ঢাকা ০১:২৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাতক্ষীরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১

Reporter Name

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম ও সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে রুহুল কুদ্দুস গ্রুপের সমর্থক সরবত আলী মোল্যা নামের একজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন। ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে চেয়ারম্যানের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়ি। এ ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহত সরবত আলী মোল্যা (৫৫) গদাইপুর গ্রামের মৃত. সামছুর মোল্যার ছেলে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমের ভাই জুলি, বাচ্চু, বাচ্চুর জামাই সাদ্দাম ও বাচ্চুর ছেলে কাইয়ুম ও প্রতিবেশী মোহাম্মদ আলীসহ ৯ জন।

আহতরা হলেন, চেয়ারম্যান ডালিমের ভাই গদাইপুর গ্রামের আহসান হাবিব টগর, একই গ্রামের কাজল ফকির, জাকির মোল্যা, সেলিম সরদার অপর পক্ষে রব্বানী মোল্যা, সবুজ মোল্যা, লাদেন মোল্যা ও শৈবাল মন্ডলসহ উভয় পক্ষের ১০ জন। আহতরা ঢাকা মেডিকেল ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকালে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান ডালিমের ভাই টগর মাছ বিক্রয়ের জন্য গদাইপুর মৎস্য সেটে যান। এসময় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একাধিক মামলার আসামী গদাইপুর গ্রামের সবুজ মোল্যার নেতৃত্বে মোমিন, মফিজুল, আছাদুল, মজিদ মোল্যাসহ ৮/১০জন সংঘবদ্ধ হয়ে হাতুড়ি ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তাকে বাঁচাতে জাকির ও সেলিম এগিয়ে এলে তাদেরও পিটিয়ে জখম করে এবং টগরের কাছে মাছ বিক্রয়ের নগদ টাকা ও সেলিমের মোটর সাইকেল কেড়ে নেয়। আহতদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে টগরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়।

এদিকে, টগর গুরুতর আহত হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শতশত মানুষ একত্রিত হয়ে প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালায়। এতে সরবত ও রব্বানীসহ কমপক্ষে ৫জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সরবত মোল্যার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সেখান থেকে খুলনা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোররাতে তিনি মারা যান।

সরবতের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরলে তার পক্ষের লোকজন একত্রিত হয়ে চেয়ারম্যান ডালিমের বাড়িসহ আশেপাশের কয়েকটি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। চেয়ারম্যান ডালিমের স্ত্রী রেহেনা খাতুন জানান, তার বাড়ি ভাংচুরসহ নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও দলিলসহ সব সকল মালামাল লুটপাট করা হয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মূলত দফায় দফায় হামলার এ ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারা গেছেন। এ ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।

Tag :

About Author Information
Update Time : ১২:২৭:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ এপ্রিল ২০২০
২৪৭ Time View

সাতক্ষীরায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১

Update Time : ১২:২৭:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ এপ্রিল ২০২০

সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিম ও সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে রুহুল কুদ্দুস গ্রুপের সমর্থক সরবত আলী মোল্যা নামের একজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন। ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে চেয়ারম্যানের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়ি। এ ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহত সরবত আলী মোল্যা (৫৫) গদাইপুর গ্রামের মৃত. সামছুর মোল্যার ছেলে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ ডালিমের ভাই জুলি, বাচ্চু, বাচ্চুর জামাই সাদ্দাম ও বাচ্চুর ছেলে কাইয়ুম ও প্রতিবেশী মোহাম্মদ আলীসহ ৯ জন।

আহতরা হলেন, চেয়ারম্যান ডালিমের ভাই গদাইপুর গ্রামের আহসান হাবিব টগর, একই গ্রামের কাজল ফকির, জাকির মোল্যা, সেলিম সরদার অপর পক্ষে রব্বানী মোল্যা, সবুজ মোল্যা, লাদেন মোল্যা ও শৈবাল মন্ডলসহ উভয় পক্ষের ১০ জন। আহতরা ঢাকা মেডিকেল ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার সকালে খাজরা ইউপি চেয়ারম্যান ডালিমের ভাই টগর মাছ বিক্রয়ের জন্য গদাইপুর মৎস্য সেটে যান। এসময় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একাধিক মামলার আসামী গদাইপুর গ্রামের সবুজ মোল্যার নেতৃত্বে মোমিন, মফিজুল, আছাদুল, মজিদ মোল্যাসহ ৮/১০জন সংঘবদ্ধ হয়ে হাতুড়ি ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তাকে বাঁচাতে জাকির ও সেলিম এগিয়ে এলে তাদেরও পিটিয়ে জখম করে এবং টগরের কাছে মাছ বিক্রয়ের নগদ টাকা ও সেলিমের মোটর সাইকেল কেড়ে নেয়। আহতদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে টগরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়।

এদিকে, টগর গুরুতর আহত হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে শতশত মানুষ একত্রিত হয়ে প্রতিপক্ষের উপর হামলা চালায়। এতে সরবত ও রব্বানীসহ কমপক্ষে ৫জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সরবত মোল্যার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সেখান থেকে খুলনা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোররাতে তিনি মারা যান।

সরবতের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরলে তার পক্ষের লোকজন একত্রিত হয়ে চেয়ারম্যান ডালিমের বাড়িসহ আশেপাশের কয়েকটি বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। চেয়ারম্যান ডালিমের স্ত্রী রেহেনা খাতুন জানান, তার বাড়ি ভাংচুরসহ নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও দলিলসহ সব সকল মালামাল লুটপাট করা হয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মূলত দফায় দফায় হামলার এ ঘটনা ঘটেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারা গেছেন। এ ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।