সাতক্ষীরায় জোর পূর্বক প্রেসক্লাবে ঢোকার চেষ্টা ও অপর পক্ষ কর্তৃক প্রতিহত করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। সোমবার (৩০ জুন) বেলা ১২টার দিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের প্রধান ফটকের সামনে রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় সদর থানা পুলিশ দক্ষতার পরিচয় দিয়ে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
জানা যায়, বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে অধিকাংশ সময় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সাবেক এমপিসহ আওয়ামীগ নেতাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। সবশেষ ২০২০ সালে কমিটির মেয়াদ শেষ হলে প্রেসক্লাব নেতৃত্ব শুণ্য হয়ে পড়ে। সে সময় যে যার ইচ্ছামত প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বিভিন্নভাবে সুযোগ সুবিধা নিতে থাকে। একপর্যায় ২০২৪ সালের ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর সাংবাদিকরা প্রেসক্লাবের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু করেন। এরই ধারাবহিকতায় প্রেসক্লাবের গেষ্টরুমে বসে সাংবাদিক নেতা ও তাদের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে ২০২৪ সালের ২৪ আগষ্ট একটি সাধারণ সভার আহবান করা হয়। কিন্তু কোন কারণ ছাড়াই সাংবাদিকদের একটি অংশ ওই সভায় হাজির হয়নি।
তবে এক পক্ষের প্রতিনিধি ইনডিপেনডেন্ট টিভির আবুল কাশেম এর উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে ওই সভায় দৈনিক যুগের বার্তা পত্রিকার সম্পাদক আবু নাসের মোঃ আবু সাঈদকে সভাপতি ও দিনকালের প্রতিনিধি আব্দুল বারীকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এর পর থেকে অপর পক্ষরা বিভিন্নভাবে এই কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল। এরই একপর্যায় গত ২৫ মে সাংবাদিক আবুল কাশেম ও আসাদুজ্জামান আসাদকে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক করে প্রেসক্লাবের নামে একটি কমিটি ঘোষণা করেন তারা। পরে তারা ৪৫ জনকে সদস্য পদ দেওয়ার ঘোষণা দেয়। একইভাবে প্রেসক্লাবের কমিটিও ৩০/৩৫ জনকে সদস্য পদ প্রদান করে।
সম্প্রতি পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত নতুন সদস্যদের এক পরিচিতি সভায় কাশেম-আসাদ গ্রুপ ৩০ জুন প্রেসক্লাবে এসে সাধারণ সভা করার ঘোষণা দেয়। এতে করে সাংবাদিকদের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ি কাশেম-আসাদ গ্রুপ সোমাবার সকাল থেকে পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে জড়ো হতে শুরু করে। বিষয়টি জানতে পেরে যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশও তৎপর হয়ে উঠে। সকাল থেকে সদর থানা পুলিশের একটি দল প্রেসক্লাবে অবস্থান নেয়।
একপর্যায়ে বেলা ১২টার দিকে আবুল কাশেম ও আসাদুজ্জামান আসাদের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন এসে প্রেসক্লাবে ঢুকতে চাইলে সেখানে অবস্থানরত সাংবাদিকরা তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এসময় উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কির একপর্যায় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এত সাংবাদিক বেলাল হোসেন, কলেজ শিক্ষক আমিনুর রহমানসহ উভয় গ্রুপের কমপক্ষে ১০ জন কমবেশী আহত হয়।
এসময় সেখানে অবস্থানরত সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম ও পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সুশান্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকেন। তাদের দৃঢ হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসে। তা না হলে আরো বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারতো। একপর্যায় কাশেম-আসাদ গ্রুপ ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
সবুজদেশ/এসইউ