’সুপারম্যান’ মাশরাফি !
সবুজদেশ ডেক্সঃ এই শোয়েব মালিক দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছেন আফগানিস্তান, এমনকি ভারতের বিপক্ষেও। আজ বাংলাদেশকেও চোখ রাঙাতে শুরু করলেন পাকিস্তানের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। মালিক যদি লড়াকু হন, মাশরাফি বিন মুর্তজা আরও বড় লড়াকু! মাথায় যখন শুধুই জয়ের চিন্তা, মালিক চীনের প্রাচীর হলেও সেটি ভাঙতে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ। আর সেটি ভাঙল মাশরাফির হাত ধরেই। এটির জন্য সেকেন্ডের ভগ্নাংশে বাংলাদেশ অধিনায়ক হয়ে গেলেন ‘সুপারম্যান’!
আবেগে ভেসে মাশরাফিকে সুপারম্যান বলা হচ্ছে, তা নয়। কল্পচোখেই একবার দেখুন, আকাশচুম্বী কোনো ভবন থেকে মাটিতে পড়ে যাচ্ছেন বিপদগ্রস্ত কেউ। তখনই সুপারম্যান কোত্থেকে উড়ে এসে এক হাতে ছোঁ মেরে উদ্ধার করেন বিপদগ্রস্ত মানুষটাকে। ঠিক সেভাবেই আজ বাংলাদেশকে বাঁচালেন মাশরাফি। রুবেল হোসেনের করা ২১তম ওভারের প্রথম বলে মালিক মিড উইকেটের ওপর দিয়ে তুলে মারতে চেয়েছিলেন। সেকেন্ডের ভগ্নাংশ—না, সময়টাও বলে দেওয়া যায়, ০০.৮৪ সেকেন্ডে এক হাতে বলটা ছোঁ মেরে ক্যাচটা নিলেন। বলটা তালুবন্দী করতে ডাইভ দিয়েছেন ২.৩৫ মিটার বা প্রায় ৮ ফুট! ডাইভ দিতে গিয়ে আঙুলে ব্যথা পেয়েছেন। ব্যথা পেয়ে মাঠের বাইরেও থাকতে হয়েছে মিনিট ১৫। আহা, কী ক্যাচ ধরেছেন মাশরাফি—অবাক চোখে তাকিয়ে মালিক। এশিয়া কাপে পাকিস্তানের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান, অভিজ্ঞতায়ও সবচেয়ে বড় ভরসার নাম। হতভম্ব পুরো পাকিস্তান। তাতে কী আসে–যায় বাংলাদেশের, লাল–সবুজ ততক্ষণে যে নেচে উঠেছে আনন্দের ঢেউয়ে।
১৮ রানে ৩ উইকেট হারানো পাকিস্তানকে পথ দেখাচ্ছিল মালিক-ইমাম উল হকের চতুর্থ উইকেট জুটি (৬৭)। ৩০ রানে থিতু হয়ে যাওয়া মালিক বার্তা দিচ্ছিলেন ম্যাচটা নিজেদের করে নেওয়ার। কিন্তু সেই স্বপ্ন তাঁর পূরণ হয়নি। পূরণ হতে দেননি মাশরাফি। শুধু এ ক্যাচটাই নয়, অধিনায়ক আজ নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনে থেকেই। পরে আকাশে উঠে যাওয়া হাসান আলীর ক্যাচটিও লুফে নিয়েছেন পরম নির্ভরতায়। অষ্টম উইকেট পর্যন্ত অস্বস্তি তো ছিলই। সেটা দূর করেছেন মাশরাফিই।
টানা খেলার ধকল, তীব্র গরম—ঘেমে জবজব শরীর। মাশরাফি তবুও দলকে কাঁধে নিয়ে এগিয়ে চলেন। মাশরাফি জানেন, তিনি থামলে দল পা হড়কাবে। মাশরাফিকে তাই সুপারম্যান হতে হয়, ছোঁ মেরে শূন্যে ক্যাচ লুফে নিতে হয়, আঙুলে ব্যান্ডেজ পেঁচিয়ে আবারও মাঠে নামতে হয়!