ঢাকা ০৬:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুলিবিদ্ধ পা নিয়ে কাতড়াচ্ছেন ঝিনাইদহের হাফেজ রফিক

Reporter Name

সবুজদেশ ডেস্কঃ

টাকার অভাবে তুলোর পরিবর্তে তোষকের তুলো দিয়ে পায়ের পুজ মুছছেন হাফেজ রফিকুল ইসলাম। অকেজো পা নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি হাসপাতালের বেডে কাতড়াচ্ছেন তিনি।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আক্রান্ত পা কেটে কৃত্রিম পা সংযোজন করতে হবে তার।

কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসার খরচ চালোনো তো দূরের কথা পরিবারের খাবারের যোগান দেয়ার সামর্থ নেই এই হাফেজের।

হাফেজ রফিকুল ইসলামের করুণ অবস্থা স্বচক্ষে দেখে তার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাইমুম সাদী নামের এক ব্যক্তি।

সাইমুম সাদীর সেই ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু দেয়া হলো-

‘কথা বলতে গিয়ে বারবার চোখের পানি মুছছিলেন হাত দিয়ে। হৃদয়বিদারক কাহিনী শুনে আমরাও আবেগাপ্লুত হলাম।

এই মানুষটির নাম হাফেজ রফিকুল ইসলাম। ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের শাস্তির দাবীতে ঝিনাইদহ থেকে এসেছিলেন শাপলায় হেফাজতের ডাকে। কিন্তু সেই কালো রাতে তিনি আহত হন মারাত্মকভাবে।

রাত তিনটের দিকে শাপলা চত্বরে গুলিবিদ্ধ হন হাফেজ রফিকুল ইসলাম। জামেয়া রাহমানিয়া ও লালবাগের কয়েকজন ছাত্র তাকে পৌঁছে দেন ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালে। হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যখন বাড়িতে গেলেন তখন তার পায়ে যন্ত্রণা খুব বেশি।

তারপরের কাহিনী খুবই বেদনাদায়ক। এই গবিব ইমাম সাহেবের চাকরি চলে যায় যেহেতু তিনি আহত। দুই মেয়ে এবং মা-বাবা ও স্ত্রীর সংসারে তিনিই ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। কোনো উপার্জন নেই। কিভাবে এতগুলো মানুষের মুখের খাবাব জোগাড় করবেন আর কিভাবে নিজের চিকিৎসার খরচ যোগাবেন দিশেহারা হয়ে পড়েন।

খুব স্বাভাবিক কারণে দিনের পর দিন উপোস থাকতে শুরু করে এই ফ্যামিলি। হাফেজ রফিক চিকিৎসার জন্য গুলিবিদ্ধ পা টেনে টেনে কখনো ঢাকা আবার কখনো হাটহাজারী মাদ্রাসা কখনো অন্যান্য জায়গায় ঘুরতে থাকেন। যার সঙ্গেই কথা হয় সামান্য টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। কিন্তু স্থায়ীভাবে চিকিৎসার জন্য যে পরিমাণ টাকার দরকার তা জমা হয় না।

কয়েকদিন আগে হাফেজি হুজুর সেবা সংস্থার চেয়ারম্যান মাওলানা রজীবুল হক ওই অঞ্চলে সফরে গিয়ে জানতে পারলেন একজন হাফেজে কুরআন আহত হয়ে বিছানায় পড়ে আছেন। তিনি দেখলেন, তার পা পচে গেছে এবং টাকার অভাবে মেডিসিন তুলোর পরিবর্তে তোষকের তুলা দিয়ে পুজ মুছছেন এই ভাই। তিনি তাৎক্ষণিক কিছু সাহায্য দিয়ে আসলেন।

কিন্তু স্থায়ী চিকিৎসা অর্থের অভাবে করতে পারেননি এই হাফেজ সাহেব। সর্বশেষ ডাক্তার জানাল, পা পচে গেছে বেশিরভাগ। পা কেটে ফেলতে না পারলে শরীরেও পচন শুরু হতে পারে। বাধ্য হয়ে তাই চলে এলেন ঢাকায়।

মোহাম্মদপুরে একটি হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাদলেন কিছুক্ষণ। খোঁজ নিয়ে জানলাম, পা কাটা এবং নতুন কৃত্রিম পা সংযোজন করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু এই মজলুম হাফেজে কুরআনের সেই সামর্থ্য নেই।

আপনাদের কাছে শেয়ার করি সুখ দুঃখ। এই অসহায় হাফেজে কুরআনের জন্য যদি আমরা সবাই কিছু করি তাহলে একটা মানুষ এবং একটা ফ্যামিলির মুখে হাসি ফুটবে। ’

স্ট্যাটাসের শেষে হাফেজ রফিকুল ইসলামকে সাহায্যার্থে তার ফোন ও বিকাশ নম্বর দেন সাইমুম সাদী। নম্বরটি হলো – 01861736578

https://www.facebook.com/symum.sadi/posts/10221711599803544

About Author Information
আপডেট সময় : ০৩:২৬:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২০
৪৪৭ Time View

