ঢাকা ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৩ লাখ টাকার ব্রীজের মেয়াদ মাত্র ৫ মাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছবি প্রতিনিধি-

 

১৩ লাখ টাকার ব্রীজের মেয়াদ মাত্র ৫ মাস!। শুনতে অবাক লাগলেও এমনটি হচ্ছে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে। কয়েক মাস আগে করা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্রীজ ভেঙ্গে সেখানে এখন আবার নতুন করে কালভার্ট নির্মাণ করবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

সরেজমিনে হরিণাকুন্ডু উপজেলার কণ্যাদহ গ্রামে গিয়ে দেখা যায় জিকে সেচ খালের উপর গত ৫ মাস আগে নির্মাণ করা হয়েছে ব্রীজটি। ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যায়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পের বরাদ্দ অনুযায়ি জিকে সেচ খালের উপর নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রীজের গায়ে এখনও মোড়ানো রয়েছে নতুন পলিথিন। শেষ হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অডিটও। কিন্তু একই স্থানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আরেকটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যায়ে ওই স্থানেই আবার একটি কালভার্ট নির্মাণ করবেন তারা। যে কারণে নতুন ব্রীজটি ভেঙে আবারো কালভার্ট করার চুড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছেন। ফলে সুষ্ঠু পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও দুই বিভাগের সমন্বয়ের অভাবে সরকারের গচ্চা যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এদিকে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় উপকারভোগীরা।

ওই গ্রামের আরশেদ আলী নামের এক কৃষক বলেন, ব্রীজটি নির্মাণেও করা হয়েছে অনিয়ম। সড়ক অনুযায়ী ব্রীজ না করায় প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। ব্রীজটি যখন নির্মাণ করা হয় তখন তারাই বলেছিলো কয়েকদিন পর আবারো নতুন ব্রীজ হবে। আমার নিষেধ করার পরও তারা র্নিমানের এই ব্রীজটি নির্মাণ করেছেন।

রাশেদ হক নামের এক বাসিন্দা বলেন, সরকারের কত টাকা হয়েছে যে ৫ মাসের মাথায় নতুন ব্রীজ ভেঙ্গে আবারো ব্রীজ করবে। নতুন ব্রীজই যদি করবে তাহলে এই ব্রীজটি করার দরকার ছিলো না। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক ও জনপথ সমন্বয় করলে সরকারের এই বাড়তি টাকা গচ্ছা যেত না।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিনহাজুল ইসলাম বলেন, জিকে সেচ খাল যেহেতু আমাদের আওতাধীন তাই আমরা ব্রীজটি নির্মাণ করেছি। কারণে অনেকদিন আগে ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে এলাকাবাসীর ভোগান্তি হচ্ছিলো। সেই ভোগান্তি দুর করতেই আমরা ব্রীজটি নির্মাণ করেছি। সড়ক ও জনপথ যদি ওই স্থানে ব্রীজ করে তাহলে আমাদের কাছ থেকে এনওসি নিয়ে করতে হবে। কিন্তু তারা এনওসি না নিয়েই স্টিমেট করেছে। আগামীতে সওজ বা এলজিইডি যদি জিকে সেচ খালের উপর ব্রীজ করে আমাদের সাথে আগে থেকে যোগাযোগ করলে এই ভুলবোঝাবুঝি হবে না। এ ব্যাপারে আমরাও সচেষ্ট থাকব।

ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: হাফিজুর রহমান বলেন, ব্রীজটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আগের নির্বাহী প্রকৌশলী থাকার সময় করা। ব্রীজটি যখন নির্মাণ করা হয় সেসময় আমার আগের নির্বাহী প্রকৌশলী দু’দফা চিঠিও দিয়েছিলো কিন্তু তাদের মাঝে সমন্বয় হয়নি। ব্রীজটি নতুন হলেও এলাকার মানুষের চলাচলের অনুপযোগী। তাই এলাকার মানুষের ভোগান্তি দুর করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সমন্বয় করে নতুন ব্রীজের কাজ শুরু হবে। এতে আশা করি এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।

সবুজদেশ/এসইউ

About Author Information
আপডেট সময় : ০১:৪৯:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪
২০ Time View

