সাকিবের যে শর্তে বিসিবির না
বিসিবির সঙ্গে দরকষাকষি করেও সফল হতে পারেননি সাকিব আল হাসান। দেশে খেলার স্বাধীনতা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট উন্মুক্ত করে দেওয়া এবং দেশে ফেরা ও বিদেশে যাওয়ার নিশ্চয়তা চান তিনি। এই তিনটি বিষয়ে অনুমোদন পেতে সরকারকে রাজি করাতে বিসিবিকে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু বিসিবি কোনো সমাধান দিতে না পারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও ওয়ানডে সিরিজ খেলা হচ্ছে না বাঁহাতি অলরাউন্ডারের। তাঁকে ছাড়াই স্কোয়াড অনুমোদন করেছেন বিসিবি সভাপতি। এতে পরিষ্কার হয়ে গেছে সাকিবের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হওয়ায় সাকিবের দেশে ফেরা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনিও একটি হত্যা মামলার হুকুমের আসামি। শেয়ারবাজার কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে তাঁকে। বিদেশে টাকা পাচার রোধে সম্প্রতি সাকিব ও তাঁর স্ত্রী উন্মে আহমেদ শিশিরের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে বিদেশে থাকাকালে প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহ করতেও সমস্যা হচ্ছে বলে জানান সাকিব।
বিসিবির একজন কর্মকর্তা জানান, সভাপতিকে অনুরোধ করেছিলেন, অন্তত ব্যাংক লেনদেন স্বাভাবিক করার পাশাপাশি দেশে খেলার সুযোগ করে দিতে। কিন্তু বিষয়টি যে বিসিবির হাতে নেই এবং চাইলেও সমাধান করা সম্ভব নয় সাকিব তা বুঝতে পারছেন না। এ নিয়ে দেশের খ্যাতিমান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘সাকিবের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। ক্রিমিনাল মামলা হওয়ায় কিছু করার নেই। বিসিবি কেবল সরকারকে পারসু করতে পারে মামলার তদন্ত দ্রুত করে সম্পৃক্ততা থাকা না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করতে। সম্পৃক্ততা না থাকলে সমস্যা শেষ। একইভাবে ব্যাংক লেনদেন স্বাভাবিক করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুরোধ করতে পারে বিসিবি।’
এ ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আমরা চাইলেই অনেক কিছু করতে পারি না। সাকিব দেশে খেলতে পারে না, সে দলের সঙ্গে অনুশীলন করতে পারে না। এভাবে শুধু বিদেশে খেলা চালিয়ে যাওয়া কঠিন।’
যদিও বিসিবি সভাপতির বক্তব্য নিয়ে যে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারে। কারণ সাকিব তাঁর পুরো ক্যারিয়ারে বিদেশের লিগে খেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট চালিয়ে গেছেন। জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন খুব কম সময়ই। বর্তমানে আবুধাবি টি১০ লিগে খেলছেন তিনি। ফিটনেস বা ব্যাটিং প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো জায়গা নেই। আসল কারণ হলো বিসিবি সাকিবের শর্ত পূরণ করতে পারবে না। ফলে বর্তমান বাস্তবতায় আর জাতীয় দলে খেলা হবে না তাঁর। ভারতের বিপক্ষেই শেষ খেলা খেলে ফেলেছেন তিনি।
মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্তর পর তাওহিদ হৃদয়ও চোটে পড়েছেন। বগুড়াতে ফুটবল খেলতে গিয়ে কুঁচকিতে টান পড়েছে তাঁর। এমআরআই রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে নির্বাচক প্যানেল। শর্ত পূরণ না হওয়ায় সাকিবও জাতীয় দলে খেলবেন না। ফলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাদামাটা দল নিয়ে খেলতে হবে বাংলাদেশকে। খেলোয়াড় সংকটে সমস্যায় পড়েছেন নির্বাচকরা। টেস্ট ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়তে হচ্ছে ওয়ানডে দল।
জাকির হাসান, মাহিদুল ইসলাম অংকন, শাহাদাত হোসেন দিপু, মাহমুদুল হাসান জয় ও আফিফ হোসেনের থেকে চারজনকে ওয়ানডে দলে নেওয়া হতে পারে। এ অবস্থায় নির্বাচক প্যানেল থেকে শান্তকে ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজ খেলতে বলা হচ্ছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে কুঁচকিতে গ্রেড টু টিআর হওয়া শান্ত চোট পরিচর্যা করছেন। পুরোপুরি সুস্থ না হয়ে আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলতে গেলে নতুন করে চোটে পড়তে পারেন বলে শঙ্কা মেডিকেল বিভাগের।
সবুজদেশ/এসইউ