তাঁরা আর আসছেন না। তা ছাড়া, অন্য বাজারের মতো এখানে ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি নেই। ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সে জন্য সিটি করপোরেশনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৩:৫৯:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুলাই ২০১৮
১৫৫১ Time View

শতকোটি টাকার ব্যবসা

আপডেট সময় : ০৩:৫৯:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুলাই ২০১৮

‘আগে সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত টাকা গুনতাম। সেই দিন আর নেই; ভাটা পড়েছে। এখন সব মিলিয়ে এ এলাকাতেই দিনে শতকোটি টাকার ব্যবসা হচ্ছে।’

নারায়ণগঞ্জের পাইকারি বাজার নিতাইগঞ্জের অতীত আর বর্তমানকে এভাবেই তুলে ধরলেন সেখানকার পাইকারি ব্যবসায়ী আলী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শেখ হায়দার আলী।

নিতাইগঞ্জের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের বড় পাইকারি বাজার ঢাকার মৌলভীবাজার ও চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের মতোই একসময় জমজমাট ছিল নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ। এখান থেকেই নদীপথে মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, নোয়াখালী, কিশোরগঞ্জ ও সিলেটের ব্যবসায়ীরা ভোগ্যপণ্য নিয়ে যেতেন। আর কুমিল্লা, ময়মনসিংহসহ কয়েক জেলার ব্যবসায়ীরা পণ্য কিনে নিয়ে যেতেন সড়কপথে। দিন বদলেছে। সেই সঙ্গে জৌলুশ হারিয়েছে নিতাইগঞ্জও। বর্তমানে বড় কোম্পানিগুলো নিজেরাই সারা দেশের ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে ভোগ্যপণ্য পৌঁছে দিচ্ছে। তা ছাড়া, যানজটের কারণে অনেকে সরাসরি নিতাইগঞ্জে আসতে চান না। ফলে আগের চেয়ে ক্রেতা কমে গেছে।

নিতাইগঞ্জে দিনের বেলায় ট্রাকে পণ্য ওঠানো-নামানো সীমিত করায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। শহরের ভেতরে যানজট কমাতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এ সিদ্ধান্ত নেয়।

অবশ্য এত কিছুর পরও নিতাইগঞ্জে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০ কোটি টাকার বেচাবিক্রি হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত না থাকলেও পুরোনো ব্যবসায়ীরা বলছেন, ময়দা ও গমের ভুসির জন্য নিতাইগঞ্জ এখনো অপ্রতিদ্বন্দ্বী। এখনো প্রতি রাতে ৩৫০ থেকে ৪০০ ট্রাক পণ্য আসা-যাওয়া করে এ পাইকারি বাজারে। ময়দা মিলের চাহিদা মেটাতে কার্গোতে করে প্রতিদিন চট্টগ্রাম থেকে হাজার হাজার বস্তা গম আসছে। মিলে ময়দা উৎপাদনের পর তা পাইকারদের হাত ঘুরে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেল, মূল সড়ক থেকে অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়েছে ব্যবসা। আড়ত থেকে চাল, ডাল ও ময়দার বস্তা এবং ভোজ্যতেলের ড্রাম নিয়ে শীতলক্ষ্যার ঘাটে বেশ কিছু ট্রলারে ওঠাচ্ছেন শ্রমিকেরা। তাঁরা বলেন, পণ্য যাবে নরসিংদী ও মুন্সিগঞ্জে।

লেনদেনের সুবিধার জন্য বেশ কিছু বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা আছে এ বাজারে। তবে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকাটির রাস্তাঘাট ভাঙাচোরা। বৃষ্টি হলেই পানি জমে। পানি সরে গেলে কাদায় থকথক। তখন চলাফেরা কিংবা পণ্য ওঠানো-নামানোতে সমস্যা হয়।

নিতাইগঞ্জের পুরোনো ব্যবসায়ীদের একজন শেখ ওয়াজেদ আলী। ১৯৭২ সাল থেকে ব্যবসা করছেন। তাঁর দুটি ময়দার মিল আছে। সেখানে প্রতিদিন ৬০ টন ময়দা উৎপাদিত হয়। ঢাকা ও গাজীপুরের ব্যবসায়ীদের কাছে এই ময়দা পাইকারি দরে বিক্রি হয়। বর্তমানে মানভেদে ময়দার কেজি ১৯ থেকে ৩০ টাকা।

জানতে চাইলে ওয়াজেদ আলী বলেন, নিতাইগঞ্জে ছোট-বড় ৭২টি ময়দার মিল আছে। সারা দেশের ময়দার চাহিদার বড় অংশ মেটায় নিতাইগঞ্জ।

