ঢাকাঃ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে অনিক সরকার। এই অনিক সরকার আবরারকে সবচেয়ে পিটিয়েছিল বলে ইফতি মোশাররফ ওরফে সকাল গত বৃহস্পতিবার স্বীকারোক্তি দিয়েছিল।

অনিক সরকার বুয়েট ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। আজ শনিবার (১২ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এ নিয়ে আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার তিন আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলো।

গত বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকালে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ ওরফে সকাল ও শুক্রবার (১১অক্টোবর) ছাত্রলীগের উপ-ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিওন হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার বিষয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন।

ইফতি মোশাররফ সকালের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায় অনিক সরকার দুই দফায় আবরারকে পিটায়। ইফতির বর্ণনা অনুসারে প্রথম দফায় আবরারের হাঁটু, পা, পায়ের তালু ও বাহুতে আঘাত করছিলো অনিক সরকার। পায়ের তালুতে আঘাত করলে ‘বাঁচাও বাঁচাও’বলে চিৎকার করেছিল আবরার।

দ্বিতীয় দফায় পিটাতে রাত ১১টার দিকে আবার ওই কক্ষে যায় অনিক। এসময় অনিক স্টাম্প দিয়ে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে এলোপাতাড়ি শতাধিক আঘাত করে আবরারকে। আবরার তখন পা ধরেছিলো বারবার। মারবেন না, মারবেন না বলে অনুনয় করেছিলো। অনিক খুবই অনিয়ন্ত্রিতভাবে আবরারকে মারতে থাকে। রাত ১২টা পর্যন্ত আবরারকে মেরেছিল সে। মারতে মারতে এক পর্যায়ে ঘেমে গিয়েছিল এই অনিক সরকার। যখন আবরারের কথা বলার শক্তি ছিল না অনিক সরকার তখন বের হয়ে যায়।

শনিবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দার (ডিবি) পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান অনিক সরকারের জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন জানান। আবেদনে বলা হয়, ঘটনায় সম্পৃক্ততার বিষয়ে অনিক স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন।

আদালত খাস কামড়ায় জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তবে জবানবন্দিতে অনিক কী বলেছেন, সে বিষয়ে আদালত ও তদন্ত সংশ্লিষ্ট কেউ কিছু বলতে রাজি হননি।

উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয় আবরার ফাহাদকে। এ ঘটনার পরদিন ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে রাজধানীর চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here