মাগুরাঃ

মাগুরায় ২০০৫ সালের একটি হত্যা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে মাগুরার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফারজানা ইয়াসমিন এ রায় ঘোষণা করেন। তবে রায় ঘোষণার পর বিচারকক্ষেই মামলার বাদীর ওপর হামলা চালিয়েছেন আসামি পক্ষের লোকজন। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন মহম্মদপুর উপজেলার খালিয়া গ্রামের ইদ্রিস আলী, আলতু লস্কর ও কাসেম লস্কর। আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৯ জানুয়ারি অর্থ লেনদেন নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন মহম্মদপুর উপজেলার খালিয়া গ্রামের মাহাবুবুর রহমানের ছেলে রাজু আহম্মেদ। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তির চাচা হাফিজুর রহমান বিশ্বাস পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মহম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। হাফিজুরের পর মামলার বাদী হন নিহত ব্যক্তির বাবা মাহাবুবুর রহমান। ২০০৬ সালে ওই মামলায় পুলিশ চারজনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (এপিপি) মসিয়ার রহমান বলেন, পুলিশ যে চারজনের নামে অভিযোগপত্র দিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে হিরু লস্কর নামের এক আসামির মৃত্যু হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বাকি তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আর ইদ্রিস আলী নামের এক আসামি পলাতক।

এপিপি মসিয়ার রহমান আরও বলেন, দুপুরে মামলার রায় ঘোষণার পর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন আসামিপক্ষের পরিবারের কয়েকজন সদস্য। তাঁরা মামলার বাদী মাহাবুবুর রহমানের ওপর হামলা চালান। পরে অবশ্য পুলিশের সহায়তায় কোনো হতাহতের ঘটনা ছাড়াই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

মামলার বাদী ও নিহত রাজু আহম্মেদের বাবা মাহাবুবুর রহমান (৬৫) বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে হলেও ছেলে হত্যার বিচার হয়েছে। কিন্তু আদালতকক্ষেই আসামিপক্ষের লোকজন আমার ওপর হামলা চালিয়েছেন। প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। আমি আতঙ্কে আছি।’

জানতে চাইলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ শাহজাহান সিরাজ বলেন, রায় ঘোষণা উপলক্ষে পুলিশ সতর্ক ছিল। কিন্তু আকস্মিকভাবে কয়েকজন নারী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একই সঙ্গে পুলিশি নিরাপত্তা দিয়ে বাদীকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

Please enter your comment!
Please enter your name here