ঢাকা ০৪:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনা নিজেই গুলির নির্দেশ দেন, অনুসন্ধান বিবিসির

  • সবুজদেশ ডেস্ক:
  • Update Time : ১২:০২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
  • ২৮ বার পড়া হয়েছে।

 

গত বছর বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার একটি ফোনালাপের অডিও রেকর্ডিং যাচাই করে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসির অনুসন্ধানী শাখা ‘বিবিসি আই’ ও বিবিসি বাংলা এই অনুসন্ধান চালিয়েছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

‘বিবিসি আই’ যাচাইকৃত ওই অডিওতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের’ নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তারা (এসব বাহিনীর সদস্যরা) যেখানেই তাদের (আন্দোলনকারী) পাবেন, গুলি করবেন।’

একজন অজ্ঞাতনামা জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার এই কথোপকথনের অডিওটি চলতি বছরের মার্চ মাসে অনলাইনে ফাঁস হয়। এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জোরালো প্রমাণ, যা থেকে বোঝা যায় শেখ হাসিনাই সরাসরি সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।

অডিওটির বিষয়ে অবগত একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, গত বছরের ১৮ জুলাই যখন এই ফোনালাপটি হয়, তখন শেখ হাসিনা ঢাকার গণভবনে তার বাসভবনে ছিলেন। ওই সময় তুঙ্গে উঠে আন্দোলন। ওই ফোনালাপের পরের দিনগুলোতে ঢাকায় সেনাবাহিনী ব্যবহার করে এমন প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার শুরু হয় বলে পুলিশের নথি থেকে বিবিসি জানতে পেরেছে।

বিবিসির পরীক্ষা করা রেকর্ডিংটি বাংলাদেশ সরকারের টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) কর্তৃক রেকর্ড করা শেখ হাসিনার অসংখ্য ফোনালাপের মধ্যে একটি। তবে রেকর্ডিংটি কে ফাঁস করেছেন তা স্পষ্ট নয়।

ফাঁস হওয়া ১৮ জুলাইয়ের রেকর্ডিংটি বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছে। বিবিসি নিজেও স্বাধীনভাবে এটি যাচাই করেছে। তারা রেকর্ডিংটি অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান ‘ইয়ারশট’-এর কাছে পাঠায়। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, রেকর্ডিংটি সম্পাদনা বা বিকৃত করার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং এটি কৃত্রিমভাবে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাও অত্যন্ত কম।

ইয়ারশট আরও জানায়, রেকর্ডিংটিতে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি (ইএনএফ) শনাক্ত করা গেছে, যা প্রমাণ করে যে অডিওটি বিকৃত করা হয়নি।

তারা শেখ হাসিনার বক্তব্যে ছন্দ, স্বর এবং শ্বাসের শব্দ যাচাই করেছে এবং ধারাবাহিক নয়েজের স্তরও শনাক্ত করেছে। অডিওতে কৃত্রিম কোনো পরিবর্তন আনার প্রমাণও খুঁজে পায়নি।

সবুজদেশ/এসএএস

Tag :

শেখ হাসিনা নিজেই গুলির নির্দেশ দেন, অনুসন্ধান বিবিসির

Update Time : ১২:০২:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

 

গত বছর বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তার একটি ফোনালাপের অডিও রেকর্ডিং যাচাই করে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসির অনুসন্ধানী শাখা ‘বিবিসি আই’ ও বিবিসি বাংলা এই অনুসন্ধান চালিয়েছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

‘বিবিসি আই’ যাচাইকৃত ওই অডিওতে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের’ নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তারা (এসব বাহিনীর সদস্যরা) যেখানেই তাদের (আন্দোলনকারী) পাবেন, গুলি করবেন।’

একজন অজ্ঞাতনামা জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে শেখ হাসিনার এই কথোপকথনের অডিওটি চলতি বছরের মার্চ মাসে অনলাইনে ফাঁস হয়। এটিই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জোরালো প্রমাণ, যা থেকে বোঝা যায় শেখ হাসিনাই সরাসরি সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।

অডিওটির বিষয়ে অবগত একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, গত বছরের ১৮ জুলাই যখন এই ফোনালাপটি হয়, তখন শেখ হাসিনা ঢাকার গণভবনে তার বাসভবনে ছিলেন। ওই সময় তুঙ্গে উঠে আন্দোলন। ওই ফোনালাপের পরের দিনগুলোতে ঢাকায় সেনাবাহিনী ব্যবহার করে এমন প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার শুরু হয় বলে পুলিশের নথি থেকে বিবিসি জানতে পেরেছে।

বিবিসির পরীক্ষা করা রেকর্ডিংটি বাংলাদেশ সরকারের টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) কর্তৃক রেকর্ড করা শেখ হাসিনার অসংখ্য ফোনালাপের মধ্যে একটি। তবে রেকর্ডিংটি কে ফাঁস করেছেন তা স্পষ্ট নয়।

ফাঁস হওয়া ১৮ জুলাইয়ের রেকর্ডিংটি বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মিলিয়ে দেখেছে। বিবিসি নিজেও স্বাধীনভাবে এটি যাচাই করেছে। তারা রেকর্ডিংটি অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান ‘ইয়ারশট’-এর কাছে পাঠায়। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, রেকর্ডিংটি সম্পাদনা বা বিকৃত করার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং এটি কৃত্রিমভাবে তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাও অত্যন্ত কম।

ইয়ারশট আরও জানায়, রেকর্ডিংটিতে ইলেকট্রিক নেটওয়ার্ক ফ্রিকোয়েন্সি (ইএনএফ) শনাক্ত করা গেছে, যা প্রমাণ করে যে অডিওটি বিকৃত করা হয়নি।

তারা শেখ হাসিনার বক্তব্যে ছন্দ, স্বর এবং শ্বাসের শব্দ যাচাই করেছে এবং ধারাবাহিক নয়েজের স্তরও শনাক্ত করেছে। অডিওতে কৃত্রিম কোনো পরিবর্তন আনার প্রমাণও খুঁজে পায়নি।

সবুজদেশ/এসএএস