ঢাকা ১১:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার মুশফিক-সাকিবদের জার্সিতে বর্ণমালা ৫২!

Reporter Name

সবুজদেশ ডেস্কঃ

সময়ের বিবর্তনে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। সাকিব-মাশরাফি-মুশফিক-তামিমদের জার্সিতে কখনও স্বাধীনতা, কখনও সুন্দরবন, কখনও বা গর্জে ওঠো বাংলাদেশ- এমন সব থিম জায়গা পেয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বর্ণমালা ৫২ থিম নিয়ে জার্সি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন ডিজাইনার সেজান লিংকন। এখন শুধু অপেক্ষা বিসিবির অনুমোদনের।

২০১১ সালে গর্জে ওঠো বাংলাদেশ, ২০১৪ সালে আমার স্বাধীনতা, ২০১৫ বিশ্বকাপে সুন্দরবন থিম নিয়ে জার্সি ডিজাইন করেছিলেন সেজান লিংকন। নতুন এই জার্সির ভাবনা নিয়ে তরুণ এই ডিজাইনার বলেছেন, ‘আগের করা তিনটি থিমই হচ্ছে বাংলাদেশকেন্দ্রিক। এবার আমার ভাবনায় বর্ণমালা ৫২। ২০১৮ সালে একই থিম নিয়ে আমি বিসিবির কাছে গিয়েছিলাম। অনুরোধ করেছিলাম একদিনের জন্য হলে জার্সিটা পরানোর জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার, ততক্ষণে বাংলাদেশের জার্সিটা নির্বাচন হয়ে গেছে।’

কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়া নিজেদের নতুন জার্সি উন্মোচন করেছে। যা ক্রিকেট বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। বাংলাদেশের সামনেও রয়েছে এমন একটি সুযোগ। ২০২১ সালে পালন হবে স্বাধীনতার ৫০ বছর। সুবর্ণজয়ন্তীকে স্মরণীয় করে রাখতে সাকিব-মুশফিকরা পরতে পারেন বিশেষ আইকনিক জার্সি। অস্ট্রেলিয়ার সেই জার্সি দেখার পর থেকে আক্ষেপটা বেড়ে গেছে লিংকনের, ‘অস্ট্রেলিয়ার জার্সির ডিজাইনটা দেখে আমার মধ্যে আফসোস তৈরি হয়। এর চেয়ে তো আমার কাছে ভালো থিম ছিল। থিমটা সত্যি খুব দারুণ। যারা দেখছে, সবাই প্রশংসা করছে। আমার মনে হচ্ছে এটা বাংলাদেশকে খুব ভালো করে রিপ্রেজন্টে করতে পারবে।

জার্সির থিম নিয়ে লিংকন জানিয়েছেন, ‘আমার ভাবনা হচ্ছে, জার্সির মাধ্যমে পুরো বিশ্বে বর্ণমালাটাকে পৌঁছে দেওয়া। এই জার্সিতে থাকবে বাংলাদেশের মানচিত্র এবং স্বাধীনতা। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তিমূলে আছে জয় বাংলা স্লোগান। সেটিকে রেখেই ভাষার প্রতিটি এলিমেন্টকে থ্রি-ডি মুভমেন্ট করা হয়েছে। এখানে প্রত্যেকটি এলিমেন্ট হচ্ছে আমার বাননো। এখানে কপিরাইটের কিছু নেই। এটা ইচ্ছে করলেই কেউ বানাতে পারবে না। কোড নেম আছে বর্ণমালা ৫২ বিজয় কেতন। এটা কোনও সাধারণ ইস্যু না। এটা বাংলাদেশের ইস্যু। আমার একটা চাওয়া হচ্ছে, বিসিবির তো টাকার অভাব নেই। একদিনের জন্য হলেও এই জার্সিটা যদি ব্যবহার করা যেত, তাহলে সেটাই আমার স্বার্থকতা হবে।’

