তরমুজ কিনতে ভীড়, করোনা আতঙ্কে এলাকাবাসী
খুলনা প্রতিনিধিঃ
খুলনা জেলার দাকোপ উপজেলাধীন বাজুয়া এলাকার তরমুজ দেশের সেরা স্বাদের তরমুজ হিসাবে খ্যাত। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে এবার ১৭০০ হেক্টর জমিতে এ তরমুজ চাষ করা হয়েছে।
কিন্তু যারা তরমুজ কিনতে যাচ্ছেন, তারা কোন পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই অবাধে ঘুরছেন এলাকায়। অভিযোগ উঠেছে, অর্থের বিনিময়ে চিকিৎসা সনদ জোগাড় করে নিয়েছেন অনেকেই। এতে করোনা আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছেন এলাকাবাসী।
এলাকায় ঘুরে জানা যায়, করোনার কারনে তরমুজ বিক্রি হবে কি না এমন আশঙ্কায় ভুগছিলেন কৃষকরা। তরমুজের ভাল ফলন হলেও করোনার কারনে শেষ পর্যন্ত ফসল বিক্রি করতে পারবেন কি না? ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা এলাকায় ডুকতে পারবে কি না? কিন্তু পর্যন্ত গত ৩দিন যাবৎ নৌপথে ও সড়কপথে পিরোজপুর, নাজিরপুর, সরুপকাটিসহ বিভিন্ন এরাকার শত শত নৌকা, ট্রাক এসে জড়ো হয়েছে বাজুয়া এলাকার বিভিন্ন তরমুজ ক্ষেতের আশপাশে। ক্রেতারা দলে দলে ঘুরে ঘুরে ক্ষেত দেখছে, দরাদরি করে ক্ষেত ধরেই বিক্রি করছে তরমুজ। তবে দালাল ব্যতিত কোন কাজই হচ্ছে না।
মেডিকেল সার্টিফিকেট, ফেরি পারাপার থেকে শুরু করে তরমুজ কেনাবেচা সকল কাজেই দালালের দৌরাতœ বৃদ্ধি পেয়েছে। দালালে ছেয়ে গেছে দাকোপের অফিস থেকে মাঠ পর্যন্ত। করোনার প্রটেকশনের কোন বাছবিচার নেই কারও।
এভাবে অবাধে বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত ট্রাক নৌকা নিয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ অনায়াসে ঢুকে কেনাকাটা ও অবাধ বিচরন, দালাল ও তরমুজক্ষেত মালিকরাসহ শত শত মানুষ মিলেমিশে দিবারাত ঘোরাফেরা করায় এলাকার সাধারন মানুষ আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে। কোন সামাজিক দূরত্ব দূরের কথা অধিকাংশ শ্রমিক মাস্ক পর্যন্ত নেই।
এ ব্যাপারে তরমুজ চাষী কিরন চন্দ্র মন্ডর, সুকুমর রায়, নিরাঞ্জন রায় বলেন, আমরা খুশি যে বাইরের শত শত খরিদ্দার আমাদের কাছে এসেছে তবে দালালদের কারনে সরাসরি দামদর করতে পারছি না। কিন্তু তারা কেউ করোনা আক্রান্ত কি না তা জানি না।
চিকিৎসা সনদ এত দ্রুত কিভাবে দিলেন আর কিভাবে বুঝলেন এত ট্রাক ড্রাইভারের করোনার কোন লক্ষন নেই জবাবে দাকোপ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর প্রধান স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডা: মোজাম্মেল হক বলেন, এদের পরীক্ষা করে তরমুজের ক্ষেত এলাকায় ডুকাতে গেলে সেটা বেশ সময় সাপেক্ষ ব্যাপার তাই জ্বর কাশি আছে কিনা ওদের কাছে জেনে প্রত্যায়নপত্র দিয়েছি। অতসব দেখতে গেলে এরা ঢুকতে পারতো না।
তিনি বলেন, দাকোপ থেকে অনেক লোক ধান কাটতে গোপালগঞ্জ যাচ্ছে তাদেরও প্রত্যায়ন পত্র না দিলে যেতে পারবে না, ধরাধরির কারনে দিতে বাধ্য হচ্ছি।
দাকোপ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান বিনয় কৃষ্ণ রায় বলেন, এপারের অবস্থা খারাপ বরগুনা, পিরোজপুর, নাজিরপুর এরাকার লোক অবাধে ডুকে পড়েছে, আজ ২জনকে ধরেছিলাম কাগজ দেখাতে পারেনি পরে মোটরসাইকেল দ্রুত চালিয়ে কেটে পড়ে।
তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত ছিল ৮ টন ধারন ক্ষমতার ট্রাক ও ড্রাইভা পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে শুধু ডুকতে পারবে এখন কোন বাছবিচার দেখতে পাচ্ছি না। উল্লেখ্য দাকোপের বাজুয়া এলাকায় ১৭০০ হেক্টর জমিতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার তরমুজ কেনাবেচা হবে ।