ঢাকা ০১:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বীর মুক্তিযোদ্ধা সনেত কুমার দাস

Reporter Name
সবুজদেশ ডেক্সঃ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়াদিয়ে দেশ মাতৃকার টানে নিজের জীবনবাঁজি রেখে রণাঙ্গণে সক্রিয় অংশ গ্রহণের মাধ্যমে লাল সবুজের বিজয় পতাকা ছিনিয়ে আনার লক্ষে যুদ্ধ করেছিল ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার খোদ্দ রায়গ্রামের মৃত শ্যামপদ দাসের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা সনেত কুমার দাস।স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশ স্বাধীন হলেও জীবনযুদ্ধে হয়েছেন পুরোপুরি পরাজিত। সকল প্রকার সনদ থাকা সত্বেও দেশ স্বাধীনের পর থেকে অদ্যবধি তিনি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তভূক্ত হতে পারেননি। তালিকাভূক্ত হওয়ার জন্য তিনি বিভিন œস্থানে ঘুরেও কোন সুফল পাননি। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও শেষ পর্যন্ত তিনি কি স্বীকৃতি পাবেন? এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এই মুক্তিযোদ্ধার মাঝে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা নেতাদের কাছে গেলে ও তারা বিভিন্ন কথা বলে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়িয়েছে। জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ করে বলেন, আমার সহ যোদ্ধারা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে সরাসরি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে যুদ্ধ করেছেন তাদের অনেকের নাম তালিকাভূক্ত হয়েছে আবার অনেকেরই এখনও তালিকাভূক্ত হয়নি। অথচ অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও তালিকাভূক্তির জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বরাবর অবেদন করেছেন। সনেত কুমার দাস নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবী করে আবেদনে পত্রে উল্লেখ করে বলেন, যে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করা মুক্তিযোদ্ধা-১৯৬৯ গণআন্দোলনের পর পরই-সর্ব কালের সর্বশ্রষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান স্বাধীনতার জন্য পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর হাত থেকে দেশকে স্বাধীন করার লক্ষে যুদ্ধের ডাক দেন। যখন পাকিস্থানী বাহিনী নিরীহ বাঙ্গালীদের উপর গুলিবর্ষনের বর্বরতায় মেতে ওঠে তখনই দূর্দান্ত সাহস ও মনোবল নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ি। ঠিক ঐ সময়ই সাবেক যশোর জেলার দুলালমুন্দিয়ায় পাকিস্থানী বাহিনীর হাতে নির্মম ভাবে নিহতদের প্রতিশোধ ও দেশকে স্বাধীন করার লক্ষে মরহুম এমএনএ ফকির মিয়া, এহিয়া মোল্যা, ছাত্তার মিয়া, আজিজ মিয়া, সহিল উদ্দিন, মহিউদ্দিন মিয়া, খলিল মিয়া, নূরুল ইসলাম (শুকুর ডাক্তার)), আবুল হোসেন, ওলাদ হোসেন, মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলে। আমি শুকুর ডাক্তার, সহিল উদ্দিন ও ইউসুপ আলীর সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁর চাপাবাড়িয়া-টালিখোলা ক্যাম্পে যোগদান করে যুদ্ধের জন্য ট্রেনিং অংশ নেন। তারপর ক্যাম্পে থাকা বিভিন্ন থানা ও জেলার সঙ্গীদের সাথে যশোর চলে আসি এবং বিভিন্ন সেক্টরে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। এখন বঙ্গ বন্ধুর সু-যোগ্য কন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের প্রধান মন্ত্রী এজন্য আমি জীবনের শেষ প্রান্তে অনেক আশা ও সাহস বুকে নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও নাম তালিকাভূক্তির জন্য আবেদন করেছি। তিনি প্রকৃত ও সক্রিয় অংশ গ্রহনকারী মহান মুক্তিযুদ্ধের যোদ্ধা হিসেবে সাথী সঙ্গীদের পাশাপাশি তার নাম নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে অন্তভূক্তির জন্য আবেদন পত্রে উল্লেখ করেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা সনেত কুমার দাসের বাড়ী ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ৭ নং রায়গ্রাম ইউনিয়নের খর্দ্দো রায়গ্রাম গ্রামে, তার পিতার নাম-মৃত শ্যামাপদ দাস, মাতার নাম-কোমলা বালা, জন্ম-১৭/১১/১৯৫২ ইং সাল, জাতীয় পরিচয়পত্র নং-৪৪১৩৩৭৪৫৪২৬৬৪ । যুদ্ধ করাকালীন সেক্টর নং-৮। সংশ্লিষ্ট বাহিনীর নাম-মুক্তি বাহিনী। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ন অবদানের জন্য নানা কাগজপত্র থাকা সত্বেও অদ্যবর্ধি তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভূক্ত হতে পারেননি। একাধিবার গেজেটভূক্ত হওয়ার চেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। নিজের জীবন বাঁজি রেখে সেদিন দায়িত্ব পালন করেছি। দেশ স্বাধীনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প থেকে আমার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সনদপত্র দেয়া হয়েছে। সকল প্রকার কাগজপত্র থাকার পরেও শেষ পর্যন্ত তিনি গেজেটভূক্ত হতে পারবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৬:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮
১১১৯ Time View

