ঢাকা ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় করোনা রোগী বহন করেন হাসান

Reporter Name

শোয়াইব উদ্দিন, ঝিনাইদহঃ

মহামারী করোনাভাইরাস সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের মতো করোনা আক্রান্ত রোগীদের আনা নেওয়ার কাজটি নিরলসভাবে করে যাচ্ছেন অ্যাম্বুলেন্স চালকরাও ।

বেশির ভাগ মানুষ যখন করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত, কেউ আক্রান্ত হওয়ার খবর পেলে আপনজনও দূরে চলে যাচ্ছেন । কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত রাখছেন এ্যান্বুলেন্স চালকরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীকে হাসপাতালে ও বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন এ্যাম্বুলেন্স চালক হাসানুজ্জামান হাসান।

হাসানুজ্জামান হাসান ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বড় রায়গ্রাম এলাকার বাহার আলীর ছেলে। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে বাবা-মায়ের সাথেই বসবাস করেন রায়গ্রামের নিজ বাড়িতে। সবুজদেশ নিউজ ডটকমের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় করোনাকালের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

সম্মুখ সারির এই যোদ্ধা সবুজদেশ নিউজকে বলেন, ভাড়ায় চালিত একটি এ্যাম্বুলেন্স চালায়। অনেকসময় শুধু অসুস্থ জেনেই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে শুনি তিনি করোনা আক্রান্ত রোগী। কিন্তু মানবিকতার কারণে কারও অসুস্থতার খবর পেলেই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্ট করি। করোনাকালে অসুস্থ মানুষের হাসপাতালে নিয়ে আসার কাজে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেণিত করেছে বাবা ও মা। তাদের অনুপ্রেরনায় আমি আরও বেশি সাহস পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এ্যাম্বুলেন্সে রোগী আনা-নেওয়ার জন্য নিজের টাকায় পিপিই ও মাস্ক কিনে পরিধান করেন এবং বাসার ফেরার আগে সেগুলো পুড়িয়ে ফেলেন তিনি। বাসায় ফিরে নিজের সন্তানদের প্রথমে কাছে নেন না। নিজে পরিষ্কার হয়ে তারপর সন্তানদের কাছে যান।

এ্যাম্বুলেন্স চালক হাসানুজ্জামান হাসান বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ১০ জন করোনা আক্রান্ত ও প্রায় ২০০ করোনা উপসর্গে অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ও বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি। করোনা আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কেউ মারা গেলে খুব খারাপ লাগতো। অনেক সময় করোনা রোগী এ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার সময় স্বজনরা থাকতো না। গাড়ি চালানোর সাথে সাথে রোগীর সাথে কথা বলে সময় দিতাম।

করোনা যুদ্ধের সম্মুখ সারির এই যোদ্ধা বলেন, রাতে অনেকে ফোন দিয়ে তাদের বাড়িতে যেতে বলেন। ফোন পাওয়ার সাথে সাথে আমি এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সেই বাড়িতে হাজির হই। এরপর সেই রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিই। করোনা রোগী বহন করায় পরিবার বা বন্ধুরা তেমন কিছু কখনোই বলেনি। কিন্তু করোনা রোগী বহন করি বলে পরিচিত দোকানে মালামাল কিনতে গেলে বিক্রি করবেন না বলে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৯:২৩:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অগাস্ট ২০২০
১১১০ Time View

বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় করোনা রোগী বহন করেন হাসান

আপডেট সময় : ০৯:২৩:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ অগাস্ট ২০২০

শোয়াইব উদ্দিন, ঝিনাইদহঃ

মহামারী করোনাভাইরাস সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের মতো করোনা আক্রান্ত রোগীদের আনা নেওয়ার কাজটি নিরলসভাবে করে যাচ্ছেন অ্যাম্বুলেন্স চালকরাও ।

বেশির ভাগ মানুষ যখন করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত, কেউ আক্রান্ত হওয়ার খবর পেলে আপনজনও দূরে চলে যাচ্ছেন । কিন্তু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত রাখছেন এ্যান্বুলেন্স চালকরা। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোগীকে হাসপাতালে ও বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন এ্যাম্বুলেন্স চালক হাসানুজ্জামান হাসান।

হাসানুজ্জামান হাসান ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বড় রায়গ্রাম এলাকার বাহার আলীর ছেলে। এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে বাবা-মায়ের সাথেই বসবাস করেন রায়গ্রামের নিজ বাড়িতে। সবুজদেশ নিউজ ডটকমের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় করোনাকালের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

সম্মুখ সারির এই যোদ্ধা সবুজদেশ নিউজকে বলেন, ভাড়ায় চালিত একটি এ্যাম্বুলেন্স চালায়। অনেকসময় শুধু অসুস্থ জেনেই রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে শুনি তিনি করোনা আক্রান্ত রোগী। কিন্তু মানবিকতার কারণে কারও অসুস্থতার খবর পেলেই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্ট করি। করোনাকালে অসুস্থ মানুষের হাসপাতালে নিয়ে আসার কাজে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেণিত করেছে বাবা ও মা। তাদের অনুপ্রেরনায় আমি আরও বেশি সাহস পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এ্যাম্বুলেন্সে রোগী আনা-নেওয়ার জন্য নিজের টাকায় পিপিই ও মাস্ক কিনে পরিধান করেন এবং বাসার ফেরার আগে সেগুলো পুড়িয়ে ফেলেন তিনি। বাসায় ফিরে নিজের সন্তানদের প্রথমে কাছে নেন না। নিজে পরিষ্কার হয়ে তারপর সন্তানদের কাছে যান।

এ্যাম্বুলেন্স চালক হাসানুজ্জামান হাসান বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ১০ জন করোনা আক্রান্ত ও প্রায় ২০০ করোনা উপসর্গে অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ও বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি। করোনা আক্রান্ত রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কেউ মারা গেলে খুব খারাপ লাগতো। অনেক সময় করোনা রোগী এ্যাম্বুলেন্সে নেওয়ার সময় স্বজনরা থাকতো না। গাড়ি চালানোর সাথে সাথে রোগীর সাথে কথা বলে সময় দিতাম।

করোনা যুদ্ধের সম্মুখ সারির এই যোদ্ধা বলেন, রাতে অনেকে ফোন দিয়ে তাদের বাড়িতে যেতে বলেন। ফোন পাওয়ার সাথে সাথে আমি এ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সেই বাড়িতে হাজির হই। এরপর সেই রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিই। করোনা রোগী বহন করায় পরিবার বা বন্ধুরা তেমন কিছু কখনোই বলেনি। কিন্তু করোনা রোগী বহন করি বলে পরিচিত দোকানে মালামাল কিনতে গেলে বিক্রি করবেন না বলে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।