যশোরঃ

যশোরে একটি স্কুলে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে চাকরির প্রলোভনে সাড়ে আট লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকরে বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত সদর উপজেলার রুপদিয়া ওয়েলফেয়ার একাডেমির সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন ও প্রধান শিক্ষক বিএম জহিরুল পারভেজ ওই পদে অন্যকে নিয়োগ দিলেও টাকা ফেরত দেননি।

দীর্ঘদিন ঘুরেও টাকা ফেরত না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ভুক্তভোগী চাকরি প্রার্থী নূর ইসলাম। টাকার অভাবে প্রতিবন্ধী সন্তান ও অসুস্থ বাবার চিকিৎসা করাতে পারছেন না। গতকাল মঙ্গলবার প্রেসক্লাব যশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে স্কুলের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বলেন, চাকরির নামে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ বানোয়াট। প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সদর উপজেলার বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দা নূর ইসলাম বলেন, ২০১৫ সালের ৬ মার্চ সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে প্রথম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর চাকরি দেয়ার কথা বলে বিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন ও প্রধান শিক্ষক বিএম জহিরুল পারভেজ আমার কাছ থেকে সাত লাখ টাকা নেন। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবেই তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিয়োগ বোর্ড গঠন করেননি। পরবর্তীতে একই বছরের ১০ অক্টোবর দ্বিতীয়বারের মতো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। সেইবারও নিয়োগ বোর্ড গঠন করেননি।

তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২০ জুন তৃতীয়বারের মতো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। নিয়োগ বোর্ড গঠন করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেয়া হয়েছিল। পরীক্ষায় আমি প্রথম হয়েছিলাম। কিন্তু সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফল প্রকাশ করতে গড়িমসি করেছিলেন। তারা আমাকে বলেছিলেন, আপনার চাকরি হবে। তবে রেজ্যুলেশন করতে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা লাগবে। শিক্ষা অফিসার ও নিয়োগ বোর্ডের কর্মকর্তারা টাকা ছাড়া রেজ্যুলেশনে স্বাক্ষর করবেন না। টাকা দেয়ার কিছুদিন পর জানতে পেরেছিলাম ওই পদে চিন্তা সেন নাম একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

নূর ইসলাম বলেন, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক দুই দফায় আমার কাছ থেকে সাড়ে আট লাখ টাকা নিলেও চাকরি দেননি। তাদের কাছে টাকা ফেরত চাইলে তালবাহানা করতে থাকেন। সর্বশেষ তারা টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করছেন। কিন্তু চাকরির জন্য টাকা দেয়ার সময় স্বাক্ষী ছিলেন সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেনের ছোট ভাই ফেরদৌস, নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর মোমিন উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, এলাকার আনোয়ার হোসেন ও মিজানুর রহমান।

তিনি বলেন, জমিজমা বিক্রি করে চাকরির আশায় সাড়ে আট লাখ টাকা দিয়ে এখন অসহায় জীবন-যাপন করছি। বর্তমানে আমার বাবা ও ছেলে প্রচণ্ড অসুস্থ। তাদের চিকিৎসা করাতে পারছি না। টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এসএম আকরাম হোসেন, সদর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক অশোক কুমার বোস, যুগ্ম আহ্বাায়ক মাযহারুল ইসলাম, সদস্য ফারুক হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here