নড়াইলে করোনা উপসর্গ নিয়ে যুবকের মৃত্যু, মা ও ভাইও অসুস্থ
নড়াইলঃ
নড়াইলে শ্বাসকষ্টসহ অন্য কিছু উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারী শওকত আলীর (২৫) শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা যায়নি। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, স্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে বিধায় কোনো নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি।
মৃতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শওকতের শরীরে এক সপ্তাহ ধরে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, গা ব্যথা দেখা দেয়। এরপর ঢাকায় করোনাসংক্রান্ত হটলাইনে ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। স্থানীয়ভাবে ডাক্তার দেখিয়ে অবস্থার কোনো উন্নতি না হওয়ায় মঙ্গলবার রাত পৌনে নয়টার দিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং এর ১৫ মিনিট পরই তার মৃত্যু হয়। শওকতের মৃত্যুর পর পরই লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং রাতেই তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন মৃতের মা রেবেকা বেগম (৫০) এবং মৃতের ভাই মোহাম্মদ আলী (১৮) প্রায় একই ধরনের উপসর্গে অসুস্থ হয়ে বাড়ি রয়েছেন।
সদর হাসপাতালে ডিউটিরত মেডিকেল অফিসার ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, রোগী শ্বাসকষ্ট ও বমির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হন।
সদর থানার ওসি মো. ইলিয়াস হোসেন জানান, বুধবার সকাল নয়টার দিকে জেলা প্রশাসন এবং থানা পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে লাল পতাকা টানিয়ে বাড়ি লকডাউন করেছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাড়ির বাইরে না আসতে মাইকিং করা হয়েছে।
এ রোগীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুস শাকুর বলেন, ‘করোনা নয়, স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে নমুনা সংগ্রহের ব্যাপারে সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছিল। পরে কী হয়েছে তা জানি না।’
নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল মোমেন বলেন, ঢাকা আইইডিসিআর-এর প্রতিনিধির সাথে রোগির মৃত্যুর বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে কথা হলে তারা জানিয়েছেন এ রোগী স্ট্রোকে মারা গেছে। সেজন্য মৃতের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। তবে মৃতের পরিবারকে লকডাউনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, স্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে। তারপরও ওই এলাকায় বাড়তি সর্তকতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি করোনা প্রতিরোধে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।
এদিকে, শওকতের মৃত্যুর ঘটনা ছড়িয়ে পড়ায় গোটা শহরে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন পেশার মানুষ নানা মন্তব্য করেছেন। তার শরীরে করোনাভাইরাস ছিল কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
অতিরিক্ত পিপি এ্যাডভোকেট আলমগীর সিদ্দিকী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ভাই মো. শাহাজান মোল্যাকে শ্বাসকষ্ট ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যার জন্য সদর হাসপাতালে নেওয়া হলেও ভর্তি না করে অন্যত্র যেতে পরামর্শ দেন। অন্যান্য রোগীদের সাথেও ডাক্তাররা খারাপ আচরণ করছেন। এতে সব ধরনের রোগী হাসপাতাল ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাতে নড়াইলের চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। সাধারণ জনগণ পড়েছে বিপাকে।’