গুলিবিদ্ধ পা নিয়ে কাতড়াচ্ছেন ঝিনাইদহের হাফেজ রফিক

আপডেট সময় : ০৩:২৬:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জানুয়ারী ২০২০

সবুজদেশ ডেস্কঃ

টাকার অভাবে তুলোর পরিবর্তে তোষকের তুলো দিয়ে পায়ের পুজ মুছছেন হাফেজ রফিকুল ইসলাম। অকেজো পা নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে একটি হাসপাতালের বেডে কাতড়াচ্ছেন তিনি।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আক্রান্ত পা কেটে কৃত্রিম পা সংযোজন করতে হবে তার।

কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসার খরচ চালোনো তো দূরের কথা পরিবারের খাবারের যোগান দেয়ার সামর্থ নেই এই হাফেজের।

হাফেজ রফিকুল ইসলামের করুণ অবস্থা স্বচক্ষে দেখে তার প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন সাইমুম সাদী নামের এক ব্যক্তি।

সাইমুম সাদীর সেই ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবহু দেয়া হলো-

‘কথা বলতে গিয়ে বারবার চোখের পানি মুছছিলেন হাত দিয়ে। হৃদয়বিদারক কাহিনী শুনে আমরাও আবেগাপ্লুত হলাম।

এই মানুষটির নাম হাফেজ রফিকুল ইসলাম। ইসলামবিদ্বেষী ব্লগারদের শাস্তির দাবীতে ঝিনাইদহ থেকে এসেছিলেন শাপলায় হেফাজতের ডাকে। কিন্তু সেই কালো রাতে তিনি আহত হন মারাত্মকভাবে।

রাত তিনটের দিকে শাপলা চত্বরে গুলিবিদ্ধ হন হাফেজ রফিকুল ইসলাম। জামেয়া রাহমানিয়া ও লালবাগের কয়েকজন ছাত্র তাকে পৌঁছে দেন ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালে। হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যখন বাড়িতে গেলেন তখন তার পায়ে যন্ত্রণা খুব বেশি।

তারপরের কাহিনী খুবই বেদনাদায়ক। এই গবিব ইমাম সাহেবের চাকরি চলে যায় যেহেতু তিনি আহত। দুই মেয়ে এবং মা-বাবা ও স্ত্রীর সংসারে তিনিই ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। কোনো উপার্জন নেই। কিভাবে এতগুলো মানুষের মুখের খাবাব জোগাড় করবেন আর কিভাবে নিজের চিকিৎসার খরচ যোগাবেন দিশেহারা হয়ে পড়েন।

খুব স্বাভাবিক কারণে দিনের পর দিন উপোস থাকতে শুরু করে এই ফ্যামিলি। হাফেজ রফিক চিকিৎসার জন্য গুলিবিদ্ধ পা টেনে টেনে কখনো ঢাকা আবার কখনো হাটহাজারী মাদ্রাসা কখনো অন্যান্য জায়গায় ঘুরতে থাকেন। যার সঙ্গেই কথা হয় সামান্য টাকা হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। কিন্তু স্থায়ীভাবে চিকিৎসার জন্য যে পরিমাণ টাকার দরকার তা জমা হয় না।

কয়েকদিন আগে হাফেজি হুজুর সেবা সংস্থার চেয়ারম্যান মাওলানা রজীবুল হক ওই অঞ্চলে সফরে গিয়ে জানতে পারলেন একজন হাফেজে কুরআন আহত হয়ে বিছানায় পড়ে আছেন। তিনি দেখলেন, তার পা পচে গেছে এবং টাকার অভাবে মেডিসিন তুলোর পরিবর্তে তোষকের তুলা দিয়ে পুজ মুছছেন এই ভাই। তিনি তাৎক্ষণিক কিছু সাহায্য দিয়ে আসলেন।

কিন্তু স্থায়ী চিকিৎসা অর্থের অভাবে করতে পারেননি এই হাফেজ সাহেব। সর্বশেষ ডাক্তার জানাল, পা পচে গেছে বেশিরভাগ। পা কেটে ফেলতে না পারলে শরীরেও পচন শুরু হতে পারে। বাধ্য হয়ে তাই চলে এলেন ঢাকায়।

মোহাম্মদপুরে একটি হাসপাতালে তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাদলেন কিছুক্ষণ। খোঁজ নিয়ে জানলাম, পা কাটা এবং নতুন কৃত্রিম পা সংযোজন করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু এই মজলুম হাফেজে কুরআনের সেই সামর্থ্য নেই।

আপনাদের কাছে শেয়ার করি সুখ দুঃখ। এই অসহায় হাফেজে কুরআনের জন্য যদি আমরা সবাই কিছু করি তাহলে একটা মানুষ এবং একটা ফ্যামিলির মুখে হাসি ফুটবে। ’

স্ট্যাটাসের শেষে হাফেজ রফিকুল ইসলামকে সাহায্যার্থে তার ফোন ও বিকাশ নম্বর দেন সাইমুম সাদী। নম্বরটি হলো – 01861736578

https://www.facebook.com/symum.sadi/posts/10221711599803544