ঢাকা ০৩:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে ভারতে পালাতে সহযোগিতা বিএনপি নেতার!

  • সবুজদেশ ডেস্ক
  • Update Time : ০১:৫৪:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫
  • ৮০২ বার পড়া হয়েছে।

 

ঝিনাইদহের মহেশপুরে পলাতক জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনিচুর রহমান মিঠু মালিথাকে ভারতে পালাতে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা সমালোচনা। বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ আনিচুর রহমান মিঠু মালিথার বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় ২টি ও ঢাকায় ১টি মামলা রয়েছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে সে পলাতক ছিল। সর্বশেষ গত কয়েকদিন ধরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই নেতা জেলার মহেশপুরে অবস্থান করছিল। মহেশপুরে অবস্থানকালীন সময়ে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার আশ্রয়ে থাকতো সে। স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতা জিয়ার অফিস ও প্রেসক্লাবে বসতে দেখেছেন। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের সাবেক পুলিশ সদস্য হাফিজুলের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আনিচুর রহমান মিঠু মালিথা। এই খবর পেয়ে সেই বাড়ি ঘিরে ফেলে স্থানীয় জনতা। পরে বিএনপি নেতা জিয়াউর রহমান জিয়ার লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসে পালাতে সহযোগিতা করে। এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

মহেশপুরের স্থানীয় সংবাদকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ৫ আগস্টের পরে মহেশপুর উপজেলা পরিষদের সামনে একাধিক দিন আনিচুর রহমান মিঠু মালিথাকে দেখেছেন। বিএনপি নেতা জিয়াউর রহমান জিয়ার সাথে বেশ সখ্যতা আনিচুর রহমান মিঠু মালিথার। সর্বশেষ ৪ দিন আগেও তাকে মহেশপুরে দেখেছেন। মহেশপুর উপজেলা পরিষদের সামনে একটি প্রেসক্লাবেও মিঠু মালিথাকে বসতে দেখেছেন তিনি।

জেলা কৃষকদলের সদস্য মোহাম্মদ উল্লাহ শাওকী তার ফেসবুকে লিখেছেন, ৫ই আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর মহেশপুর বর্ডার দিয়ে একাধিক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতা এবং কর্মীরা ভারতে পালিয়ে গেছে বলে গেছে বলে জানা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল মহেশপুরের বোয়ালিয়া গ্রামের সাবেক পুলিশ সদস্য হাফিজুলের বাড়িতে পাচারের জন্য প্রস্তুত ছিল জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি, কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিন্টুর ক্যাডার নামে পরিচিত মিঠু মালিথা। খবর পেয়ে এলাকার জনসাধারণ বাড়িটা ঘিরে ফেলে এবং তাকে পুলিশে দেওয়ার জন্য খবর দেয়। কিন্তু আগেই খবর পেয়ে শীর্ষস্থানীয় সুবিধাভোগী নেতারা দ্রুত সেখানে ছুটে যায় এবং জনগণের কাছ থেকে মিঠু মালিথা কে ছাড়িয়ে নিয়ে তাকে পালাতে সাহায্য করে। এই ঘটনায় প্রশাসন কেন নীরব ভূমিকা পালন করছে তা রহস্যজনক।

এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ৫ আগস্টের পর আনিচুর রহমান মিঠু মালিথার সাথে মহেশপুর শহরে অনেকদিন দেখা হয়েছে। শুনেছি সে তার খালাতো ভাইয়ের বাড়িতে থাকতো। তাকে ভারতে পালাতে কোন সহযোগিতা করিনি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এই তথ্যগুলো ছড়াচ্ছে।

কালীগঞ্জ থানার এসআই গিয়াস উদ্দিন জানান, আনিচুর রহমান মিঠু মালিথার বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় দুইটি মামলা রয়েছে।

মহেশপুর থানার ওসি ফয়েজ উদ্দিন মৃধা জানান, উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় জনতা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে পাইনি। পুলিশ যাওয়ার আগেই সে পালিয়ে গেছে।

ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ বলেন, একজন মামলার আসামিকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করাও অপরাধ। দল কোনো ব্যক্তির কৃতকর্মের দায় নেবে না। মিঠু মালিথাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করার যে উদ্যোগ, এটি ব্যক্তিগতভাবে নেওয়া হয়েছে। আমরা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আমরা দলীয়ভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করবো। এ ধরনের ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেবে না দল।

সবুজদেশ/এসইউ

স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে ভারতে পালাতে সহযোগিতা বিএনপি নেতার!

