সোমবার অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১২৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৬টি স্থগিত হওয়ায় মেয়র প্রার্থী কাউকে বিজয়ী ঘোষণা করেননি রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান।
তবে ঘোষিত ফলে দেখা যায়, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ারের চেয়ে ৮৭ হাজারের বেশি ভোটে এগিয়ে আছেন সাদিক।
স্থগিত কেন্দ্রের মোট ভোট ৩২ হাজার ৯৩০টির সব কটি সরওয়ার পেলেও তিনি সাদিককে অতিক্রম করতে পারবেন না বলে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা মাত্র।
বরিশালে মোট ভোটার ছিল ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২১ হাজার ৪৩৬ জন এবং নারী ১ লাখ ২০ হাজার ৭৩০ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩০০ জন।
একজন মেয়র, ৩০ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ১০ জন নারী কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোট দেন এই ভোটাররা।
গোলযোগ ও অনিয়মের কারণে ১৫টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত হয়, ফল ঘোষণা স্থগিত হয় একটি কেন্দ্রে।
মধ্যরাতে নগরীর নথুল্লাবাদে আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয় থেকে ১০৭টি কেন্দ্রের ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান।
তাতে দেখা যায়, নৌকা প্রতীকে সাদিক পেয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার ৩৫৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সরওয়ার ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ১৩ হাজার ১৩৫ ভোট।
ফলে ভোট স্থগিত হওয়া একটি কেন্দ্র এবং ফল স্থগিত হওয়া ১৫ কেন্দ্রে ফলের ওপর এ সিটির ফলাফল নির্ভর করছে না। সাদিক নিশ্চিতভাবেই জয় পাচ্ছেন।
ব্যাপক ‘অনিয়ম ও কারচুপির’ অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন বরিশাল সিটি করপোশনে মেয়র পদে বিএনপির প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ার। ছবি: মোস্তাফিজুর রহমান
সাদিক বাদে বিএনপির সরওয়ারসহ অন্য প্রার্থীরা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
২০০২ সালে যাত্রা শুরু করা বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচিত মেয়র সরওয়ার বেশ কিছু দিন বিরতির পর এবার সিটি ভোটের লড়াইয়ে নেমেছিলেন।
২০১৩ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শওকত হোসেন হিরনকে ১৭ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন জেলা বিএনপির সভাপতি আহসান হাবিব কামাল। সেবার ভোট পড়েছিল ৭২.১%।
২০১৩ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শওকত হোসেন হিরনকে ১৭ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন জেলা বিএনপির সভাপতি আহসান হাবিব কামাল। সেবার ভোট পড়েছিল ৭২.১%।
বিএনপি এবার প্রার্থী বদলে পুরনো মেয়র সরওয়ারকে ফিরিয়ে আনে; অন্য দিকে হিরনের মৃত্যুতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে আনে ৪৩ বছর বয়সী সাদিক আবদুল্লাহকে।
পরিবারিকভাবে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত সাদিক ভোটের লড়াইয়ে এই প্রথম নামলেন। তার বাবা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরে বরিশালের আগৈলঝারা-গৌরনদী আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন, তিনি সংসদের প্রধান হুইপও ছিলেন এক সময়।
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদিক নিজেকে স্বশিক্ষিত দাবি করেছেন নির্বাচন কমিশনে দেওয়া তথ্যে। পেশা লিখেছেন ব্যবসায়ী, কান্তা করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক।