সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টা
কুষ্টিয়াঃ
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বহলবাড়িয়া ইউনিয়নের নওদা বহলবাড়ীয়া গ্রামের মৃত.ইসরাইল হোসেনের ছেলে মেহেদী হাসান সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তাকে প্রাণনাশের হুমকি ও আটকে রেখে জোরপূর্বক জমি রেজিস্ট্রি করে সেই জমি দখলের চেষ্টা করছে বহলবাড়িয়া এলাকার প্রভাবশালী সুদখোর মহাজন রাসেল গাইন।
সুদখোর রাসেল গাইন বহলবাড়িয়া ইউনিয়নের নওদা খাদিমপুর গ্রামের মৃত লিয়াকতের ছেলে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বহলবাড়িয়া ইউনিয়নের কয়েকজন (ইউপি) সদস্যদের সাথে নিয়ে ও তাদের উপস্থিতে প্রভাব বিস্তার করে জমি দখলের চেষ্টা বাস্তবায়নের জন্য জমি মাপার আমিনকে দিয়ে ৩বিঘা জমির মালিক মেহেদী হাসানের অনুপস্থিতিতে জোরপূর্বক অবৈধ পন্থায় সীমানা নির্ধারণের কাজ করে তারা।
স্থানীয়রা জানান, কয়েকজন (ইউপি) সদস্যদের সাথে নিয়ে ও তাদের উপস্থিতে প্রভাব বিস্তার করে মেহেদী হাসানের জমি দখলের চেষ্টা করছে প্রভাবশালী সুদখোর রাসেল গাইন। রাসেলের নেই কোনো চাকরি। করেন না কোনো ব্যবসাও। কিন্তু এলাকায় সুদের টাকা খাটিয়ে রাসেল গাইন এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। হয়েছেন কোটি টাকার মালিক। এলাকায় চড়া হারে রমরমা সুদের ব্যবসা করে নয় মাইল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গড়ে তুলেছেন প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি আলিশান বাড়ী। রাসেলের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে মেহেদী হাসান আজ অর্থ সম্পদ হারিয়ে সর্বশান্ত হয়ে পথে বসেছেন। প্রভাবশালী রাসেল গাইনের ভয়ে বাড়ি ছাড়তে বাঁধ্য হয়েছে। অসহায়ের মত দিন কাটছে মেহেদীর পরিবারের।
সুদের মহাজন রাসেল গাইনের খপ্পরে পড়ে এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার এখন গ্রাম ছাড়া। অনেকেই ঘরবাড়ি বিক্রয় করে সুদের টাকা মিটিয়ে এখন হয়েছে নিঃস্ব। প্রশাসন থেকে এ ব্যাপারে তদন্ত করলেই সঠিক ঘটনা জেলাবাসী জানতে পারবে। তাই রাসেলের সুদের টাকা বিষয়ে তদন্তর দাবি এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে রাসেল গাইন বলেন,মেহেদীর চাচা ভাইয়েরা আমার টাকা ফেরত দিবে বলে সময় নিয়েছিল। কিন্তু কেউ টাকা ফেরত দেইনি। ইউনিয়ন পরিষদে জানিয়ে তাই আজ জমি দখলে এসেছি। গ্রামের লোকজন আমার বিষয় জানে। আমার বড়ভাইয়ের কাঠের ব্যবসা ও আমার বালুর ব্যবসাসহ এলাকায় বিভিন্ন ব্যবসা করি। মূলত কি ব্যবসা করেন আপনি? এমন প্রশ্ন করলে বিভিন্ন কথা বলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।
রাসেলের গাইনের চাচা ও বহলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বর আব্দুর রশিদ বিশ্বাস বলেন,কয়েকজন মেম্বরকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এই জমি মাপতে এসেছি। তাই জমি মাপার কাজ চলছে।
বহলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সানোয়ার বলেন, আমার বাড়িতে বসেও রাসেল ও মেহেদীর বিষয়টি সমাধাণে আমি নিজেও চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সম্ভব হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদে রাসেল অভিযোগ করলে মেহেদীকে বার বার ডাকা হয়। মেহেদী নিজে উপস্থিত না হয়ে তার প্রতিনিধি পাঠিয়ে সময় নিয়ে আসছিল। তাই গতকাল ওই জমি দখলের জন্য নয়, জমিটি মাপার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমরা গিয়েছিলাম। রাসেলের বাবা বেঁচে থাকতে এমন কিছু ব্যবসা করতো সে। এখন বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা করে।
বহলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা বলেন, ওই খানে আমি ছিলাম না। প্যানেল চেয়ারম্যান ও (ইউপি) সদস্যরা সেখানে ছিলেন। বিষয়টি তারা ভালো বলতে পারবেন। এটা (ইউপি) সদস্যদের সিদ্ধান্ত হতে পারে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ওই জমি মাপার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।