ঢাকা ০২:২৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২৩ বছরেও বিচার হয়নি দৈনিক রানার সম্পাদক মুকুল হত্যার

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:০২:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ অগাস্ট ২০২১
  • ১৬১ বার পড়া হয়েছে।

যশোর:

যশোরে ২৩ বছরেও দৈনিক রানার সম্পাদক আর এম সাইফুল আলম মুকুল হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। নানা প্রতিবন্ধকতায় আটকে আছে মামলার বিচার কাজ।

যশোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন বলেন, ‘২৩ বছরেও মুকুল হত্যার বিচার না হয়নি। বিষয়টি তার পরিবার এবং আমাদের জন্য কষ্টদায়ক। এই মামলার বিচার না হলে হত্যাকারীরা উৎসাহী হবে। সাংবাদিকদের মনোবল ভেঙে পড়বে।’

তিনি মুকুল হত্যার বিচারকাজ দ্রুত শুরুর দাবি জানান।

তবে, শিগগির এ মামলার আর্গুমেন্ট শুরু হবে বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. ইদ্রিস আলী জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘দ্রুত এ মামলার আর্গুমেন্ট শুরু হবে। সাক্ষী প্রমাণ শেষে রায়ের মাধ্যমে মামলাটি নিষ্পত্তি হবে।’

এদিকে আজ ৩০ আগস্ট বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রয়াত সাংবাদিক মুকুলের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে যশোর প্রেসক্লাব, জেলা সংবাদপত্র পরিষদ ও যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন শোক র‌্যালি ও স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন।

১৯৯৮ সালের ৩০ আগস্ট রাতে রানার সম্পাদক সাইফুল আলম মুকুল শহর থেকে বেজপাড়ার নিজ বাসভবনে যাওয়ার পথে চারখাম্বার মোড়ে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় নিহত হন। পরদিন নিহতের স্ত্রী হাফিজা আক্তার শিরিন বাদী হয়ে যশোর কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি যশোর জোনের সাবেক এএসপি দুলাল উদ্দিন আকন্দ ১৯৯৯ সালের ২৩ এপ্রিল সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তবে, আইনি জটিলতার কারণে মামলার কার্যক্রম থেকে যায় এবং শেষ পর্যন্ত মামলাটি হাইকোর্ট থেকে বাতিল করে দেওয়া হয়। এরপর ২০০৫ সালে হাইকোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ মুকুল হত্যা মামলা বর্ধিত তদন্তের নির্দেশ দেন। একই বছরের ২১ ডিসেম্বর সিআইডি কর্মকর্তা মওলা বক্স নতুন দু’জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দেন। ২০০৬ সালের ১৫ জুন যশোরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল (৩) এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে (২) ২২ জনকে অভিযুক্ত করে মুকুল হত্যা মামলার চার্জ গঠন করে। এ সময় মামলা থেকে তৎকালীন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম ও রূপম নামে আরেক আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২০১০ সালে মামলার ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে।

আদালত সূত্র জানায়, মুকুল হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে আসামি দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক ফারাজী আজমল হোসেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আবেদন করেন। কিন্তু, তিনি উচ্চ আদালতে যাওয়ার পর আবারও মুকুল হত্যা মামলার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। পরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালত ফারাজী আজমল হোসেনের অংশ বাদ রেখে পুনরায় বিচার কার্যক্রম শুরু করেন।

Tag :

২৩ বছরেও বিচার হয়নি দৈনিক রানার সম্পাদক মুকুল হত্যার

Update Time : ০৬:০২:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ অগাস্ট ২০২১

যশোর:

যশোরে ২৩ বছরেও দৈনিক রানার সম্পাদক আর এম সাইফুল আলম মুকুল হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি। নানা প্রতিবন্ধকতায় আটকে আছে মামলার বিচার কাজ।

যশোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন বলেন, ‘২৩ বছরেও মুকুল হত্যার বিচার না হয়নি। বিষয়টি তার পরিবার এবং আমাদের জন্য কষ্টদায়ক। এই মামলার বিচার না হলে হত্যাকারীরা উৎসাহী হবে। সাংবাদিকদের মনোবল ভেঙে পড়বে।’

তিনি মুকুল হত্যার বিচারকাজ দ্রুত শুরুর দাবি জানান।

তবে, শিগগির এ মামলার আর্গুমেন্ট শুরু হবে বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. ইদ্রিস আলী জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘দ্রুত এ মামলার আর্গুমেন্ট শুরু হবে। সাক্ষী প্রমাণ শেষে রায়ের মাধ্যমে মামলাটি নিষ্পত্তি হবে।’

এদিকে আজ ৩০ আগস্ট বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রয়াত সাংবাদিক মুকুলের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে যশোর প্রেসক্লাব, জেলা সংবাদপত্র পরিষদ ও যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন শোক র‌্যালি ও স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন।

১৯৯৮ সালের ৩০ আগস্ট রাতে রানার সম্পাদক সাইফুল আলম মুকুল শহর থেকে বেজপাড়ার নিজ বাসভবনে যাওয়ার পথে চারখাম্বার মোড়ে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় নিহত হন। পরদিন নিহতের স্ত্রী হাফিজা আক্তার শিরিন বাদী হয়ে যশোর কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি যশোর জোনের সাবেক এএসপি দুলাল উদ্দিন আকন্দ ১৯৯৯ সালের ২৩ এপ্রিল সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তবে, আইনি জটিলতার কারণে মামলার কার্যক্রম থেকে যায় এবং শেষ পর্যন্ত মামলাটি হাইকোর্ট থেকে বাতিল করে দেওয়া হয়। এরপর ২০০৫ সালে হাইকোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ মুকুল হত্যা মামলা বর্ধিত তদন্তের নির্দেশ দেন। একই বছরের ২১ ডিসেম্বর সিআইডি কর্মকর্তা মওলা বক্স নতুন দু’জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দেন। ২০০৬ সালের ১৫ জুন যশোরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল (৩) এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে (২) ২২ জনকে অভিযুক্ত করে মুকুল হত্যা মামলার চার্জ গঠন করে। এ সময় মামলা থেকে তৎকালীন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম ও রূপম নামে আরেক আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২০১০ সালে মামলার ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতে।

আদালত সূত্র জানায়, মুকুল হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে আসামি দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক ফারাজী আজমল হোসেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আবেদন করেন। কিন্তু, তিনি উচ্চ আদালতে যাওয়ার পর আবারও মুকুল হত্যা মামলার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। পরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালত ফারাজী আজমল হোসেনের অংশ বাদ রেখে পুনরায় বিচার কার্যক্রম শুরু করেন।