সবুজদেশ ডেস্কঃ
করোনার কারণে প্রায় দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। কিন্তু দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে নোংরা, অপরিষ্কার ও গরু ছাগলের গো-শালা তৈরি হয়ে গেছে। যদিও সরকারি স্কুল খোলার আগে স্লিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে প্রতি স্কুলের জন্য ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ রেখেছে। তারপরও কোনো কোনো স্কুল প্রস্তুতি নিচ্ছে না।
বরিশাল জেলা শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণে গত বছর ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় সারা দেশের স্কুল, কলেজসহ সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রায় দেড় বছর পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
কিন্তু বরিশাল জেলার মাধ্যমিক স্কুল ও প্রাথমিক স্কুল প্রস্তুত নয়। কোনো কোনো স্কুলে গরুর খামার হয়ে গেছে। স্কুলের ক্লাস রুমেই বেঁধে লালন পালন করা হচ্ছে। কোনো কোনো স্কুলের মাঠ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কোথাও মেঝেতে শ্যাওলা জমে গেছে। এ বিষয়ে যেন কোনো মাথা ব্যথা নেই।
মাধ্যমিক স্কুলের তুলনায় জেলার ১ হাজার ৫৯৪ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা বেশি বেহাল। যদিও এসব স্কুল খোলার জন্য প্রস্তুতিস্বরূপ স্লিপের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে।
জেলার বাকেরগঞ্জ দক্ষিণ হেলিপোর্ট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস রুমে গত শনিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একটি গরু বাঁধা রয়েছে। স্কুল মাঠ ব্যবহার অনুপযোগী।
তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ঝর্ণা রানী বিশ্বাস বলেন, তারা স্কুল খোলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অন্তর্বর্তী পাঠ পরিকল্পনা করছেন। পাশাপাশি স্কুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে।
গরু বাঁধার বিষয়ে তিনি বলেন, স্কুল বন্ধ থাকলে কেউ বাঁধতে পারে। অথবা বর্ষা হলে এটা হতে পারে। কিন্তু স্কুল খোলার দিনে এমনটা হতে পারে না। একই অবস্থা উপজেলার কলসকাঠি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্কুলে। আর শুধু বাকেরগঞ্জেই নয় এ অবস্থা বিরাজ করছে জেলার ১০ উপজেলার সব স্কুলেই।
বাকেরগঞ্জ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান ডাকুয়া বলেন, করোনাকালীন দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় উপজেলার ২৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বেশিরভাগই এরকম অবস্থায় রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপজেলা এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ারের খামখেয়ালিপনায় স্কুলের ক্ষুদ্র মেরামতের টাকা না পাওয়ায় স্কুল খোলার আগেই সংস্কার করা সম্ভব হচ্ছে না।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান শাহীন বলেন, স্কুল খোলার জন্য প্রতি স্কুলের জন্য সরকার বরাদ্দ রেখেছে। সরকারের পক্ষ থেকে দুইবার চিঠি প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি স্কুলে স্যানিটাইজার, সাবান ক্রয় করতে বলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের হাত ধোয়ার জন্য স্থান নির্ধারণ ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রাখার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি স্কুল কম্পাউন্ড পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে বলা হয়েছে। প্রতি শিক্ষার্থীর মাস্ক নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে। তারপরও কোনো স্কুল এ নির্দেশ অমান্য করলে সেটার দায় ওই স্কুল কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।
সবুজদেশ/এসএএস