ঢাকা ০৫:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাসিনাকে ফেরত না পাঠালে চুক্তির লঙ্ঘন করবে ভারত: আসিফ নজরুল

সবুজদেশ ডেস্ক:

ছবি সংগৃহীত-

 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ইতোমধ্যে ফেরত চেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে প্রায় এক মাস গত হলেও এখনো এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি দেশটি। এই অবস্থায় ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না পাঠালে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন হবে বলে মনে করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, আমরা প্রত্যর্পণের জন্য চিঠি লিখেছি। এরপর ভারত যদি শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ না করে, তবে এটা বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে প্রত্যার্পণ চুক্তি সেটার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে। সেই ব্যাপারে আমরা বিশ্ব সমাজে পদক্ষেপ নেব; সেটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঠিক করা হবে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের যা যা করণীয় আছে আমরা করে যাচ্ছি। আরও কিছু করণীয় থাকলে ক্ষেত্র বিশেষে চিন্তা করে আমরা করব।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান টানা চার মেয়াদ ক্ষমতা ধরে রাখা শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েই জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করে। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে শেখ হাসিনার গঠন করা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচারের সিদ্ধান্ত হয়।

ইতোমধ্যে ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচারকাজ শুরু হয়েছে এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। গত ২৩ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ভারত চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও এখনো এ ব্যাপারে তাদের কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ‘প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধের মামলা’য় অভিযুক্ত বা ফেরারি আসামি ও বন্দিদের একে অপরের কাছে হস্তান্তরের জন্য একটি চুক্তি আছে ২০১৩ সাল থেকেই। চুক্তি অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তির নামে মামলা বা অভিযোগ করা হয় বা তিনি দোষী সাব্যস্ত হন অথবা দেশের আদালত কর্তৃক প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধ করার জন্য ফেরত চাওয়া হয়, তাহলে তাকে ফেরত দেবে বাংলাদেশ ও ভারত। প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধ বলতে চুক্তিতে সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদণ্ড হয় এমন অপরাধকে বলা হয়েছে। এর মধ্যে আর্থিক অপরাধও রয়েছে।

সবুজদেশ/এসইউ

About Author Information
আপডেট সময় : ০৫:৩২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫
৬ Time View

হাসিনাকে ফেরত না পাঠালে চুক্তির লঙ্ঘন করবে ভারত: আসিফ নজরুল

আপডেট সময় : ০৫:৩২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫

 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ইতোমধ্যে ফেরত চেয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তবে প্রায় এক মাস গত হলেও এখনো এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি দেশটি। এই অবস্থায় ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত না পাঠালে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির সরাসরি লঙ্ঘন হবে বলে মনে করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।

মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই কথা বলেন।

আসিফ নজরুল বলেন, আমরা প্রত্যর্পণের জন্য চিঠি লিখেছি। এরপর ভারত যদি শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ না করে, তবে এটা বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে প্রত্যার্পণ চুক্তি সেটার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে। সেই ব্যাপারে আমরা বিশ্ব সমাজে পদক্ষেপ নেব; সেটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঠিক করা হবে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, আমাদের যা যা করণীয় আছে আমরা করে যাচ্ছি। আরও কিছু করণীয় থাকলে ক্ষেত্র বিশেষে চিন্তা করে আমরা করব।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান টানা চার মেয়াদ ক্ষমতা ধরে রাখা শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েই জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করে। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে শেখ হাসিনার গঠন করা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালেই শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচারের সিদ্ধান্ত হয়।

ইতোমধ্যে ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার বিচারকাজ শুরু হয়েছে এবং শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জারি করা হয়েছে গ্রেফতারি পরোয়ানা। গত ২৩ ডিসেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ভারত চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও এখনো এ ব্যাপারে তাদের কোনো সিদ্ধান্তের কথা জানায়নি।

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ‘প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধের মামলা’য় অভিযুক্ত বা ফেরারি আসামি ও বন্দিদের একে অপরের কাছে হস্তান্তরের জন্য একটি চুক্তি আছে ২০১৩ সাল থেকেই। চুক্তি অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তির নামে মামলা বা অভিযোগ করা হয় বা তিনি দোষী সাব্যস্ত হন অথবা দেশের আদালত কর্তৃক প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধ করার জন্য ফেরত চাওয়া হয়, তাহলে তাকে ফেরত দেবে বাংলাদেশ ও ভারত। প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধ বলতে চুক্তিতে সর্বনিম্ন এক বছরের কারাদণ্ড হয় এমন অপরাধকে বলা হয়েছে। এর মধ্যে আর্থিক অপরাধও রয়েছে।

সবুজদেশ/এসইউ