সুন্দরবনের মধ্যে মামলা দিয়ে বন্ধ করা ৫ করাত কল ফের চালু
বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের শরণখোলার সাউথখালীতে বন আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আবার চালু মামলা দিয়ে বন্ধ করে দেয়া সেই পাঁচটি করাত কল (স’মিল)। সুন্দরবন থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে এই করাত কলগুলো বসানোয় গত ৩১ডিসেম্বর উপজেলা প্রশাসন ও সুন্দরবন বিভাগ যৌথ অভিযান চালিয়ে এগুলো বন্ধ করে দেয়।
বাগেরহাটের পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের পক্ষ হতে তখন ওই পাঁচ করাতকল মালিকের বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দেয়ার পর করাত কলগুলো কিছুদিন বন্ধ ছিল। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় আইনকে চ্যালেঞ্জ করে আবার পুরোদমে কাঠ চেরাই শুরু করেছে ওই সকল অবৈধ মিল মালিকরা। কিন্তু কোন অদৃশ্য ক্ষমতায় মিলগুলো আবার চালু হলো এ নিয়ে কৌতহল সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশ সচেতন মহলে।
মামলা হওয়া করাত কল মালিকরা হলেন, বকুলতলা গ্রামের শামসুল হক মাস্টার, নূরুল হক আড়ৎদার, আ. গণি হাওলাদার, তাফালবাড়ি এলাকার আলাউল ইসলাম সেলিম ও ফারুক হোসেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, স’মিল মালিকরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। সুন্দরবনের চার-পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে প্রশাসনের নাকের ডগায় এই মিলগুলো বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তারা বিভিন্ন কাঠ চেরাই করে আসছে। মামলা হওয়া সত্বেও তারা থেমে নেই। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান তারা।
বকুলতলা এলাকার মিল মালিক আ. গণি হাওলাদার বলেন, আমরা কিছুদিন গোপনে চালিয়ে ছিলাম। এখন বন্ধ রয়েছে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসএিফ) মো. জয়নাল আবেদীন জানান, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের দশ কিলোমিটারের মধ্যে করাত কল বা কোনোপ্রকার মিল,কলকারখানা স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবুও শরণখোলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বেশ কিছু করাত কল বসিয়ে কাঠ চেরাই করে আসছে। সম্প্রতি পাঁচটি করাত কলে অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার পরও তারা আইন অমান্য করে মিলগুলো চালু করেছে। এব্যাপারে শিগগিরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, মিলগুলো বন্ধ করে মামলা দেওয়ার পরও ফের চালু করায় তারা আইনকে অবজ্ঞা করেছে। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।