১৩ লাখ টাকার ব্রীজের মেয়াদ মাত্র ৫ মাস

আপডেট সময় : ০১:৪৯:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪

 

১৩ লাখ টাকার ব্রীজের মেয়াদ মাত্র ৫ মাস!। শুনতে অবাক লাগলেও এমনটি হচ্ছে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে। কয়েক মাস আগে করা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্রীজ ভেঙ্গে সেখানে এখন আবার নতুন করে কালভার্ট নির্মাণ করবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এতে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

সরেজমিনে হরিণাকুন্ডু উপজেলার কণ্যাদহ গ্রামে গিয়ে দেখা যায় জিকে সেচ খালের উপর গত ৫ মাস আগে নির্মাণ করা হয়েছে ব্রীজটি। ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যায়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পের বরাদ্দ অনুযায়ি জিকে সেচ খালের উপর নির্মাণ করা হয়েছে। ব্রীজের গায়ে এখনও মোড়ানো রয়েছে নতুন পলিথিন। শেষ হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অডিটও। কিন্তু একই স্থানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের আরেকটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যায়ে ওই স্থানেই আবার একটি কালভার্ট নির্মাণ করবেন তারা। যে কারণে নতুন ব্রীজটি ভেঙে আবারো কালভার্ট করার চুড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়েছেন। ফলে সুষ্ঠু পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও দুই বিভাগের সমন্বয়ের অভাবে সরকারের গচ্চা যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এদিকে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয় উপকারভোগীরা।

ওই গ্রামের আরশেদ আলী নামের এক কৃষক বলেন, ব্রীজটি নির্মাণেও করা হয়েছে অনিয়ম। সড়ক অনুযায়ী ব্রীজ না করায় প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। ব্রীজটি যখন নির্মাণ করা হয় তখন তারাই বলেছিলো কয়েকদিন পর আবারো নতুন ব্রীজ হবে। আমার নিষেধ করার পরও তারা র্নিমানের এই ব্রীজটি নির্মাণ করেছেন।

রাশেদ হক নামের এক বাসিন্দা বলেন, সরকারের কত টাকা হয়েছে যে ৫ মাসের মাথায় নতুন ব্রীজ ভেঙ্গে আবারো ব্রীজ করবে। নতুন ব্রীজই যদি করবে তাহলে এই ব্রীজটি করার দরকার ছিলো না। তিনি বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক ও জনপথ সমন্বয় করলে সরকারের এই বাড়তি টাকা গচ্ছা যেত না।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিনহাজুল ইসলাম বলেন, জিকে সেচ খাল যেহেতু আমাদের আওতাধীন তাই আমরা ব্রীজটি নির্মাণ করেছি। কারণে অনেকদিন আগে ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ার কারণে এলাকাবাসীর ভোগান্তি হচ্ছিলো। সেই ভোগান্তি দুর করতেই আমরা ব্রীজটি নির্মাণ করেছি। সড়ক ও জনপথ যদি ওই স্থানে ব্রীজ করে তাহলে আমাদের কাছ থেকে এনওসি নিয়ে করতে হবে। কিন্তু তারা এনওসি না নিয়েই স্টিমেট করেছে। আগামীতে সওজ বা এলজিইডি যদি জিকে সেচ খালের উপর ব্রীজ করে আমাদের সাথে আগে থেকে যোগাযোগ করলে এই ভুলবোঝাবুঝি হবে না। এ ব্যাপারে আমরাও সচেষ্ট থাকব।

ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: হাফিজুর রহমান বলেন, ব্রীজটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আগের নির্বাহী প্রকৌশলী থাকার সময় করা। ব্রীজটি যখন নির্মাণ করা হয় সেসময় আমার আগের নির্বাহী প্রকৌশলী দু’দফা চিঠিও দিয়েছিলো কিন্তু তাদের মাঝে সমন্বয় হয়নি। ব্রীজটি নতুন হলেও এলাকার মানুষের চলাচলের অনুপযোগী। তাই এলাকার মানুষের ভোগান্তি দুর করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সমন্বয় করে নতুন ব্রীজের কাজ শুরু হবে। এতে আশা করি এলাকার মানুষ উপকৃত হবে।

সবুজদেশ/এসইউ