Update Time : ০১:৫৪:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ মার্চ ২০২৫

 

ঝিনাইদহের মহেশপুরে পলাতক জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আনিচুর রহমান মিঠু মালিথাকে ভারতে পালাতে সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা সমালোচনা। বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগসহ আনিচুর রহমান মিঠু মালিথার বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় ২টি ও ঢাকায় ১টি মামলা রয়েছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে সে পলাতক ছিল। সর্বশেষ গত কয়েকদিন ধরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই নেতা জেলার মহেশপুরে অবস্থান করছিল। মহেশপুরে অবস্থানকালীন সময়ে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়ার আশ্রয়ে থাকতো সে। স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতা জিয়ার অফিস ও প্রেসক্লাবে বসতে দেখেছেন। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ভারতে পালিয়ে যাওয়ার জন্য উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের সাবেক পুলিশ সদস্য হাফিজুলের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আনিচুর রহমান মিঠু মালিথা। এই খবর পেয়ে সেই বাড়ি ঘিরে ফেলে স্থানীয় জনতা। পরে বিএনপি নেতা জিয়াউর রহমান জিয়ার লোকজন গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে এসে পালাতে সহযোগিতা করে। এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

মহেশপুরের স্থানীয় সংবাদকর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ৫ আগস্টের পরে মহেশপুর উপজেলা পরিষদের সামনে একাধিক দিন আনিচুর রহমান মিঠু মালিথাকে দেখেছেন। বিএনপি নেতা জিয়াউর রহমান জিয়ার সাথে বেশ সখ্যতা আনিচুর রহমান মিঠু মালিথার। সর্বশেষ ৪ দিন আগেও তাকে মহেশপুরে দেখেছেন। মহেশপুর উপজেলা পরিষদের সামনে একটি প্রেসক্লাবেও মিঠু মালিথাকে বসতে দেখেছেন তিনি।

জেলা কৃষকদলের সদস্য মোহাম্মদ উল্লাহ শাওকী তার ফেসবুকে লিখেছেন, ৫ই আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর মহেশপুর বর্ডার দিয়ে একাধিক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতা এবং কর্মীরা ভারতে পালিয়ে গেছে বলে গেছে বলে জানা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল মহেশপুরের বোয়ালিয়া গ্রামের সাবেক পুলিশ সদস্য হাফিজুলের বাড়িতে পাচারের জন্য প্রস্তুত ছিল জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি, কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিন্টুর ক্যাডার নামে পরিচিত মিঠু মালিথা। খবর পেয়ে এলাকার জনসাধারণ বাড়িটা ঘিরে ফেলে এবং তাকে পুলিশে দেওয়ার জন্য খবর দেয়। কিন্তু আগেই খবর পেয়ে শীর্ষস্থানীয় সুবিধাভোগী নেতারা দ্রুত সেখানে ছুটে যায় এবং জনগণের কাছ থেকে মিঠু মালিথা কে ছাড়িয়ে নিয়ে তাকে পালাতে সাহায্য করে। এই ঘটনায় প্রশাসন কেন নীরব ভূমিকা পালন করছে তা রহস্যজনক।

এ ব্যাপারে মহেশপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ৫ আগস্টের পর আনিচুর রহমান মিঠু মালিথার সাথে মহেশপুর শহরে অনেকদিন দেখা হয়েছে। শুনেছি সে তার খালাতো ভাইয়ের বাড়িতে থাকতো। তাকে ভারতে পালাতে কোন সহযোগিতা করিনি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এই তথ্যগুলো ছড়াচ্ছে।

কালীগঞ্জ থানার এসআই গিয়াস উদ্দিন জানান, আনিচুর রহমান মিঠু মালিথার বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় দুইটি মামলা রয়েছে।

মহেশপুর থানার ওসি ফয়েজ উদ্দিন মৃধা জানান, উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় জনতা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে পাইনি। পুলিশ যাওয়ার আগেই সে পালিয়ে গেছে।

ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ বলেন, একজন মামলার আসামিকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করাও অপরাধ। দল কোনো ব্যক্তির কৃতকর্মের দায় নেবে না। মিঠু মালিথাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করার যে উদ্যোগ, এটি ব্যক্তিগতভাবে নেওয়া হয়েছে। আমরা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। আমরা দলীয়ভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করবো। এ ধরনের ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেবে না দল।

সবুজদেশ/এসইউ