ঢাকা ০২:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-তারেক রহমানের সর্বোচ্চ শাস্তিতে উচ্চ আদালতে যাব: কাদের

Reporter Name

ঢাকাঃ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বুধবার সকালে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ২১ আগস্টের মাধ্যমে রাজনীতির যে দেয়াল তুলেছে সেটি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

এর আগে ২১ আগস্টে নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আওয়ামী লীগ ও দলটির অন্যান্য অঙ্গ সংগঠন।

প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এবং পরে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল এবং বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

প্রসঙ্গত ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। তদন্তে উঠে আসে, তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ইন্ধনে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশসহ (হুজি) তিনটি জঙ্গি সংগঠন ওই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় ইতিহাসের ভয়াবহতম নৃশংস ও বর্বরোচিত ওই হামলার ঘটনা ঘটে।

এতে দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন কয়েকশ’ নেতাকর্মী। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান।

এদিকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের পৃথক দুটি মামলায় বিচারিক আদালতের রায় ঘোষণা হলেও চূড়ান্ত বিচার এখনও শেষ হয়নি।

এ বছরের ১৩ জানুয়ারি দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বর্তমানে এটি কার্য তালিকায় আসার জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। দুই মামলার রায়সহ প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পাতার নথি ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৌঁছে। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে এসব নথি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হয়।

ভয়াবহ সেই ঘটনার ১৪ বছর ১ মাস ২০ দিন পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মামলা দুটির রায় ঘোষণা হয়। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে স্থাপিত আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

হত্যা মামলায় ১৪টি এবং বিস্ফোরক আইনের মামলায় ১২টি বিষয় বিবেচনা করা হয়। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, এনএসআইয়ের সাবেক দুই মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিমসহ ১৯ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। অন্যদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামির মধ্যে দুজন এবং যাবজ্জীবন দণ্ডিত ১৯ জনের মধ্যে ১২ জন পলাতক। এছাড়া রায়ে আনসার ও ভিডিপির সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, সাবেক তিন আইজিপি আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরীসহ ১১ জন সাবেক সরকারি কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডও দেয়া হয়।

রায়ে ৪৯ আসামির সবারই সাজা হয়। যদিও মামলার আসামি ছিল ৫২ জন। এর মধ্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নান ও শরিফ শাহেদুল ইসলাম বিপুলের অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় বর্তমানে আসামি ৪৯ জন।

About Author Information
আপডেট সময় : ১২:৩৯:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০১৯
৩৯৭ Time View

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা-তারেক রহমানের সর্বোচ্চ শাস্তিতে উচ্চ আদালতে যাব: কাদের

আপডেট সময় : ১২:৩৯:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ অগাস্ট ২০১৯

ঢাকাঃ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বুধবার সকালে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি ২১ আগস্টের মাধ্যমে রাজনীতির যে দেয়াল তুলেছে সেটি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

এর আগে ২১ আগস্টে নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আওয়ামী লীগ ও দলটির অন্যান্য অঙ্গ সংগঠন।

প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এবং পরে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল এবং বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

প্রসঙ্গত ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে ওই গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটে। তদন্তে উঠে আসে, তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ইন্ধনে জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশসহ (হুজি) তিনটি জঙ্গি সংগঠন ওই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায় ইতিহাসের ভয়াবহতম নৃশংস ও বর্বরোচিত ওই হামলার ঘটনা ঘটে।

এতে দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন কয়েকশ’ নেতাকর্মী। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান।

এদিকে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের পৃথক দুটি মামলায় বিচারিক আদালতের রায় ঘোষণা হলেও চূড়ান্ত বিচার এখনও শেষ হয়নি।

এ বছরের ১৩ জানুয়ারি দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

বর্তমানে এটি কার্য তালিকায় আসার জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। দুই মামলার রায়সহ প্রায় ৩৭ হাজার ৩৮৫ পাতার নথি ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৌঁছে। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে এসব নথি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় পাঠানো হয়।

ভয়াবহ সেই ঘটনার ১৪ বছর ১ মাস ২০ দিন পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর মামলা দুটির রায় ঘোষণা হয়। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে স্থাপিত আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।

হত্যা মামলায় ১৪টি এবং বিস্ফোরক আইনের মামলায় ১২টি বিষয় বিবেচনা করা হয়। রায়ে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, এনএসআইয়ের সাবেক দুই মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিমসহ ১৯ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। অন্যদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামির মধ্যে দুজন এবং যাবজ্জীবন দণ্ডিত ১৯ জনের মধ্যে ১২ জন পলাতক। এছাড়া রায়ে আনসার ও ভিডিপির সাবেক ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, সাবেক তিন আইজিপি আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরীসহ ১১ জন সাবেক সরকারি কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডও দেয়া হয়।

রায়ে ৪৯ আসামির সবারই সাজা হয়। যদিও মামলার আসামি ছিল ৫২ জন। এর মধ্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নান ও শরিফ শাহেদুল ইসলাম বিপুলের অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় বর্তমানে আসামি ৪৯ জন।