যশোরের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাদ্দিস আবু সাঈদ আর নেই
যশোরঃ
জামায়াতে ইসলামী নেতা ও যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুহাদ্দিস আবু সাঈদ মারা গেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
আজ শনিবার হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পদ্মবিলা ফাজিল মাদরাসার এই অধ্যক্ষ মারা যান। জামায়াতঘনিষ্ঠ একজন কলেজশিক্ষক বিকেল সোয়া চারটার দিকে এই তথ্য দেন। এর আগে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে যোগাযোগ করা হলে শহরের শঙ্করপুর এলাকায় অবস্থিত গ্রিন ড্রিম লিমিটেড (জিডিএল) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও এই তথ্য নিশ্চিত করেন। অসুস্থ হওয়ার পর এই হাসপাতালেই নেওয়া হয়েছিল আবু সাঈদকে।
ওই শিক্ষক জানান, আজ মুহাদ্দিস আবু সাঈদ যশোর শহরের ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন। বিকেল তিনটার দিকে তিনি মোবাইল ফোনে কারো সঙ্গে কথা বলার সময় হঠাৎ পড়ে যান। পরিবার-সদস্যরা তখনই তাকে যশোর শহরের শঙ্করপুর এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি হাসপাতাল জিডিএল-এ নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার ফাইয়াজ আহমেদ ফয়সাল তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে যোগাযোগ করা হলে জিডিএল হাসপাতালের পরিচালক আবু ফয়সাল বলেন, ‘ডাক্তার ফাইয়াজ আহমেদ ফয়সাল রোগী মুহাদ্দিস আবু সাঈদকে বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, বেশ কিছু সময় আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবু তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু পরিবার-সদস্যরা তাকে আর জেনারেল হাসপাতালে নেননি। সোজা নিয়ে চলে যান ঝিকরগাছার গ্রামের বাড়িতে।’
এর আগে হাসপাতালটির ম্যানেজার নুর আলম জানিয়েছিলেন, মুহাদ্দিস আবু সাঈদকে হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত ডাক্তার ফাইয়াজ তার রক্তচাপ মাপেন, ইসিজিও করেন। জানিয়ে দেন, মুহাদ্দিস আর বেঁচে নেই।
মুহাদ্দিস আবু সাঈদের ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক’ হয়েছিল বলে ওই হাসপাতালটির কর্তৃপক্ষ বলছেন।
মুহাদ্দিস আবু সাঈদ যশোর সদর উপজেলার পদ্মবিলা ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। একইসঙ্গে তিনি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন।
দলীয় সূত্রগুলো জানায়, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মুহাদ্দিস সাঈদ জামায়াতে ইসলামী যশোর পশ্চিম জেলা শাখার নায়েবে আমিরের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
এর আগে তিনি ঝিকরগাছার বাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনপ্রতিনিধি হিসেবে প্রথম দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি ঝিকরগাছা উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন।
এর পর ১৯৯৬ সালে তিনি জাতীয় সংসদের যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে তৎকালীন চারদলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। পরের নির্বাচনে (২০০১) তিনি একই আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালের সবশেষ নির্বাচনেও তিনি ২০ দলীয় জোট প্রার্থী হিসেবে একই আসনে নির্বাচনে লড়েছিলেন।
মুহাদ্দিস আবু সাঈদ স্ত্রী, তিন ছেলে, দুই মেয়েসহ অনেক আত্মীয়-স্বজন ও অনুসারী রেখে গেছেন। ঝিকরগাছায় গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।