অন্য ভোগ্যপণের ব্যবসার বিষয়ে শেখ ওয়াজেদ আলী বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারি বাজার গড়ে উঠেছে। তাই দূরের জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা বর্তমানে নিতাইগঞ্জে আসেন না। তবে নারায়ণগঞ্জ ও আশপাশের কয়েকটি জেলার পাইকারেরা কমবেশি আসেন। তাঁদের জন্যই নিতাইগঞ্জ টিকে আছে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিতাইগঞ্জে ১০০-র বেশি চালের আড়ত, ৫০টির মতো গমের আড়ত, ডালের ১০০টি, লবণের ৫০টি, তেল-চিনির প্রায় ৪০০টি, ময়দা ৬৮টি, ভুসি মালের হাজারখানেক ছোট-বড় আড়ত আছে। ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের কারখানা আছে কয়েক শ। এখানকার আড়ত ও কারখানায় কাজ করেন প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক।

নিতাইগঞ্জে লবণ পরিশোধনের কারখানা ও গরিবে নেওয়াজ সল্ট নামে আড়ত আছে জামাল দেওয়ানের। ১৯৭৫ সাল থেকে তিনি এই পাইকারি বাজারে ব্যবসা করেন। নিজের কারখানায় পরিশোধিত লবণের ব্র্যান্ড-ফুলকপির পাশাপাশি এসিআই, মোল্লাসহ বিভিন্ন কোম্পানির লবণ পাইকারি বিক্রি করেন তিনি। খাওয়ার লবণ ছাড়া ডাইং কারখানা ও ট্যানারির জন্য লবণ বিক্রি হয় তাঁর আড়তে।

জামাল দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ক্রেতা অনেক কমে গেছে। তারপরও লবণের ব্যবসা খুব একটা খারাপ বলা যাবে না। দিনে গড়ে ৩০০ কার্টন লবণ বিক্রি হয়। প্রতি কার্টনে ২৫ কেজি লবণ থাকে। তিনি আরও বলেন, লবণ কিনতে নিতাইগঞ্জে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের ব্যবসায়ীরাই বেশি আসেন।

ডালের জন্য বেশ বিখ্যাত নিতাইগঞ্জ। আড়তের পাশাপাশি বেশ কিছু ডালের মিল আছে এখানে। ডালের আস্ত দানা নিয়ে এসে এসব মিলে ভাঙানো হয়। তবে সিটি, তীর, ফ্রেশের মতো বড় প্রতিষ্ঠান বাজারের বড় অংশ দখল করে নেওয়ায় নিতাইগঞ্জের ডালের মিলের অবস্থা খারাপ। অনেক মিল এখন বন্ধ।

জনতা এন্টারপ্রাইজের নিজের ডালের মিলের পাশাপাশি আড়তও আছে। তবে আড়তে তীর ব্র্যান্ডের ডালের বস্তাই বেশি দেখা গেল। আড়তের কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ পোদ্দার বলেন, ‘বড় কোম্পানির সঙ্গে আমরা দামে পারি না। তাই তাদের ডালই বিক্রি করি।’ বললেন, দিনে ৩০০ থেকে ৪০০ বস্তা ডাল বিক্রি করেন।

বছর পনেরো আগেও ভৈরব, ময়মনসিংহ, সিলেট, কুমিল্লার ব্যবসায়ীরা নিতাইগঞ্জ থেকে ভোগ্যপণ্য কিনে নিয়ে যেতেন। ভৈরবে আগে প্রতিদিন তিনটি কার্গোতে করে পণ্যসামগ্রী নিয়ে যেতেন ব্যবসায়ীরা। এ তথ্য দিয়ে চিনির পুরোনো পাইকারি ব্যবসায়ী আলী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শেখ হায়দার আলী বলেন, আগে সারা দিনই বিভিন্ন জেলার পাইকারদের ভিড়ে জমজমাট থাকত নিতাইগঞ্জ। এখন কেবল ময়দার ব্যবসা জমজমাট আছে। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ হাজার টন গম ও ময়দা বিক্রি হয় নিতাইগঞ্জে।

শেখ হায়দার আলী বলেন, গত বছরও আশপাশের জেলার ছোট ব্যবসায়ীরা ছোট ট্রাক নিয়ে পণ্য কিনতে আসতেন। বিভিন্ন পণ্য কিনে নিয়ে আবার দিনে দিনে চলে যেতেন। তবে দিনের বেলায় ট্রাক প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করায় তাঁরা আর আসছেন না। তা ছাড়া, অন্য বাজারের মতো এখানে ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি নেই। ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সে জন্য সিটি করপোরেশনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।