সবুজদেশ ডেক্সঃ নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় পুলিশের এক নারী সদস্যের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে উপজেলার চরজব্বর থানার একটি কক্ষ থেকে পুলিশ ওই মরদেহ উদ্ধার করে।

মারা যাওয়া ওই পুলিশ সদস্যের নাম শিপ্রা রানী দাস (২২)। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ফুলতলি গ্রামে। শিপ্রার পরিবার বলছে, স্বামীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না।

চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহেদ উদ্দিনের ভাষ্য, বেলা দুইটার দিকে তিনি খবর পান ওই কনস্টেবল নিজ কক্ষের দরজা খুলছেন না। পরে তিনিসহ অন্য কর্মকর্তারা গিয়ে অনেকক্ষণ ধাক্কাধাক্কি করার একপর্যায়ে ভেতরে দরজার হুক খুললে কক্ষের ফ্যানের সঙ্গে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়।

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি শাহেদ উদ্দিন জানান, একই কক্ষে পাঁচজন নারী পুলিশ সদস্য থাকতেন। এর মধ্যে একজন ছুটিতে আছেন। বাকি চারজনের তিনজন দুপুরে ডিউটিতে গেলেও শিপ্রা পেটব্যথার কথা বলে যাননি। ওসির ধারণা, অন্যরা ডিউটিতে যাওয়ার সুযোগে শিপ্রা আত্মহত্যা করেছেন।

ওসি শাহেদ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, শিপ্রার স্বামী রাজীব দেও পুলিশে চাকরি করেন। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রামে কর্মরত। প্রায় পাঁচ মাস আগে শিপ্রা চরজব্বর থানায় যোগ দেন।

শিপ্রা রানীর মা স্বর্ণা রানী দাস মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি কুমিল্লা থেকে বাসযোগে নোয়াখালীর সুবর্ণচর আসছেন। চরজব্বর থানার ওসি তাঁকে ফোন করে জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে অসুস্থ। তবে তাঁর কী হয়েছে তা তিনি জানেন না।

এক প্রশ্নের জবাবে স্বর্ণা রানী বলেন, ২০১৪ সালে পুলিশে কনস্টেবল পদে তাঁর মেয়ের চাকরি হয়। তাঁর বাবা মারা যাওয়ার সময় রেখে যাওয়া টাকা এবং আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তায় চাকরি হয়। ২০১৭ সালের ১০ জুলাই একই উপজেলার বাসিন্দা রাজীব দের সঙ্গে তাঁর মেয়ের বিয়ে দেন। বিয়ের সময় রাজীবকে এক লাখ টাকা নগদ এবং মেয়েকে চার ভরি স্বর্ণের গয়না দেন।

স্বর্ণা রানী অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে রাজীব শিপ্রার ওপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতে থাকেন। তাঁকে প্রায়ই মারধর করা হতো। পাশাপাশি মাস শেষে শিপ্রার বেতনের সব টাকা রাজীব নিয়ে নিতেন। একপর্যায়ে রাজীব শিপ্রাকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে চাপ দেন। এর মধ্যে গত চার মাস শিপ্রার সঙ্গে রাজীবের কোনো যোগাযোগ ছিল না।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here