ঢাকা ০২:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্থানীয় সরকার কার্যকর করতে নতুন প্রকল্প

Reporter Name

সবুজদেশ ডেক্স: উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদকে (ইউপি) কার্যকর ও শক্তিশালী করতে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন একটি প্রকল্প নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। স্থানীয় সরকার এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে স্থানীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞেরা বলেছেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে কার্যকর ও শক্তিশালী করতে হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাঁদের এমন মতামতের আলোকে নতুন প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা।

‘কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার (ইএএলজি)’ শীর্ষক এ প্রকল্পের আওতায় আটটি জেলার পিছিয়ে পড়া ১৬টি উপজেলা এবং ২৪০টি ইউপির সক্ষমতা বাড়ানো হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়কাল ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর। প্রকল্প ব্যয় ৫৬ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মিলনায়তনে এ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হলে জবাবদিহি বাড়াতে হবে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দীর্ঘ মেয়াদে উন্নয়ন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে সুসমন্বিত পরিকল্পনার কোনো বিকল্প নেই। স্থানীয় পরিকল্পনার সমন্বিত রূপ হবে কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা। স্থানীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে স্থানীয় নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো আরও কার্যকর হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান বলেন, আগামী ৫ বছর তৃণমূলে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলে প্রকল্পভুক্ত উপজেলা ও ইউনিয়ন হবে উন্নয়নের মডেল। প্রকল্পের কাজে নারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে হবে।

এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি), সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) এবং ডেনিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ডানিডা)। এই প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বেশ কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে প্রকল্পের আওতাধীন উপজেলা পরিষদ ও ইউপির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। ফরিদপুরের নাসিরাবাদ ইউপির চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, জনগণের অংশগ্রহণে ওয়ার্ড সভা করতে বলা হয়। সেখানে জনগণ নানা প্রকল্প নেওয়ার দাবি জানায়। কিন্তু অর্থ বরাদ্দ না থাকায় সেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় না।

ফরিদপুরের পাচুরিয়া ইউপির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঢাকায় বসে অনেকে মনে করতে পারেন দেশ উন্নত হয়ে গেছে। গ্রামে গেলে দেখবেন, কত গরিব মানুষ সহায়তার জন্য ঘুরছে। অথচ ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই।’ অনুষ্ঠানে ইউপি চেয়ারম্যানেরা তাঁদের সম্মানী বাড়ানোর দাবি জানান।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে প্রকল্পের ওপর একটি উপস্থাপনা দেন প্রকল্প পরিচালক অমিতাভ সরকার। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন বিয়াতে এলসেসার, ডেনমার্ক দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন রেফিকা হাইতা প্রমুখ।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৬:০১:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮
৯৮৩ Time View

স্থানীয় সরকার কার্যকর করতে নতুন প্রকল্প

আপডেট সময় : ০৬:০১:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সবুজদেশ ডেক্স: উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদকে (ইউপি) কার্যকর ও শক্তিশালী করতে প্রায় ৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন একটি প্রকল্প নিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। স্থানীয় সরকার এবং সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে স্থানীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করাই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞেরা বলেছেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে কার্যকর ও শক্তিশালী করতে হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাঁদের এমন মতামতের আলোকে নতুন প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা।

‘কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক স্থানীয় সরকার (ইএএলজি)’ শীর্ষক এ প্রকল্পের আওতায় আটটি জেলার পিছিয়ে পড়া ১৬টি উপজেলা এবং ২৪০টি ইউপির সক্ষমতা বাড়ানো হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়কাল ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর। প্রকল্প ব্যয় ৫৬ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর কাকরাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর মিলনায়তনে এ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হলে জবাবদিহি বাড়াতে হবে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দীর্ঘ মেয়াদে উন্নয়ন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরিতে সুসমন্বিত পরিকল্পনার কোনো বিকল্প নেই। স্থানীয় পরিকল্পনার সমন্বিত রূপ হবে কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা। স্থানীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে স্থানীয় নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলো আরও কার্যকর হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান বলেন, আগামী ৫ বছর তৃণমূলে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করলে প্রকল্পভুক্ত উপজেলা ও ইউনিয়ন হবে উন্নয়নের মডেল। প্রকল্পের কাজে নারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে হবে।

এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি), সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন (এসডিসি) এবং ডেনিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (ডানিডা)। এই প্রকল্পের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে বেশ কিছু কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে প্রকল্পের আওতাধীন উপজেলা পরিষদ ও ইউপির নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের নানা অভিযোগ তুলে ধরেন। ফরিদপুরের নাসিরাবাদ ইউপির চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, জনগণের অংশগ্রহণে ওয়ার্ড সভা করতে বলা হয়। সেখানে জনগণ নানা প্রকল্প নেওয়ার দাবি জানায়। কিন্তু অর্থ বরাদ্দ না থাকায় সেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় না।

ফরিদপুরের পাচুরিয়া ইউপির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘ঢাকায় বসে অনেকে মনে করতে পারেন দেশ উন্নত হয়ে গেছে। গ্রামে গেলে দেখবেন, কত গরিব মানুষ সহায়তার জন্য ঘুরছে। অথচ ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যাপ্ত বরাদ্দ নেই।’ অনুষ্ঠানে ইউপি চেয়ারম্যানেরা তাঁদের সম্মানী বাড়ানোর দাবি জানান।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে প্রকল্পের ওপর একটি উপস্থাপনা দেন প্রকল্প পরিচালক অমিতাভ সরকার। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপির কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন বিয়াতে এলসেসার, ডেনমার্ক দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন রেফিকা হাইতা প্রমুখ।