বীর মুক্তিযোদ্ধা সনেত কুমার দাস

আপডেট সময় : ০৬:৩৫:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮
সবুজদেশ ডেক্সঃ মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়াদিয়ে দেশ মাতৃকার টানে নিজের জীবনবাঁজি রেখে রণাঙ্গণে সক্রিয় অংশ গ্রহণের মাধ্যমে লাল সবুজের বিজয় পতাকা ছিনিয়ে আনার লক্ষে যুদ্ধ করেছিল ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার খোদ্দ রায়গ্রামের মৃত শ্যামপদ দাসের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা সনেত কুমার দাস।স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশ স্বাধীন হলেও জীবনযুদ্ধে হয়েছেন পুরোপুরি পরাজিত। সকল প্রকার সনদ থাকা সত্বেও দেশ স্বাধীনের পর থেকে অদ্যবধি তিনি মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তভূক্ত হতে পারেননি। তালিকাভূক্ত হওয়ার জন্য তিনি বিভিন œস্থানে ঘুরেও কোন সুফল পাননি। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হয়েও শেষ পর্যন্ত তিনি কি স্বীকৃতি পাবেন? এমন নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে এই মুক্তিযোদ্ধার মাঝে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা নেতাদের কাছে গেলে ও তারা বিভিন্ন কথা বলে ঘুরিয়ে নিয়ে বেড়িয়েছে। জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আক্ষেপ করে বলেন, আমার সহ যোদ্ধারা যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে সরাসরি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে যুদ্ধ করেছেন তাদের অনেকের নাম তালিকাভূক্ত হয়েছে আবার অনেকেরই এখনও তালিকাভূক্ত হয়নি। অথচ অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও তালিকাভূক্তির জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বরাবর অবেদন করেছেন। সনেত কুমার দাস নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবী করে আবেদনে পত্রে উল্লেখ করে বলেন, যে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করা মুক্তিযোদ্ধা-১৯৬৯ গণআন্দোলনের পর পরই-সর্ব কালের সর্বশ্রষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান স্বাধীনতার জন্য পাকিস্থানী হানাদার বাহিনীর হাত থেকে দেশকে স্বাধীন করার লক্ষে যুদ্ধের ডাক দেন। যখন পাকিস্থানী বাহিনী নিরীহ বাঙ্গালীদের উপর গুলিবর্ষনের বর্বরতায় মেতে ওঠে তখনই দূর্দান্ত সাহস ও মনোবল নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ি। ঠিক ঐ সময়ই সাবেক যশোর জেলার দুলালমুন্দিয়ায় পাকিস্থানী বাহিনীর হাতে নির্মম ভাবে নিহতদের প্রতিশোধ ও দেশকে স্বাধীন করার লক্ষে মরহুম এমএনএ ফকির মিয়া, এহিয়া মোল্যা, ছাত্তার মিয়া, আজিজ মিয়া, সহিল উদ্দিন, মহিউদ্দিন মিয়া, খলিল মিয়া, নূরুল ইসলাম (শুকুর ডাক্তার)), আবুল হোসেন, ওলাদ হোসেন, মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলে। আমি শুকুর ডাক্তার, সহিল উদ্দিন ও ইউসুপ আলীর সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁর চাপাবাড়িয়া-টালিখোলা ক্যাম্পে যোগদান করে যুদ্ধের জন্য ট্রেনিং অংশ নেন। তারপর ক্যাম্পে থাকা বিভিন্ন থানা ও জেলার সঙ্গীদের সাথে যশোর চলে আসি এবং বিভিন্ন সেক্টরে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। এখন বঙ্গ বন্ধুর সু-যোগ্য কন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সরকারের প্রধান মন্ত্রী এজন্য আমি জীবনের শেষ প্রান্তে অনেক আশা ও সাহস বুকে নিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি ও নাম তালিকাভূক্তির জন্য আবেদন করেছি। তিনি প্রকৃত ও সক্রিয় অংশ গ্রহনকারী মহান মুক্তিযুদ্ধের যোদ্ধা হিসেবে সাথী সঙ্গীদের পাশাপাশি তার নাম নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে অন্তভূক্তির জন্য আবেদন পত্রে উল্লেখ করেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা সনেত কুমার দাসের বাড়ী ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ৭ নং রায়গ্রাম ইউনিয়নের খর্দ্দো রায়গ্রাম গ্রামে, তার পিতার নাম-মৃত শ্যামাপদ দাস, মাতার নাম-কোমলা বালা, জন্ম-১৭/১১/১৯৫২ ইং সাল, জাতীয় পরিচয়পত্র নং-৪৪১৩৩৭৪৫৪২৬৬৪ । যুদ্ধ করাকালীন সেক্টর নং-৮। সংশ্লিষ্ট বাহিনীর নাম-মুক্তি বাহিনী। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ন অবদানের জন্য নানা কাগজপত্র থাকা সত্বেও অদ্যবর্ধি তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভূক্ত হতে পারেননি। একাধিবার গেজেটভূক্ত হওয়ার চেষ্টা করেও তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। নিজের জীবন বাঁজি রেখে সেদিন দায়িত্ব পালন করেছি। দেশ স্বাধীনের পর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প থেকে আমার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ সনদপত্র দেয়া হয়েছে। সকল প্রকার কাগজপত্র থাকার পরেও শেষ পর্যন্ত তিনি গেজেটভূক্ত হতে পারবেন কিনা তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা।