গোলাপি বলে ৬ উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত বাংলাদেশ
সবুজদেশ ডেস্কঃ
উৎসবের আবহে শুরু হলো কলকাতা টেস্ট। ভারতের মাটিতে প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট, কৃত্রিম আলোয় প্রথমবার টেস্ট খেলছে বাংলাদেশও।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ২১.৪ ওভারে ৭৩/৬ (প্রথম সেশন শেষে) |
প্রথম সেশন ভারতের
আগের টেস্টের মতোই টস হেরেছে ভারত। আগের মতোই দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচের প্রথম সেশন করে নিয়েছে নিজেদের।
ভারতীয় পেসারদের দারুণ বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটসম্যানদের বাজে ব্যাটিংও ডেকে এনেছে বাংলাদেশের পতন। প্রথম সেশনে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ৭৩।
লিটনের অবসর দিয়েই শেষ হয়েছে প্রথম সেশন। বিরতির পর যদি লিটন ফিরতে না পারেন ব্যাটিংয়ে, বাংলাদেশের ইনিংস তাহলে শেষ হতে পারে দ্রুতই!
নেই কোনো বদলি
লিটন যদি শেষ পর্যন্ত আর ফিরতে না পারেন, চাইলেই ‘কনকাসন’ বদলি পাবে বাংলাদেশ। কিন্তু সেই বদলি নেওয়ার উপায় নেই। বাংলাদেশের স্কোয়াডে যে বাড়তি কোনো ব্যাটসম্যানই নেই!
পারিবারিক কারণে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগেই দেশে ফিরেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। তার কোনো বদলি পাঠানো হয়নি। ইন্দোর টেস্টে চোট পেয়ে কলকাতা টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান। তারও কোনো বদলি নেওয়া হয়নি স্কোয়াডে।
স্কোয়াডে বাকি আছেন আর মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমান। তারা কেউই নন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান বা কিপার-ব্যাটসম্যান।
অসাধারণ ক্যাচে ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ
মাহমুদউল্লাহর খোঁচা, উইকেটের পেছনে বাজপাখির মতো ছোবল দিয়ে ঋদ্ধিমান সাহার অসাধারণ ক্যাচ। বাংলাদেশের আরেকটি উইকেটের পতন।
ইশান্ত শর্মার অফ স্টাম্প ঘেষা বলটিতে ব্যাট পেতে দিলেন মাহমুদউল্লাহ। যখন বুঝলেন খেলা উচিত হনি, সরিয়ে নিলেন ব্যাট, ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে অনেক। ব্যাটের কানায় লেগে বল যাচ্ছিল প্রথম স্লিপের দিকে। নিচুও হয়ে গিয়েছিল অনেকটা। ঋদ্ধিমান শরীর পুরো শূন্যে ভাসিয়ে ডানদিকে ঝা!পিয়ে এক হাতে গ্লাভসে জমালেন বল।
আরও অনেক ভালো কিপার-ব্যাটসম্যান থাকার পরও ঋদ্ধিমানের ওপর ভরসা রেখেছে ভারত তার কিপিং সামর্থ্যের কারণে। সেটির প্রতিদান দিয়ে চলেছেন ঋদ্ধিমান।
মাহমুদউল্লাহ আউট হলেন ২১ বলে ৬ রান করে। ইশান্ত নিলেন দ্বিতীয় উইকেট। বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ৬০।
লিটন দাসের সঙ্গে উইেকটে এখন নাঈম হাসান।
ফিরলেন সাদমানও
উইকেট পতনের স্রোতে সামিল হলেন সাদমান ইসলামও। বাজে ফুটওয়ার্কে শেষ হলো বাঁহাতি ওপেনারের ইনিংস। তৃতীয় শিকার ধরলেন উমেশ যাদব।
অফ স্টাম্পে পিচ করা বল বেরিয়ে যাচ্ছিল বাইরে দিয়ে। ছেড়ে দেওয়া যেত অনায়াসেই। সাদমানের পা নড়ল না, কিন্তু নড়ল ব্যাট। বাইরের বল ডিফেন্স করতে গিয়ে ডেকে আনলেন নিজের পতন। উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচ নিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। ভারতীয় কিপারের এটি শততম ডিসমিসাল।
৫২ বলে ২৯ রানে ফিরলেন সাদমান। বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ৩৮।
পারলেন না মুশফিক
দলকে উদ্ধার করতে পারলেন না মুশফিকুর রহিমও। এই দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ফিরলেন দলকে আরও বিপদে ঠেলে। মোহাম্মদ শামির বল স্টাম্পে টেনে এনে বিদায় নিলেন শূন্য রানে।
অফ স্টাম্প লাইনে খানিকটা শর্ট অব লেংথ বলটি আলগা হাতে ডিফেন্স করেছিলেন মুশফিক। বল পিচ করে ভেতরে ঢোকে খানিকটা। মুশফিক ব্যাট পেতেছিলেন শরীর থেকে খানিকটা দূরে। তাতেই সর্বনাশ। বল ব্যাটের কানায় লেগে উইকেট পড়ে গিয়ে লাগে স্টাম্পে।
আগের টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিক এবার বিদায় নিলেন ৪ বলে শূন্য রানে। টেস্টে তার একাদশ শূন্য।
বাংলাদেশ বিপর্যস্ত শুরুতেই। দ্বাদশ ওভারে রান ৪ উইকেটে ২৬।
উড়ল মিঠুনের স্টাম্পস
মোহাম্মদ মিঠুন উইকেটে গেলেন এবং ফিরলেন! তিন বলের মধ্যে দুই উইকেট নিলেন উমেশ যাদব।
মুখোমুখি প্রথম বলটি বেশ আস্থায় ডিফেন্স করেছিলেন মিঠুন। পরের বলটিতে ঠিকঠাক করতে পারলেন না কিছুই। সিমে পিচ করে একটু ভেতরে ঢোকে বল। মিঠুন জোড়া পায়ে খেলতে গিয়ে যখন ব্যাট নামালেন, বল তার আগেই উড়িয়ে দিয়েছে স্টাম্প!
গতি ছিল ১৩৮ কিলোমিটার, খুব বেশি নয়। তবু খেলতে অনেক দেরি করলেন মিঠুন। বিদায় নিলেন ২ বলে শূন্য রান করে।
বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ১৭।
মুমিনুল শূন্য
দলকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারলেন না মুমিনুল হকও। বাংলাদেশ অধিনায়ক শূন্য রানে ফিরলেন স্লিপে রোহিত শর্মার অসাধারণ ক্যাচে।
নতুন স্পেলে ফেরা উমেশ যাদবের প্রথম ডেলিভারি সেটি। পিচ করে বল বেরিয়ে যাচ্ছিল অ্যাঙ্গেলে। মুমিনুল পেতে দিলেন ব্যাট। লাইন কাভার করেননি, বল তার ব্যাটের কানায় লেগে যায় স্লিপে বিরাট কোহলির দিকে। ভারতীয় অধিনায়ক প্রথম স্লিপে অপেক্ষা করছিলেন বল তার হাতে আসার। কিন্তু দ্বিতীয় স্লিপ থেকে ফুল লেংথ ডাইভ দিয়ে দুর্দান্ত রিফ্লেক্সে বল এক হাতে তালুবন্দী করলেন রোহিত।
টেস্ট ক্যারিয়ারে সপ্তমবার শূন্য রানে ফিরলেন মুমিনুল। বাংলাদেশ ২ উইকেটে ১৭।
রিভিউ হারাল ভারত
শামির দ্বিতীয় বলেই আরেক দফা বাজেভাবে পরাস্ত সাদমান। উইকেটের পেছনে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে অসাধারণভাবে বল গ্লাভসে জমালেন ঋদ্ধিমান সাহা। ভারতের জোরালো আবেদনে সাড়া দিলেন না আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস। বিরাট কোহলি নিলেন রিভিউ।
রিভিউয়ে দেখা গেল, সাদমানের ব্যাটের কাছাকাছিও ছিল না বল। শব্দ একটি হয়েছিল বটে, সেটি অন্য কিছু থেকে। ভারত হারাল একটি রিভিউ। সাদমানের রান তখন ১০।
অল্পের জন্য রক্ষা সাদমানের
মোহাম্মদ শামির প্রথম বলেই আউট হতে হতে বেঁচে গেলেন সাদমান ইসলাম। শামির শর্ট বলটি হয়তো বুঝতেই পারেননি সাদমান, খেলতে পারেননি ঠিকমতো। পজিশনেই যেতে পারেননি। বল তার বাড়িয়ে ধরা ব্যাটে লেগে বাতাসে ছিল বেশ কিছুক্ষণ। তবে কোনো ফিল্ডার বলের কাছে যেতে পারেননি সময় মতো।
আবার ব্যর্থ ইমরুল
একই ওভারে আবার ইমরুল কায়েসকে আউট দিলেন আম্পায়ার। এবার এলবিডব্লিউ। সাদমানের সঙ্গে পরামর্শ করে ইমরুল রিভিউ নিলেন আবার। তবে এবার রক্ষা হলো না। আউট হলেন ইমরুল, বাংলাদেশ হারাল একটি রিভিউও।
সুইং খুব বেশি না পাওয়ায় হয়তো ইশান্ত চেষ্টা করছেন কাটার করার। রাউন্ড দা উইকেটে করা বলটি অনেকটা শাফল করে খেলতে চেষ্টা করেছিলেন ইমরুল। কিন্তু বল পিচ করে ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে আরেকটু ভেতরে ঢুকে লাগে পায়ে। খালি চোখেই মনে হচ্ছিল আউট, রিভিউয়ে সেটিই নিশ্চিত হয়েছে।
১৫ বলে ৪ রান করে আউট হলেন ইমরুল। বাংলাদেশ ৬.৩ ওভারে ১ উইকেটে ১৫।
সাদমানের সঙ্গে উইকেটে যোগ দিয়েছেন মুমিনুল হক।
রিভিউয়ে টিকলেন ইমরুল
ইশান্ত শর্মার বলে ইমরুল কায়েসকে কট বিহাইন্ড দিয়েছিলেন আম্পায়ার জোয়েল উইলসন। ইমরুল রিভিউ নেন সঙ্গে সঙ্গেই। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, ব্যাট স্পর্শ করেনি বল। তবে ইমরুলের থাই প্যাডে লাগায় শব্দ হয়েছিল, সেটিই হয়তো বিভ্রান্ত করেছিল আম্পায়ারকে।
ইমরুলের রান তখন ৪।
সতর্কতায় শুরু
যতটা ধারণা করা হয়েছিল, ততটা সুইং মিলছে না গোলাপি বলে। ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটেও গতি ও বাউন্স খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। ভারতের নতুন বলের দুই বোলার ইশান্ত শর্মা ও উমেশ যাদবকে তাই খুব ভয়ঙ্কর মনে হচ্ছে না শুরুতে। বাংলাদেশের দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও সাদমান ইসলাম শুরু করেছেন বেশ সতর্কতায় ও নির্ভরতায়।
গোলাপি বলের টেস্টে প্রথম রান এসেছে ইমরুলের ব্যাট থেকে। প্রথম বাউন্ডারি মেরেছেন সাদমান ইসলাম, চতুর্থ ওভারে। উমেশ যাদবের ওই ওভারেই দারুণ পুলে সাদমান বাউন্ডারি মেরেছেন আরেকটি।
৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৪। সাদমানের রান ১০, ইমরুলের ৪।
বাজল শুরুর ঘণ্টা
গোলাপি বলের টেস্ট ম্যাচের জন্য ইডেন গার্ডেন্সের ঘণ্টাকেও সাজানো হয়েছে বিশেষভাবে। সেই ঘণ্টা বাজানোর দায়িত্বেও ছিলেন বিশেষ দুজন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘণ্টা বাজিয়ে ছড়িয়ে দিলেন টেস্ট শুরুর বার্তা। দুইজনের পাশে ছিলেন ভারত ও বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের দুই প্রধান সৌরভ গাঙ্গুলি ও নাজমুল হাসান।
মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
মাঠে দেখা গেল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাদের সঙ্গে ছিলেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারকেও।
দুই দলের সঙ্গে পরিচিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে বেশ কিছু সময় কথা বলতেও দেখা গেল তাকে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে শুক্রবার সকালে কলকাতায় উড়ে গেছেন শেখ হাসিনা। ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের নতুন সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীও তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
একই দল নিয়ে ভারত
আগের ম্যাচে তিন দিনেই জয় পাওয়া একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেনি ভারত। তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়েই খেলছে বিরাট কোহলির দল।
ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, চেতেশ্বর পুজারা, বিরাট কোহলি, অজিঙ্কা রাহানে, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋদ্ধিমান সাহা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ শামি, উমেশ যাদব। |
একাদশে আল আমিন, নাঈম
বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তন দুটি। অনুমিতভাবেই তিন পেসার নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের জায়গায় একাদশে এসেছেন আল আমিন হোসেন। ২০১৪ সালের অক্টোবরের পর আবার টেস্ট খেলার সুযোগ পেলেন এই পেসার।
আরেকটি পরিবর্তন স্পিন বিভাগে। দলের একমাত্র স্পিনার হিসেবে এই টেস্টে খেলছেন অফ স্পিনার নাঈম হাসান। বাদ পড়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
বাংলাদেশ একাদশ: ইমরুল কায়েস, সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস, নাঈম হাসান, আবু জায়েদ চৌধুরি, ইবাদত হোসেন, আল আমিন হোসেন। |
বিশেষ মুদ্রা, টসে হাসি বাংলাদেশের
ভারতে প্রথম দিন-রাতের টেস্টের টস হলো বিশেষভাবে তৈরি এক মুদ্রায়। সাধারণ মুদ্রার বেশ বড় আকারের রূপার মুদ্রা এটি। সেই টসে জিতলেন মুমিনুল হক। বাংলাদেশ অধিনায়ক জানালেন, ব্যাটিং করবে বাংলাদেশ।
মুমিনুলের মতে, ঘাসের ছোঁয়া থাকলেও উইকেট বেশ শুষ্ক এবং খানিকটা শক্তও। ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো হওয়ার কথা। শুরুতে যদিও চ্যালেঞ্জ থাকবে। তবে হাসিমুখে মুমিনুল বললেন, “সাহসী সিদ্ধান্ত, সাহসিকতার সঙ্গেই খেলতে হবে।”
টস জিতলে ভারতও আগে ব্যাটিং করত, জানালেন বিরাট কোহলি। তার ধারণা, প্রথম দুই সেশনে স্পিনারদের বড় ভূমিকা থাকবে। সেদিকেই তাকিয়ে ভারত অধিনায়ক।
উইকেটে সবুজের ছোঁয়া
ইডেনের উইকেটে ৫ মিলিমিটার পর্যন্ত ঘাস রেখে দিয়েছেন কিউরেটর সুজন মুখার্জি। গত ৪-৫ বছর ধরেই অবশ্য এই মাঠে সব টেস্টে উইকেটে একটু ঘাস নেখে দেওয়া হয়। টিভির পিচ রিপোর্টে কলকাতার সন্তান, সাবেক ক্রিকেটার দীপ দাসগুপ্ত জানালেন, “উইকেটে কিছুটা ঘাস থাকলেও তা খুব বেশি নয়। বরং বিশ্বের নানা প্রান্তে অন্যান্য দিন-রাতের টেস্টের উইকেটে ঘাস আরও বেশি রাখা হয়। শুরুতে কিছুটা শুষ্কও থাকবে উইকেট।”
