ঢাকা ০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাইফ আলি খানের ওপর হামলাকারী কে এই সাজ্জাদ?

সবুজদেশ ডেস্ক:

 

ভারতীয় অভিনেতা সাইফ আলি খানের ওপর হামলায় অভিযুক্ত ঝালকাঠির নলছিটির রাজাবাড়িয়া গ্রামের মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদ ওরফে শেহজাদ কি না, তা নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। হত্যাসহ একাধিক মামলা হওয়ার পর এই সাজ্জাদ বেশ কয়েক বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। তবে ভারতে এই হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর গণমাধ্যমে আসা ছবি দেখে নিখোঁজ সাজ্জাদকে শনাক্তের দাবি করেছে তার পরিবার।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, বাবার চাকরির সুবাদে পরিবারের সঙ্গে খুলনায় থাকতেন সাজ্জাদ। খুলনায় থাকাকালে তিনি মাদক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়। এতে বিরক্ত হয়ে তার পরিবার ঝালকাঠিতে গ্রামের বাড়ি চলে যায়। পরে পরিবারের সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ করেননি।

ঝালকাঠির সাজ্জাদের বাবা রুহুল আমিন ফকির বলেন, সে (সাজ্জাদ) ভারতে পালিয়ে গিয়ে হোটেলে চাকরি করে বলে শুনেছি। সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়ার পর ভিডিও দেখে তাকে চিনেছি। সে ভারতের কারাগারে আটক আছে। সে কবে, কীভাবে ভারতে গেছে, সেটা জানা নেই।

সাজ্জাদের ছোট ভাই সালমান ফকির জানান, সাজ্জাদ ২০১৭ সালে রফিকুল ইসলাম নামে এক মোটরসাইকেলচালক হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর গ্রেপ্তার এড়াতে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর তার সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ নেই।

মোল্লারহাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, ২০১৭ সালে নলছিটির মোল্লারহাট স্টিল ব্রিজের কাছে ভাড়ায় মোটরসাইকেলের চালক রফিকুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় রাজাবাড়িয়া গ্রামের মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদকে আসামি করা হয়। এ ঘটনার পর তিনি এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। এলাকায় থাকাকালে তিনি ছিনতাই, চুরি ও মারামারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ভারতে পুলিশ হেফাজতে থাকা শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদ ওরফে শেহজাদের পরিচয় প্রসঙ্গে মুম্বাইয়ের সিনিয়র পুলিশ সুপার দীক্ষিত গেদাম বলেন, শেহজাদই সাইফের হামলাকারী। ডাকাতির উদ্দেশ্যেই তিনি ওই হামলা করেছিলেন। তিনি একজন বাংলাদেশি নাগরিক। তার কাছে কোনো ভারতীয় কাগজপত্র নেই। তিনি নাম পরিবর্তন করে বিজয় দাস হয়ে চার মাস ধরে মুম্বাইয়ে বাস করছিলেন।

তবে শেহজাদের আইনজীবী সন্দ্বীপ ডি শেরখান ভিন্ন তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, শেহজাদ চার মাস নয়, দীর্ঘদিন ধরেই ভারতে বসবাস করছেন। ভারতে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্রই তার রয়েছে। তার পরিবারও ভারতে থাকে।

এসব কারণে ভারতে অভিনেতাকে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিই ঝালকাঠির সেই সাজ্জাদ কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নলছিটি থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, পুলিশের কাছে এখনো কোনো বার্তা আসেনি। তবে সাজ্জাদের বিরুদ্ধে নলছিটি থানায় এবং ঢাকায় হত্যা মামলা রয়েছে।

সবুজদেশ/এসইউ

About Author Information
আপডেট সময় : ১০:১৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫
২৩ Time View

সাইফ আলি খানের ওপর হামলাকারী কে এই সাজ্জাদ?

আপডেট সময় : ১০:১৪:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫

 

ভারতীয় অভিনেতা সাইফ আলি খানের ওপর হামলায় অভিযুক্ত ঝালকাঠির নলছিটির রাজাবাড়িয়া গ্রামের মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদ ওরফে শেহজাদ কি না, তা নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। হত্যাসহ একাধিক মামলা হওয়ার পর এই সাজ্জাদ বেশ কয়েক বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। তবে ভারতে এই হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর গণমাধ্যমে আসা ছবি দেখে নিখোঁজ সাজ্জাদকে শনাক্তের দাবি করেছে তার পরিবার।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্র জানায়, বাবার চাকরির সুবাদে পরিবারের সঙ্গে খুলনায় থাকতেন সাজ্জাদ। খুলনায় থাকাকালে তিনি মাদক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও হয়। এতে বিরক্ত হয়ে তার পরিবার ঝালকাঠিতে গ্রামের বাড়ি চলে যায়। পরে পরিবারের সঙ্গেও তিনি যোগাযোগ করেননি।

ঝালকাঠির সাজ্জাদের বাবা রুহুল আমিন ফকির বলেন, সে (সাজ্জাদ) ভারতে পালিয়ে গিয়ে হোটেলে চাকরি করে বলে শুনেছি। সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়ার পর ভিডিও দেখে তাকে চিনেছি। সে ভারতের কারাগারে আটক আছে। সে কবে, কীভাবে ভারতে গেছে, সেটা জানা নেই।

সাজ্জাদের ছোট ভাই সালমান ফকির জানান, সাজ্জাদ ২০১৭ সালে রফিকুল ইসলাম নামে এক মোটরসাইকেলচালক হত্যা মামলার আসামি হওয়ার পর গ্রেপ্তার এড়াতে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর তার সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ নেই।

মোল্লারহাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, ২০১৭ সালে নলছিটির মোল্লারহাট স্টিল ব্রিজের কাছে ভাড়ায় মোটরসাইকেলের চালক রফিকুল ইসলামকে হত্যার ঘটনায় রাজাবাড়িয়া গ্রামের মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদকে আসামি করা হয়। এ ঘটনার পর তিনি এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যান। এলাকায় থাকাকালে তিনি ছিনতাই, চুরি ও মারামারির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ভারতে পুলিশ হেফাজতে থাকা শরিফুল ইসলাম সাজ্জাদ ওরফে শেহজাদের পরিচয় প্রসঙ্গে মুম্বাইয়ের সিনিয়র পুলিশ সুপার দীক্ষিত গেদাম বলেন, শেহজাদই সাইফের হামলাকারী। ডাকাতির উদ্দেশ্যেই তিনি ওই হামলা করেছিলেন। তিনি একজন বাংলাদেশি নাগরিক। তার কাছে কোনো ভারতীয় কাগজপত্র নেই। তিনি নাম পরিবর্তন করে বিজয় দাস হয়ে চার মাস ধরে মুম্বাইয়ে বাস করছিলেন।

তবে শেহজাদের আইনজীবী সন্দ্বীপ ডি শেরখান ভিন্ন তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, শেহজাদ চার মাস নয়, দীর্ঘদিন ধরেই ভারতে বসবাস করছেন। ভারতে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্রই তার রয়েছে। তার পরিবারও ভারতে থাকে।

এসব কারণে ভারতে অভিনেতাকে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিই ঝালকাঠির সেই সাজ্জাদ কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

নলছিটি থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, পুলিশের কাছে এখনো কোনো বার্তা আসেনি। তবে সাজ্জাদের বিরুদ্ধে নলছিটি থানায় এবং ঢাকায় হত্যা মামলা রয়েছে।

সবুজদেশ/এসইউ