আজই লিংকন প্রধান নির্বাহী বরাবর আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেবেন বলে জানালেন, ‘আমি প্রধান নির্বাহীকে আজকে অফিসিয়ালি মেইল করবো। পাশাপাশি জালাল ভাই., মল্লিক ভাইদের সঙ্গেও কথা বলবো। এবার আমি দাবি করবো, এই জিনিসটা যেন বিসিবি অনুমোদন করে দেয়। বিসিবি যদি এখনই আমাকে ডিজাইনটা দিতে বলে আমি দিয়ে দিতে পারবো। কিন্তু আমি উৎপাদন করতে পারবো না।’

নতুন জার্সির বিষয়ে বিসিবি এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিসিবির পরিচালক ও মিডিয়া প্রধান জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের কিছু পরিকল্পনা আছে। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে আমাদের বুদ্ধি-পরামর্শ দিচ্ছেন। অনেকেই আমাদের কাছে জার্সির ডিজাইন দিয়েছেন। কিন্তু এগুলো কিছুই এখনও আমরা চূড়ান্ত করিনি।’ সেজান লিংকনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘এটা দারুণ উদ্যোগ। এখন আমরা ডিজাইন দেখতে পারি। ভালো কিছু পেলে হয়তো ডিজাইটা আমরা গ্রহণ করবো। লিংকন নামেন একজন আমাদের একটি ডিজাইন দিয়েছেন। আমার ব্যক্তিগতভাবে তার আইডিয়া ভালোই লেগেছে। এখন আমরা নিজেদের মধ্যে বিষয়টি আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেবো। ক্রিকেট বাংলাদেশের মানুষের কাছে অনেক বেশি আবেগের জায়গা ধারণ করে আছে। ক্রিকেটারদের হারে বাঙালি যেমন কাঁদে, তেমনি জয়ে মাতোয়ারা হয় উৎসবে। এতে সবার আগে লাল-সবুজের রং ছড়ায় ক্রিকেটারদের জার্সি। সময়ের বিবর্তনে রং ও বৈচিত্র্যে টাইগারদের জার্সিতে পরিবর্তন আসলেও এক জায়গায় একটা মিল থেকে যায়, সেটা হচ্ছে বাংলাদেশ দলের প্রতীক সেই রয়েল বেঙ্গল টাইগার।’ 

About Author Information
আপডেট সময় : ০৮:৩১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০
২৪০ Time View

এবার মুশফিক-সাকিবদের জার্সিতে বর্ণমালা ৫২!

আপডেট সময় : ০৮:৩১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২০

সবুজদেশ ডেস্কঃ

সময়ের বিবর্তনে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে। সাকিব-মাশরাফি-মুশফিক-তামিমদের জার্সিতে কখনও স্বাধীনতা, কখনও সুন্দরবন, কখনও বা গর্জে ওঠো বাংলাদেশ- এমন সব থিম জায়গা পেয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বর্ণমালা ৫২ থিম নিয়ে জার্সি তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন ডিজাইনার সেজান লিংকন। এখন শুধু অপেক্ষা বিসিবির অনুমোদনের।

২০১১ সালে গর্জে ওঠো বাংলাদেশ, ২০১৪ সালে আমার স্বাধীনতা, ২০১৫ বিশ্বকাপে সুন্দরবন থিম নিয়ে জার্সি ডিজাইন করেছিলেন সেজান লিংকন। নতুন এই জার্সির ভাবনা নিয়ে তরুণ এই ডিজাইনার বলেছেন, ‘আগের করা তিনটি থিমই হচ্ছে বাংলাদেশকেন্দ্রিক। এবার আমার ভাবনায় বর্ণমালা ৫২। ২০১৮ সালে একই থিম নিয়ে আমি বিসিবির কাছে গিয়েছিলাম। অনুরোধ করেছিলাম একদিনের জন্য হলে জার্সিটা পরানোর জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার, ততক্ষণে বাংলাদেশের জার্সিটা নির্বাচন হয়ে গেছে।’