টিভির বিশ্লেষণে ভিভিএস লক্ষ্ণণ বললেন, উইকেটে আরও ঘাস আশা করেছিলেন তিনি। টস জিতলে ব্যাটিং নেওয়ার পক্ষেই মত তার।
২২ গজের চ্যালেঞ্জ
এই ম্যাচকে ঘিরে নানা আয়োজনের ভিড়ে ২২ গজের লড়াই অনেকটা আড়ালেই চলে গেছে। তবে আদতে লড়াই জমবে কতটা, সেই শঙ্কাও আছে। প্রথম টেস্টে স্রেফ উড়ে গেছে বাংলাদেশ। দুই দলের শক্তির পার্থক্যও ফুটে উঠেছে প্রবলভাবে। দ্বিতীয় টেস্টে গোলাপি বলে আরও কঠিন পরীক্ষা। বাংলাদেশের জন্য আশার জায়গা তাই খুব কম।
টেস্টের প্রথম চার দিনের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সৌরভ গাঙ্গুলি। তবে ম্যাচ আদৌ চতুর্থ দিনে গড়াবে কিনা, সেটি নিয়ে সংশয়ের কারণ আছে যথেষ্টই।
নানা আয়োজন
ভারতের মাটিতে প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট স্মরণীয় করে রাখতে আয়োজন করা হচ্ছে নানা কিছু। মূলত ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল ও বিসিসিআইয়ের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির উদ্যোগেই এই টেস্টকে ঘিরে তৈরি হয়েছে উৎসবের আবহ।
২০০০ সালে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে খেলা সব ক্রিকেটারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদেরকে দেওয়া হবে বিশেষ সম্মাননা।
ম্যাচে উপস্থিত থাকছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাও বাজাবেন তারা। উপস্থিত থাকবেন দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড প্রধান, ভারতীয় কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারসহ আরও অনেকে।
ম্যাচের টস করা হবে বিশেষভাবে তৈরি এক মুদ্রা দিয়ে।
ম্যাচে লাঞ্চ ও চা বিরতিতে টিভিতে বিশ্লেষণ করবেন টেন্ডুলকার, রাহুল দাবিড়, অনিল কুম্বলে, কপিল দেবসহ ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটাররা। দিনশেষে থাকবে রুনা লায়না, জিৎ গাঙ্গুলির পারফরম্যান্স।
ইতিহাসের উপলক্ষ্য
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের শুরুটায় জড়িয়ে আছে ভারত। ১৯ বছর আগে বাংলাদেশ নিজেদের অভিষেক টেস্টের প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছিল ভারতকে। এবার ভারতের একটি নতুন শুরুতে জুড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নাম। ভারতের মাটিতে প্রথম দিন-রাতের টেস্টে খেলছে বাংলাদেশ।
ভারত প্রথম টেস্ট খেলেছিল ১৯৩৩ সালে, মুম্বাইয়ের জিমখানা গ্রাউন্ডে। দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি তারা খেলেছিল ১৯৩৪ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে। সেই ইডেন এবার স্বাক্ষী হচ্ছে ভারতের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট ম্যাচের। বাংলাদেশেরও এটি কৃত্রিম আলোয় প্রথম টেস্ট।
নবীন দুই টেস্ট দল, আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ড ছাড়া এতদিন কেবল ভারত ও বাংলাদেশই খেলেনি দিন-রাতের টেস্ট। এবার ঘুচে যাচ্ছে সেই বন্ধাত্ব।
ভারতের এটি ৫৪০তম টেস্ট, বাংলাদেশের ১১৭তম।