সোমবার সকাল ছয়টা থেকে যশোর লকডাউন
যশোরঃ
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে যশোর জেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। এই পর্যন্ত জেলায় চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীসহ ৩০জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।
রোববার বিকেলে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ বলেন, সোমবার সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যশোর জেলা লকডাউন করা হয়েছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঘরের বাইরে না বের হওয়ার অনুরোধ করছি।
যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, রোববার পর্যন্ত যশোর জেলায় ৩০জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে দুইজন চিকিৎসক, ৮জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৬জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বাকীদের বাড়িতে রেখেই চলছে চিকিৎসা।
এদিকে, রোববার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) করোনা ভাইরাস পরীক্ষায় আরও ২৭ রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। চার জেলার ৬৬টি নমুনা পরীক্ষা করে এই ২৭জন রোগী শনাক্ত করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যশোর জেলায় ১৪জন। শনিবার পরীক্ষা শেষে রোববার সকালে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে যবিপ্রবি’র জিনোম সেন্টারে ৬৪জন করোনা রোগী শনাক্ত হলো।
যবিপ্রবি জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক ও অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. ইকবাল কবীর জাহিদ জানান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে শনিবার ৮ম দিনে চার জেলার ৬৬জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৭ জন কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি যশোর জেলায় ১৪জন রোগী। ৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এই রোগী শনাক্ত হয়। এছাড়া ঝিনাইদহ জেলার ১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮জন করোনারোগী পাওয়া গেছে। আর নড়াইলের ৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩জন এবং মাগুরার ৫জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন।
এর আগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে শুক্রবার ৭ম দিনের নমুন পরীক্ষায় ১২ জন কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী শনাক্ত হন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল যশোর জেলায় ৯জন রোগী। এছাড়া ঝিনাইদহ জেলায় ২জন ও নড়াইলে ১জন করোনা রোগী শনাক্ত হন। এদিন ৫ জেলা থেকে ৯৫টি নমুনা পাঠানো হয়েছিল।
বুধবার ৬ষ্ঠ দিনের নমুনা পরীক্ষায় ১২ জন কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী শনাক্ত হন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৬জন রোগী। এছাড়া যশোরে ২জন, কুষ্টিয়ায় ২জন, মেহেরপুরে ১জন ও মাগুরায় একজন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। বুধবার ৭ জেলা থেকে ৮৪টি নমুনা পাঠানো হয়েছিল। এদের মধ্যে থেকে পরীক্ষার পর ওই রোগী শনাক্ত হয়েছে।
আর মঙ্গলবার ৫ম দিনে যবিপ্রবি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জন কোডিভ-১৯ পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল নড়াইলে ৫জন। এদের মধ্যে ৪জন চিকিৎসক ছিলেন। এছাড়া যশোরে ৪জন, কুষ্টিয়ায় ২জন, মাগুরা ও মেহেরপুরে ১জন করে করোনা রোগী সনাক্ত হয়। সবমিলিয়ে এখানে মোট ৬৪জন রোগী শনাক্ত হলো।
ফলে এ পর্যন্ত যশোরে ৩০ জন, ঝিনাইদহে ১০ জন, নড়াইলে ৯ জন, চুয়াডাঙ্গায় ৬ জন, মাগুরা ও কুষ্টিয়ায় ৪জন করে, এবং মেহেরপুরে দু’জন রোগী শনাক্ত হলো। যবিপ্রবিতে ৭টি জেলার নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে।