ঢাকা ০৭:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহবাসী আগে কখনো ঝড়ের এমন তান্ডব দেখেনি

Reporter Name

ঝিনাইদহঃ

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন গ্রাম। গ্রামের পর গ্রাম আম বাগান, মেহগনি বাগান উপড়ে গেছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কলা বাগানের। এর আগে ঝড়ের এমন তাণ্ডব দেখেনি ঝিনাইদহের মানুষ।

মহেশপুর থানার ফতেপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ৬৫ বছরের ছাহেরা বেগম বলেন, ‘জীবনে অনেক ঝড় দেখেছি। এমন ঝড় আগে কখনও দেখিনি। মানুষের আম গাছ, মেহগনি গাছ উপড়ে গেছে অথবা ভেঙে গেছে। মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ অঞ্চলে আগে কখনও এভাবে ঝড়ে গাছপালা উপড়ে পড়েনি।’

একই ইউনিয়নের হারুন আবু নামের ৩০ বছরের এক যুবক বলেন, ‘মাঠের পর মাঠ কলা বাগান শেষ। আম বাগান, কাঁঠাল বাগান, মেহগনি বাগান-সব উপড়ে অথবা ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ঝড়ের এমন তাণ্ডব আমাদের অঞ্চলের মানুষ এর আগে কখনও দেখেনি। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে, তার ছিঁড়ে পড়ে আছে।’

তিনি বলেন, ‘ঝিনাইদহ জেলা উঁচু অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এ অঞ্চলে সাধারণত বন্যা দেখা যায় না। বড় ধরনের ঝড় দেখা যায় না। কিন্তু আম্ফান বুধবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়েছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’

ঝিনাইদহ সদর থানার গান্না ইউনিয়নের বাসিন্দা মোয়াজ্জেম। ৫৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তি বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঝড়ের যে তাণ্ডব দেখেছি তাতে বেঁচে আছি-এটাই বড় কথা। রাতভর গভীর আতঙ্কে কাটিয়েছি। মাঠের সব কলা বাগান শেষ। আম গাছ, কাঁঠাল গাছ, নিম গাছ, মেহগনি গাছ সব উপড়ে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে মানুষ এখন অনেক কষ্টে রয়েছে। নিম্নআয়ের মানুষের কাজ নেই। এ পরিস্থিতিতে ঝড়ের তাণ্ডবে মাঠের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল। এতে নিম্নআয়ের মানুষের কষ্ট আরও বেড়ে যেতে পারে।’

কালীগঞ্জ থানার ফয়লা ইউনিয়নের ৪৫ বছরের তোহিদ বলেন, ‘ঝড় যে এমন তাণ্ডব চালাতে পারে আগে জানা ছিল না। ঝড়ের শোঁ শোঁ শব্দে দু’চোখ বুঝতে পারিনি। ঝড়ে মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে অনেককে নতুন করে আবার সবকিছু শুরু করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অঞ্চলে ঝড় এমন তাণ্ডব চালাবে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। সব যেন গল্পের মতো। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না-রাতভর ঝড় কী তাণ্ডব চালিয়েছে!’

About Author Information
আপডেট সময় : ০৯:৫২:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মে ২০২০
৮৪২ Time View

ঝিনাইদহবাসী আগে কখনো ঝড়ের এমন তান্ডব দেখেনি

আপডেট সময় : ০৯:৫২:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ মে ২০২০

ঝিনাইদহঃ

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন গ্রাম। গ্রামের পর গ্রাম আম বাগান, মেহগনি বাগান উপড়ে গেছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে কলা বাগানের। এর আগে ঝড়ের এমন তাণ্ডব দেখেনি ঝিনাইদহের মানুষ।

মহেশপুর থানার ফতেপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ৬৫ বছরের ছাহেরা বেগম বলেন, ‘জীবনে অনেক ঝড় দেখেছি। এমন ঝড় আগে কখনও দেখিনি। মানুষের আম গাছ, মেহগনি গাছ উপড়ে গেছে অথবা ভেঙে গেছে। মানুষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ অঞ্চলে আগে কখনও এভাবে ঝড়ে গাছপালা উপড়ে পড়েনি।’

একই ইউনিয়নের হারুন আবু নামের ৩০ বছরের এক যুবক বলেন, ‘মাঠের পর মাঠ কলা বাগান শেষ। আম বাগান, কাঁঠাল বাগান, মেহগনি বাগান-সব উপড়ে অথবা ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ঝড়ের এমন তাণ্ডব আমাদের অঞ্চলের মানুষ এর আগে কখনও দেখেনি। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গেছে, তার ছিঁড়ে পড়ে আছে।’

তিনি বলেন, ‘ঝিনাইদহ জেলা উঁচু অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। এ অঞ্চলে সাধারণত বন্যা দেখা যায় না। বড় ধরনের ঝড় দেখা যায় না। কিন্তু আম্ফান বুধবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়েছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।’

ঝিনাইদহ সদর থানার গান্না ইউনিয়নের বাসিন্দা মোয়াজ্জেম। ৫৫ বছর বয়সী এই ব্যক্তি বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঝড়ের যে তাণ্ডব দেখেছি তাতে বেঁচে আছি-এটাই বড় কথা। রাতভর গভীর আতঙ্কে কাটিয়েছি। মাঠের সব কলা বাগান শেষ। আম গাছ, কাঁঠাল গাছ, নিম গাছ, মেহগনি গাছ সব উপড়ে পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে মানুষ এখন অনেক কষ্টে রয়েছে। নিম্নআয়ের মানুষের কাজ নেই। এ পরিস্থিতিতে ঝড়ের তাণ্ডবে মাঠের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেল। এতে নিম্নআয়ের মানুষের কষ্ট আরও বেড়ে যেতে পারে।’

কালীগঞ্জ থানার ফয়লা ইউনিয়নের ৪৫ বছরের তোহিদ বলেন, ‘ঝড় যে এমন তাণ্ডব চালাতে পারে আগে জানা ছিল না। ঝড়ের শোঁ শোঁ শব্দে দু’চোখ বুঝতে পারিনি। ঝড়ে মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে অনেককে নতুন করে আবার সবকিছু শুরু করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অঞ্চলে ঝড় এমন তাণ্ডব চালাবে কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। সব যেন গল্পের মতো। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না-রাতভর ঝড় কী তাণ্ডব চালিয়েছে!’