সাবেক ছাত্রদল নেতাদের দিয়ে যুব ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি শিগগিরই
ঢাকাঃ
জাতীয়তাবাদী যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আংশিক কমিটি ঘোষণার তিন বছর পর আলোর মুখ দেখতে চাচ্ছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি। বিএনপির এই দুই অঙ্গ সংগঠনের পূর্ণাঙ্গ পরিসর যেকোনো সময় ঘোষণা করা হবে। এরইমধ্যে কমিটির খসড়া তালিকা দলের হাইকমান্ডের হাতে পৌছে গেছে। তিনি অনুমোদন দিলেই ২৭১ সদস্যের যুবদল ও ৩০১ সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি ঘোষণা করা হবে। খসড়ায় সাবেক ছাত্রদল নেতাদের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। বিএনপি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কমিটি ঘোষণা করার পর থেকে তিন বছর ধরে ১২ জন নেতা দিয়ে চলছে বিএনপির অন্যতম এই দুটি অঙ্গ সংগঠন।
২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি সাইফুল আলম নীরবকে সভাপতি ও সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে সাধারণ সম্পাদক করে যুবদলের সুপারফাইভ কমিটি ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবদলের জন্য আংশিক নাম ঘোষণা করা হয়। এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ করার নির্দেশনা দেয়া হয়। সেই কমিটি আর ১৫ দিন পেরোলো মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।
আর ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিউল বারী বাবুকে সভাপতি ও আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৭ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক করা হয় সাইফুল ইসলাম ফিরোজকে। আর সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয় ইয়াসিন আলীকে। এই কমিটি এই কমিটির মেয়াদ এরইমধ্যে পেরিয়ে গেছে।
বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ এ দুই সংগঠনে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের মধ্যে ত্যাগী ও যোগ্যদের পদ দেয়ার নির্দেশনা ছিল হাইকমান্ডের। খসড়ায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিনা এখন তা যাচাই করা হচ্ছে। এছাড়া সম্প্রতি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় (আংশিক) কমিটিতে বিবাহিত নেতাদের পদ দেয়া হয়নি। তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী এ দুই সংগঠনে পদ দেয়া হবে। খসড়া সংযোজন-বিয়োজন করে যে কোনো সময় কমিটি ঘোষণা করা হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখারও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হতে পারে।
সূত্র জানায়, ছাত্রদলের মত সরাসরি ভোটে যুব ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি করার পরিকল্পনা ছিল বিএনপি হাইকমান্ডের। তা বাস্তবায়নে এ দুই সংগঠনের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ৯ অক্টোবর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুবদলের নেতাদের সঙ্গে স্কাইপেতে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
কিন্তু এ সময় যুবদল নেতারা আরেকটু সুযোগ দেয়ার অনুরোধ জানিয়ে হাইকমান্ডকে জানান, আংশিক কমিটি রেখে নতুন কাউন্সিল হলে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মী বাদ পড়বেন, যারা কোনো সাংগঠনিক পরিচয় দিতে পারবেন না। পূর্ণাঙ্গ হলে নতুন কাউন্সিলের আগেই অনেক নেতার রাজনৈতিক পরিচয় নিশ্চিত করা যাবে।
এ সময় তারেক রহমান যুবদল নেতাদের বক্তব্যে আশ্বস্ত হয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে এক মাসের সময় বেঁধে দেন। এরপর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাদের সঙ্গে স্কাইপেতে বৈঠক করেন তিনি। তারাও হাইকমান্ডকে আরেকটু সুযোগ দেয়ার অনুরোধ জানান। এ সময় তাদেরও সময় বেঁধে দেন। এরপর অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে দুই সংগঠনের নেতারা নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে পারেননি। পরে তারা তিন দফা সময় বাড়িয়ে নেন।
ডিসেম্বর মাসের শুরুতে যুবদল ও মাঝামাঝিতে স্বেচ্ছাসেবক দল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেন। একইসঙ্গে সংগঠন দুটির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণেরও পূর্ণাঙ্গ কমিটি জমা দেন নেতারা।
সূত্র আরও জানায়, সম্প্রতি ছাত্রদলের ৬০ সদস্যের কেন্দ্রীয় (আংশিক) কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেখানে বিবাহিত হওয়ার কারণে অন্তত ৪০ জন নেতা বাদ পড়েন। যারা বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলাও রয়েছে। এজন্য যুব ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের পদ দেয়া হবে। ইতিমধ্যে ওই সব নেতাদের বিষয়ে খোঁজও নিয়েছে বিএনপি হাইকমান্ড।