ঢাকা ০৫:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাদপন্থিদের মুখপাত্র মোয়াজ বিন নূর গ্রেফতার

সবুজদেশ ডেস্ক:

ছবি সংগৃহীত-

 

বিশ্ব ইজতেমার ৪২ দিন আগেই জোড় ইজতেমা নিয়ে বিরোধের জেরে তিনজন নিহতের ঘটনায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি রয়েছে শত শত। এর মধ্যে সাদপন্থিদের মুখপাত্র মামলার ৫ নম্বর আসামি মোয়াজ বিন নূরকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়েছে। 

মামলার বাদী শুরায়ে নেজামের (জুবায়রপন্থি) সাথী এস এম আলম হোসেন। তিনি কিশোরগঞ্জ সদর থানার গাইটাল গ্রামের এস এম মোক্তার হোসেনের ছেলে ও আলমি শুরার কিশোরগঞ্জ জেলার সাথী।

শুক্রবার ভোরে পুলিশ ঢাকার উত্তরা থেকে মোয়াজ বিন নূরকে গ্রেফতার করে। এর আগে বৃহস্পতিবার টঙ্গী পশ্চিম থানায় এই মামলা হয়।

গ্রেফতার নূর ঢাকা উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের নূর মোহাম্মদের ছেলে। তিনি সাদপন্থিদের মূখপাত্র হিসেবে পরিচিত ও জুবায়েরপন্থিদের দায়েরকৃত হত্যা মামলার ৫ নম্বর আসামি।

পুলিশ জানায়, টঙ্গী ইজতেমা মাঠে তিনজন নিহতের ঘটনায় গতকাল মামলা হয়। এই মামলার ৫ নম্বর আসামি মোয়াজ বিন নূরকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার উত্তরায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার এজাহারে সাদপন্থিদের শীর্ষ মুরুব্বি ওয়াসিফুল ইসলামসহ ২৯ জনকে আসামি করা হয়। অজ্ঞাত শতশত আসামি।

অন্য আসামিরা হলেন-আব্দুল্লাহ মনসুর, ওসামা ইসলাম, ড. কাজী এরতেজা হাসান, মোয়াজ বিন নুর, জিয়া বিন কাশেম, আজিমুদ্দিন, সৈয়দ আনোয়ার আব্দুল্লাহ, শফী উল্লাহ, আনাস, আব্দুল্লাহ শাকিল, রেজা আরিফ, আব্দুল হান্নান, রেজাউল করিম তরফতার, মুনির বিন ইউসুফ, সায়েম, হাজী বশির শিকদার, মনির হোসেন তুষার ওরফে হাজী মনির, ইঞ্জিনিয়ার মুহিবুল্লাহ, মো. আতাউর রহমান, তানভীর, বাবুল হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার আবুল বশর, ইঞ্জিনিয়ার রেজানুর রহমান, নাসির উদ্দিন সিকদার, ড. আব্দুস সালাম, ওয়াসি উদ্দিন, মিজান ও শাহাদাত।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে সাদপন্থি আসামিরা ২০ ডিসেম্বর জোড় ইজতেমা করার জন্য ১৮ ডিসেম্বর ভোরে জোর পূর্বক বিশ্ব ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করে হতাহতের ঘটনা ঘটায়। আাসামিরা আলমি শুরার সাথী কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের মৃত উসমান গনির ছেলে আমিনুল ইসলাম ওরফে বাচ্চু মিয়া (৭০), ফরিদপুর সদর থানার কমলা গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন (৬০) ও বগুড়া জেলার সদর থানার ধাওয়াপাড়া পূর্বপাড়া গ্রামের ওমর উদ্দিনের ছেলে তাজুল ইসলামকে (৭০) পিটিয়ে হত্যা করে। নিহতরা সকলেই আলমি শুরা বা শুরায়ে নেজামের (জুবায়েরপন্থি) সাথী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রসঙ্গত, আগামী বছর দুই ধাপে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় ধাপ ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ৩ ডিসেম্বর শুরায়ে নেজামের আয়োজনে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রস্তুতি হিসেবে ৫ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা শেষ হয়েছে। ২০ ডিসেম্বর সাদপন্থিরা জোড় ইজতেমা করবেন ও জুবায়েরপন্থিরা করতে দিবে না বলে বিরোধ চলছিল। বুধবার সাদপন্থিরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাতেই ঘটে যায় সংঘর্ষ। নিহত হন তিনজন আহত হয় শতাধিক। এই অবস্থায় সরকার দুই পক্ষের দখল থেকে ইজতেমা ময়দান নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ময়দান খালি করার জন্য করা হয় মাইকিং। ফলে রাত ৮ টা পর্যন্ত সাদপন্থিরা ময়দান ছেড়ে চলে যায়।

সবুজদেশ/এসইউ

About Author Information
আপডেট সময় : ১১:২২:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪
১১ Time View

