ঢাকা ০৮:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হবিগঞ্জে পৃথক ঘটনায় দুই নারী খুন

Reporter Name

সবুজদেশ ডেক্সঃ হবিগঞ্জের লাখাইয়ে দেবরের দায়ের কুপে খুন হয়েছেন মানছুরা আক্তার সুমী (২৫) নামে এক গর্ভবতী গৃহবধূ। এ ঘটনার পর দেবর বুরহান উদ্দিন পলাতক রয়েছে।

রবিবার বেলা ২টার গুরুতর আহত অবস্থায় সুমীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। সে উপজেলার মুড়িয়াক পশ্চিমপাড় দেওয়ান বাড়ির আব্দুর রশিদ লিটনের স্ত্রী এবং একই গ্রামের সফিউল আলমের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সুমীর আব্দুর রশিদ লিটনের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই তাদের পরিবারে শুরু হয় কলহ। এর জের ধরে রবিবার বেলা ১১টায় লিটনের ছোট ভাই বুরহান সুমীর মাথা এবং হাতে ধারালো দা দিয়ে আঘাত করে। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে। সুমী ৫ মাসের অন্তসত্ত্বা বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমরান হোসেন জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে দেবর বুরহান উদ্দিনের আঘাতে সুমীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর বুরহানকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পরবর্তীতে তদন্তপূর্বক সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপর দিকে শনিবার রাত বানিয়াচং উপজেলার কাটখাল গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মিনারা বেগম নামে এক মহিলা টেটাবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরো ৩ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাটখাল গ্রামের পাতনী বাড়ির মৃত রিয়াত উল্লাহর ছেলে আব্দুস শহীদ ও চৌকিদার বাড়ির নেতৃত্বে ১১টি গোষ্ঠীর সাথে একই গ্রামের হাজী ছিদ্দেক আলীর ছেলে কাছুম আলীর লোকজনের জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। আব্দুস শহীদের লোকজন সালিশের মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করে কাছুম আলীর লোকজনকে। শনিবার সকালে এ নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে বানিয়াচং থানার এসআই ফিরুজ আল মামুন কাটখাল গ্রামে উপস্থিত হয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করেন এবং কোন ধরনের সংঘর্ষে লিপ্ত না হওয়ার অনুরোধ জানান। বিকেলে এই নিষেধ না মেনে আব্দুস শহীদের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কাছুম আলীর বাড়িতে এসে হামলা ও ভাংচুর চালায়। সংঘর্ষে বুকে টেটাবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত আব্দুর রকিবের স্ত্রী মিনারা খাতুনকে (৩৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পায়ে টেটাবিদ্ধ হাজী ছিদ্দেক আলীর ছেলে উসমান আলীকে (৩৮) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অপর আহত মৃত আদম আলীর ছেলে কুতুব আলী (২২) এবং হাজী ছিদ্দেক আলীর ছেলে মাওলানা আইয়ু বিন ছিদ্দিককে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাত ১০টার দিকে ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত মিনারা বেগম মারা যান।
বানিয়াচং থানার ওসি রাশেদ মোবারক এ ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন, বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ফের সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৬:২১:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৮
৯৭৯ Time View

হবিগঞ্জে পৃথক ঘটনায় দুই নারী খুন

আপডেট সময় : ০৬:২১:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ নভেম্বর ২০১৮

সবুজদেশ ডেক্সঃ হবিগঞ্জের লাখাইয়ে দেবরের দায়ের কুপে খুন হয়েছেন মানছুরা আক্তার সুমী (২৫) নামে এক গর্ভবতী গৃহবধূ। এ ঘটনার পর দেবর বুরহান উদ্দিন পলাতক রয়েছে।

রবিবার বেলা ২টার গুরুতর আহত অবস্থায় সুমীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। সে উপজেলার মুড়িয়াক পশ্চিমপাড় দেওয়ান বাড়ির আব্দুর রশিদ লিটনের স্ত্রী এবং একই গ্রামের সফিউল আলমের মেয়ে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সুমীর আব্দুর রশিদ লিটনের সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই তাদের পরিবারে শুরু হয় কলহ। এর জের ধরে রবিবার বেলা ১১টায় লিটনের ছোট ভাই বুরহান সুমীর মাথা এবং হাতে ধারালো দা দিয়ে আঘাত করে। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুমীকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু ঘটে। সুমী ৫ মাসের অন্তসত্ত্বা বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ এমরান হোসেন জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে দেবর বুরহান উদ্দিনের আঘাতে সুমীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর বুরহানকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পরবর্তীতে তদন্তপূর্বক সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপর দিকে শনিবার রাত বানিয়াচং উপজেলার কাটখাল গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মিনারা বেগম নামে এক মহিলা টেটাবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরো ৩ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাটখাল গ্রামের পাতনী বাড়ির মৃত রিয়াত উল্লাহর ছেলে আব্দুস শহীদ ও চৌকিদার বাড়ির নেতৃত্বে ১১টি গোষ্ঠীর সাথে একই গ্রামের হাজী ছিদ্দেক আলীর ছেলে কাছুম আলীর লোকজনের জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে দু’পক্ষের মাঝে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে। আব্দুস শহীদের লোকজন সালিশের মাধ্যমে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করে কাছুম আলীর লোকজনকে। শনিবার সকালে এ নিয়ে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে বানিয়াচং থানার এসআই ফিরুজ আল মামুন কাটখাল গ্রামে উপস্থিত হয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করেন এবং কোন ধরনের সংঘর্ষে লিপ্ত না হওয়ার অনুরোধ জানান। বিকেলে এই নিষেধ না মেনে আব্দুস শহীদের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কাছুম আলীর বাড়িতে এসে হামলা ও ভাংচুর চালায়। সংঘর্ষে বুকে টেটাবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত আব্দুর রকিবের স্ত্রী মিনারা খাতুনকে (৩৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পায়ে টেটাবিদ্ধ হাজী ছিদ্দেক আলীর ছেলে উসমান আলীকে (৩৮) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। অপর আহত মৃত আদম আলীর ছেলে কুতুব আলী (২২) এবং হাজী ছিদ্দেক আলীর ছেলে মাওলানা আইয়ু বিন ছিদ্দিককে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাত ১০টার দিকে ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত মিনারা বেগম মারা যান।
বানিয়াচং থানার ওসি রাশেদ মোবারক এ ঘটনার সত্যতা স্বিকার করে বলেন, বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ফের সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।