কিছুদিন আগে অস্ট্রেলিয়া নিজেদের নতুন জার্সি উন্মোচন করেছে। যা ক্রিকেট বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। বাংলাদেশের সামনেও রয়েছে এমন একটি সুযোগ। ২০২১ সালে পালন হবে স্বাধীনতার ৫০ বছর। সুবর্ণজয়ন্তীকে স্মরণীয় করে রাখতে সাকিব-মুশফিকরা পরতে পারেন বিশেষ আইকনিক জার্সি। অস্ট্রেলিয়ার সেই জার্সি দেখার পর থেকে আক্ষেপটা বেড়ে গেছে লিংকনের, ‘অস্ট্রেলিয়ার জার্সির ডিজাইনটা দেখে আমার মধ্যে আফসোস তৈরি হয়। এর চেয়ে তো আমার কাছে ভালো থিম ছিল। থিমটা সত্যি খুব দারুণ। যারা দেখছে, সবাই প্রশংসা করছে। আমার মনে হচ্ছে এটা বাংলাদেশকে খুব ভালো করে রিপ্রেজন্টে করতে পারবে।

জার্সির থিম নিয়ে লিংকন জানিয়েছেন, ‘আমার ভাবনা হচ্ছে, জার্সির মাধ্যমে পুরো বিশ্বে বর্ণমালাটাকে পৌঁছে দেওয়া। এই জার্সিতে থাকবে বাংলাদেশের মানচিত্র এবং স্বাধীনতা। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তিমূলে আছে জয় বাংলা স্লোগান। সেটিকে রেখেই ভাষার প্রতিটি এলিমেন্টকে থ্রি-ডি মুভমেন্ট করা হয়েছে। এখানে প্রত্যেকটি এলিমেন্ট হচ্ছে আমার বাননো। এখানে কপিরাইটের কিছু নেই। এটা ইচ্ছে করলেই কেউ বানাতে পারবে না। কোড নেম আছে বর্ণমালা ৫২ বিজয় কেতন। এটা কোনও সাধারণ ইস্যু না। এটা বাংলাদেশের ইস্যু। আমার একটা চাওয়া হচ্ছে, বিসিবির তো টাকার অভাব নেই। একদিনের জন্য হলেও এই জার্সিটা যদি ব্যবহার করা যেত, তাহলে সেটাই আমার স্বার্থকতা হবে।’

আজই লিংকন প্রধান নির্বাহী বরাবর আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেবেন বলে জানালেন, ‘আমি প্রধান নির্বাহীকে আজকে অফিসিয়ালি মেইল করবো। পাশাপাশি জালাল ভাই., মল্লিক ভাইদের সঙ্গেও কথা বলবো। এবার আমি দাবি করবো, এই জিনিসটা যেন বিসিবি অনুমোদন করে দেয়। বিসিবি যদি এখনই আমাকে ডিজাইনটা দিতে বলে আমি দিয়ে দিতে পারবো। কিন্তু আমি উৎপাদন করতে পারবো না।’

নতুন জার্সির বিষয়ে বিসিবি এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিসিবির পরিচালক ও মিডিয়া প্রধান জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের কিছু পরিকল্পনা আছে। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে আমাদের বুদ্ধি-পরামর্শ দিচ্ছেন। অনেকেই আমাদের কাছে জার্সির ডিজাইন দিয়েছেন। কিন্তু এগুলো কিছুই এখনও আমরা চূড়ান্ত করিনি।’ সেজান লিংকনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে জালাল ইউনুস বলেছেন, ‘এটা দারুণ উদ্যোগ। এখন আমরা ডিজাইন দেখতে পারি। ভালো কিছু পেলে হয়তো ডিজাইটা আমরা গ্রহণ করবো। লিংকন নামেন একজন আমাদের একটি ডিজাইন দিয়েছেন। আমার ব্যক্তিগতভাবে তার আইডিয়া ভালোই লেগেছে। এখন আমরা নিজেদের মধ্যে বিষয়টি আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেবো। ক্রিকেট বাংলাদেশের মানুষের কাছে অনেক বেশি আবেগের জায়গা ধারণ করে আছে। ক্রিকেটারদের হারে বাঙালি যেমন কাঁদে, তেমনি জয়ে মাতোয়ারা হয় উৎসবে। এতে সবার আগে লাল-সবুজের রং ছড়ায় ক্রিকেটারদের জার্সি। সময়ের বিবর্তনে রং ও বৈচিত্র্যে টাইগারদের জার্সিতে পরিবর্তন আসলেও এক জায়গায় একটা মিল থেকে যায়, সেটা হচ্ছে বাংলাদেশ দলের প্রতীক সেই রয়েল বেঙ্গল টাইগার।’