সাদপন্থিদের মুখপাত্র মোয়াজ বিন নূর গ্রেফতার

আপডেট সময় : ১১:২২:৪৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

 

বিশ্ব ইজতেমার ৪২ দিন আগেই জোড় ইজতেমা নিয়ে বিরোধের জেরে তিনজন নিহতের ঘটনায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি রয়েছে শত শত। এর মধ্যে সাদপন্থিদের মুখপাত্র মামলার ৫ নম্বর আসামি মোয়াজ বিন নূরকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়েছে। 

মামলার বাদী শুরায়ে নেজামের (জুবায়রপন্থি) সাথী এস এম আলম হোসেন। তিনি কিশোরগঞ্জ সদর থানার গাইটাল গ্রামের এস এম মোক্তার হোসেনের ছেলে ও আলমি শুরার কিশোরগঞ্জ জেলার সাথী।

শুক্রবার ভোরে পুলিশ ঢাকার উত্তরা থেকে মোয়াজ বিন নূরকে গ্রেফতার করে। এর আগে বৃহস্পতিবার টঙ্গী পশ্চিম থানায় এই মামলা হয়।

গ্রেফতার নূর ঢাকা উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরের নূর মোহাম্মদের ছেলে। তিনি সাদপন্থিদের মূখপাত্র হিসেবে পরিচিত ও জুবায়েরপন্থিদের দায়েরকৃত হত্যা মামলার ৫ নম্বর আসামি।

পুলিশ জানায়, টঙ্গী ইজতেমা মাঠে তিনজন নিহতের ঘটনায় গতকাল মামলা হয়। এই মামলার ৫ নম্বর আসামি মোয়াজ বিন নূরকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার উত্তরায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার এজাহারে সাদপন্থিদের শীর্ষ মুরুব্বি ওয়াসিফুল ইসলামসহ ২৯ জনকে আসামি করা হয়। অজ্ঞাত শতশত আসামি।

অন্য আসামিরা হলেন-আব্দুল্লাহ মনসুর, ওসামা ইসলাম, ড. কাজী এরতেজা হাসান, মোয়াজ বিন নুর, জিয়া বিন কাশেম, আজিমুদ্দিন, সৈয়দ আনোয়ার আব্দুল্লাহ, শফী উল্লাহ, আনাস, আব্দুল্লাহ শাকিল, রেজা আরিফ, আব্দুল হান্নান, রেজাউল করিম তরফতার, মুনির বিন ইউসুফ, সায়েম, হাজী বশির শিকদার, মনির হোসেন তুষার ওরফে হাজী মনির, ইঞ্জিনিয়ার মুহিবুল্লাহ, মো. আতাউর রহমান, তানভীর, বাবুল হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার আবুল বশর, ইঞ্জিনিয়ার রেজানুর রহমান, নাসির উদ্দিন সিকদার, ড. আব্দুস সালাম, ওয়াসি উদ্দিন, মিজান ও শাহাদাত।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সরকারি নির্দেশ অমান্য করে সাদপন্থি আসামিরা ২০ ডিসেম্বর জোড় ইজতেমা করার জন্য ১৮ ডিসেম্বর ভোরে জোর পূর্বক বিশ্ব ইজতেমা মাঠে প্রবেশ করে হতাহতের ঘটনা ঘটায়। আাসামিরা আলমি শুরার সাথী কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া থানার এগারসিন্দু গ্রামের মৃত উসমান গনির ছেলে আমিনুল ইসলাম ওরফে বাচ্চু মিয়া (৭০), ফরিদপুর সদর থানার কমলা গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন (৬০) ও বগুড়া জেলার সদর থানার ধাওয়াপাড়া পূর্বপাড়া গ্রামের ওমর উদ্দিনের ছেলে তাজুল ইসলামকে (৭০) পিটিয়ে হত্যা করে। নিহতরা সকলেই আলমি শুরা বা শুরায়ে নেজামের (জুবায়েরপন্থি) সাথী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রসঙ্গত, আগামী বছর দুই ধাপে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় ধাপ ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ৩ ডিসেম্বর শুরায়ে নেজামের আয়োজনে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রস্তুতি হিসেবে ৫ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা শেষ হয়েছে। ২০ ডিসেম্বর সাদপন্থিরা জোড় ইজতেমা করবেন ও জুবায়েরপন্থিরা করতে দিবে না বলে বিরোধ চলছিল। বুধবার সাদপন্থিরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট পালনের ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাতেই ঘটে যায় সংঘর্ষ। নিহত হন তিনজন আহত হয় শতাধিক। এই অবস্থায় সরকার দুই পক্ষের দখল থেকে ইজতেমা ময়দান নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ময়দান খালি করার জন্য করা হয় মাইকিং। ফলে রাত ৮ টা পর্যন্ত সাদপন্থিরা ময়দান ছেড়ে চলে যায়।

সবুজদেশ/এসইউ