স্ত্রীর নামে অর্থ আত্মসাৎ: ইউপি সচিব দুপুরে আটক রাতে মুক্তি
নড়াইলঃ
সামাজিক নিরাপত্তা সহায়তার টাকা স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের নামে আত্মসাতসহ ইউপি সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে নড়াইলে এক ইউনিয়ন পরিষদের সচিবকে আটক করলেও পরে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
কালিয়া উপজেলার জয়নগর ইউপির ওই সচিব মো. মহিদুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আটক করা হয়। পরে কালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল হুদা ওইদিন রাতেই তাকে ছেড়ে দেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে জয়নগর ইউপির সদস্য মো. কামরুল ইসলামের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তে প্রাথমিকভাবে ইউপি সচিব মহিদুলের নাম উঠে আসায় তাকে আটক করেন ইউএনও মো. নাজমুল হুদা।
অভিযোগের বিবরণ থেকে জানা যায়, জয়নগর ইউপির সদস্য মো. কামরুল ইসলাম স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ দেন।
ইউপি সদস্যদের না জানিয়ে এককভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ভূমি হস্তান্তর ফি’র টাকা, সরকারের নির্ধারিত উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের টিআর, কাবিখা, কাবিটা, কর্মসৃজন প্রকল্প ও এডিপির বরাদ্দকৃত অর্থ, বিভিন্ন প্রকল্পের নামে বরাদ্দকৃত অর্থ, নিয়মবহির্ভূতভাবে ইউনিয়নের গ্রামগুলোতে ৬ হাজার পরিবারের কাছে বাড়ির হোল্ডিং নম্বর প্লেট বিক্রির ৬ লাখ টাকা, সরকারি করের টাকা, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ভিজিডির সুবিধা ভোগীদের জমাকৃত টাকাসহ সামাজিক নিরাপত্তা সহায়তার টাকা এবং এলজিএসপির বরাদ্দকৃত ৮ লাখ ৬৮ হাজার ৭৭৭ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনেন ওই ইউপি সদস্য।
পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় অভিযোগটির তদন্তভার কালিয়ার ইউএনওর ওপর ন্যস্ত করে। বৃহস্পতিবার ওই অভিযোগের তদন্তকালে জয়নগর ইউপি সচিব মো. মহিদুলের বিরুদ্ধে সামাজিক নিরাপত্তা সহায়তা, ভিজিডি, বিধবা ভাতা, বয়স্কভাতা ও মাতৃত্বকালীন ভাতার টাকা পরিবারের সদস্যসহ স্বজনদের নামে আত্মসাৎ এবং সরকারি অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ায় তদন্তকারী কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে সচিবকে আটক করে নড়াগাতি থানা পুলিশে সোপর্দ করেন।
সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা সহায়তার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে আটক করা হয়েছে বলে ইউএনও মো. নাজমুল হুদা সাংবাদিকদের জানালেও রহস্যজনক কারণে ওইদিন রাত ৮টার দিকে নড়াগাতি থানা থেকে সচিবকে ছেড়ে দেয়া হয়।
নড়াগাতি থানার ওসি মো. আলমগীর কবির আটককৃত ইউপি সচিব মো. মহিদুল ইসলামকে রাতে মুক্তি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এ প্রসঙ্গে কালিয়ার ইউএনও মো. নাজমুল হুদা বলেন, ‘ওইসব দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ইউপি সচিব মহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। বিভাগীয় মামলা দায়ের সাপেক্ষে আটক ইউপি সচিবকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’