ঢাকা ০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৬০০০ চিঠি আটকা পড়ে রইল ১০ বছর

Reporter Name

একে একে ১০টি বছর পার হলো। এই এক দশকে কোনো চিঠিই বিলি করেননি সেই ডাকপিয়ন। আটকা পড়ে রইল ছয় হাজার চিঠি। অনেকেই পাননি তাঁর প্রত্যাশিত চিঠি, ব্যাংকের পাসবুক, এটিএম কার্ড, চাকরির নিয়োগপত্র। সম্প্রতি ভারতের ওডিশা রাজ্যের ওধাংগা গ্রামে এ ঘটনা প্রকাশ পায়। আর সেই পিয়নের চাকরিটাও চলে যায়।

বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, এই গ্রামের ডাকঘরের ডাকপিয়ন ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করায় এমনটা ঘটেছে। এই ডাকপিয়নের নাম জগন্নাথ পুহান। দীর্ঘ সময় তাঁকে গ্রামের এই ডাকঘর একাই চালাতে হয়েছে।

গ্রামের এই পোস্ট অফিস সম্প্রতি অন্যত্র স্থানান্তর করার পর পরিত্যক্ত সেই অফিসে খেলা করছিল একদল শিশু। সেখানে খেলতে খেলতে একপর্যায়ে শিশুরা পুরোনো চিঠির স্তূপ খুঁজে পায়। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, উঠানে খেলতে গিয়ে শিশুরা হঠাৎ বিশাল বস্তা দেখতে পায়। খুলে দেখে, সেখানে চিঠি আর চিঠি। চিঠির মধ্যে এটিএম কার্ড ও ব্যাংকের পাসবুক দেখতে পেয়ে শিশুরা তাদের অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়।

হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, প্রায় ছয় হাজার চিঠি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২০০৪ সালের চিঠিও রয়েছে। চিঠিগুলোর মধ্যে দেড় হাজার চিঠির ভাষা উদ্ধার করা গেছে। অন্যগুলো ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে, অনেক চিঠি উইপোকায় কেটে ফেলেছে।

ডাকপিয়ন জগন্নাথ পুহানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি বলেছেন, দীর্ঘ সময় তিনি ঠিকমতো হাঁটতে পারতেন না, তাই চিঠি পৌঁছে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তাঁর ছিল না। এদিকে কর্তৃপক্ষও অবাক। ডাকপিয়ন চিঠি দেননি ঠিক, কিন্তু এ নিয়ে এত বছর গ্রামের মানুষ কোনো অভিযোগ করেনি কেন, বুঝতে পারছে না তারা।

যেসব চিঠি উদ্ধার হয়েছে, সেগুলো অনেক দেরি হয়ে গেলেও এখন পাঠানো হচ্ছে। এ ঘটনার তদন্তে থাকা এক কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘আমি ২০১১ সালে ভারতীয় নৌবাহিনীর কাছ থেকে আসা একটি চিঠি দেখেছি। স্থানীয় একটি ছেলে আবেদন করেছিল।’

তবে অনেক চিঠি হয়তো আর নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাবে না। কারণ, লম্বা সময় ধরে জমে থাকা এসব চিঠির ঠিকানা ও ভাষা এখন দুর্বোধ্য।

About Author Information
আপডেট সময় : ১০:২৯:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৮
৯২২ Time View

৬০০০ চিঠি আটকা পড়ে রইল ১০ বছর

আপডেট সময় : ১০:২৯:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ অগাস্ট ২০১৮

একে একে ১০টি বছর পার হলো। এই এক দশকে কোনো চিঠিই বিলি করেননি সেই ডাকপিয়ন। আটকা পড়ে রইল ছয় হাজার চিঠি। অনেকেই পাননি তাঁর প্রত্যাশিত চিঠি, ব্যাংকের পাসবুক, এটিএম কার্ড, চাকরির নিয়োগপত্র। সম্প্রতি ভারতের ওডিশা রাজ্যের ওধাংগা গ্রামে এ ঘটনা প্রকাশ পায়। আর সেই পিয়নের চাকরিটাও চলে যায়।

বিবিসি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, এই গ্রামের ডাকঘরের ডাকপিয়ন ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করায় এমনটা ঘটেছে। এই ডাকপিয়নের নাম জগন্নাথ পুহান। দীর্ঘ সময় তাঁকে গ্রামের এই ডাকঘর একাই চালাতে হয়েছে।

গ্রামের এই পোস্ট অফিস সম্প্রতি অন্যত্র স্থানান্তর করার পর পরিত্যক্ত সেই অফিসে খেলা করছিল একদল শিশু। সেখানে খেলতে খেলতে একপর্যায়ে শিশুরা পুরোনো চিঠির স্তূপ খুঁজে পায়। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, উঠানে খেলতে গিয়ে শিশুরা হঠাৎ বিশাল বস্তা দেখতে পায়। খুলে দেখে, সেখানে চিঠি আর চিঠি। চিঠির মধ্যে এটিএম কার্ড ও ব্যাংকের পাসবুক দেখতে পেয়ে শিশুরা তাদের অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়।

হিন্দুস্তান টাইমসের খবরে বলা হয়, প্রায় ছয় হাজার চিঠি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ২০০৪ সালের চিঠিও রয়েছে। চিঠিগুলোর মধ্যে দেড় হাজার চিঠির ভাষা উদ্ধার করা গেছে। অন্যগুলো ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে, অনেক চিঠি উইপোকায় কেটে ফেলেছে।

ডাকপিয়ন জগন্নাথ পুহানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনে তিনি বলেছেন, দীর্ঘ সময় তিনি ঠিকমতো হাঁটতে পারতেন না, তাই চিঠি পৌঁছে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তাঁর ছিল না। এদিকে কর্তৃপক্ষও অবাক। ডাকপিয়ন চিঠি দেননি ঠিক, কিন্তু এ নিয়ে এত বছর গ্রামের মানুষ কোনো অভিযোগ করেনি কেন, বুঝতে পারছে না তারা।

যেসব চিঠি উদ্ধার হয়েছে, সেগুলো অনেক দেরি হয়ে গেলেও এখন পাঠানো হচ্ছে। এ ঘটনার তদন্তে থাকা এক কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, ‘আমি ২০১১ সালে ভারতীয় নৌবাহিনীর কাছ থেকে আসা একটি চিঠি দেখেছি। স্থানীয় একটি ছেলে আবেদন করেছিল।’

তবে অনেক চিঠি হয়তো আর নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাবে না। কারণ, লম্বা সময় ধরে জমে থাকা এসব চিঠির ঠিকানা ও ভাষা এখন দুর্বোধ্য।