করোনার মধ্যে জাসদ নেতার ছেলের বৌভাত!
কুষ্টিয়া প্রতিনিধিঃ
দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সভা সমাবেশ ও জনসমাগম নিষিদ্ধ সরকারি নির্দেশনা থাকলেও জাসদ নেতার পুত্রের ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের সিংহভাগের মুখেই ছিল না মাস্ক, মানা হয়নি সামাজিক দূরত্ব।
শুক্রবার দিনব্যাপী চলে এ বিয়ের অনুষ্ঠান। লকডাউন তোয়াক্কা না করেই জাসদ নেতার পুত্রের ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান করায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে আলোচনা-সমলোচনার ঝড়।
বিয়ের অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় জাসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলীম স্বপন ও জেলা জাসদের সভাপতি হাজী গোলাম মহাসিনসহ জেলা ও উপজেলা জাসদের নেতাকর্মীদের কয়েকটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সেখানেও পাল্টাপাল্টি পক্ষে-বিপক্ষে চলছে আলোচনা-সমলোচনা।
ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়া-২(মিরপুর-ভেড়ামারা) সংসদীয় আসনের এমপি ও সাবেক তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর নির্বাচনী এলাকা কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক এসএম আনছার আলীর বাড়িতে। তারপুত্র এসএম মেহেদী হাসান লেনিনের বিয়ে উপলক্ষে ধুমধাম করে এই বৌভাতের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, করোনাকালে সকল প্রকার অনুষ্ঠান বন্ধে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও জাসদ নেতার পুত্রের বেলা তা মানা হল না। ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার বাঁধা আসলো না। আর আমাদের বেলায় যত বাঁধা। আমরা কিছু করলেই প্রশাসন ও এসব নেতারা আমাদের উপর ক্ষমতা দেখায়। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।
এ ব্যাপারে ভেড়ামারা উপজেলা জাসদের সাধারন সম্পাদক এসএম আনছার আলী বলেন, আমি একজন নেতা আমার ছেলের বিয়ে ধুমধাম করে হওয়ার কথা ছিল। করোনা কালে তাই করতে পারিনি। কাউকেই দাওয়াত করা হয়নি।
ফেসবুকে বিয়ে বাড়িতে আপনিসহ জাসদের কেন্দ্রীয় ও জেলার কয়েকজন নেতাকর্মীর ছবি দেখা যাচ্ছে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কারশেদ আলম বলেন, আমি ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে যায়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবিটি দেখেছি। আসলে করোনার মহামারির সময় ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান এটা উনি ভুল করেছেন।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলীম স্বপন বলেন, আমি বেশি কিছু বলবো না। আসলেই যা হয়েছে এটি দুঃখজনক।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি রফিকুল আলম টুকু বলেন, রাজনৈতিক নেতারা যদি এ ধরনের কাজ করেন। তাহলে সাধারণ মানুষ তো করবেই। এটা আসলেই দুঃখজনক। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল মারুফ বলেন, করোনার কারণে সকল প্রকার অনুষ্ঠান সভা সমাবেশ ও জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে বিষয়টি আমার নলেজে আসিনি। জাসদ নেতাদের ছবিটি ফেসবুকে আমিও দেখেছি। বিষয়টি আসলেই দুঃখজনক। কেউ অভিযোগ করলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।