বার্সেলোনাকে হারিয়ে লা লিগায় শীর্ষে রিয়াল মাদ্রিদ
সবুজদেশ ডেস্কঃ
চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে টানা ছয় ম্যাচে গোলশূন্য ছিলেন বার্সেলোনা অধিনায়ক লিওনেল মেসি। শনিবার রাতের এল ক্লাসিকোতে কাতালান ক্লাবটির জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ ছিল এটি। এই গোলখরাকে সাত ম্যাচে পরিণত করে রিয়ালের বিপক্ষে নিজ দলের আরও একটি পরাজয় দেখলেন বার্সা অধিনায়ক।
শনিবার রাতে নিজেদের ঘরের মাঠ আলফ্রেড ডি স্টেফানো স্টেডিয়ামে বার্সেলোনাকে ২-১ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। চলতি লা লিগার প্রথম সাক্ষাতে ৩-১ গোলের সহজ জয় পেয়েছিল রিয়াল। সবমিলিয়ে বার্সার বিপক্ষে রিয়ালের এটি টানা তৃতীয় জয়। ১৯৭৮ সালে সবশেষ টানা তিন এল ক্লাসিকো জিতেছিল তারা।
এ জয়ের ফলে এখন পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা। লিগের ৩০ ম্যাচ শেষে ২০ জয় ও ৬ ড্রয়ে রিয়ালের সংগ্রহ ৬৬ পয়েন্ট। এক ম্যাচ কম খেলে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের পয়েন্টও ৬৬, তবে এক নম্বরে রিয়ালই। তাদের সমান ৩০ ম্যাচে ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে রয়েছে বার্সেলোনা।
রিয়ালের এ জয়ের গোল দুইটি করেছেন করিম বেনজেমা ও টনি ক্রুস। এক গোল শোধ করেছেন বার্সা ডিফেন্ডার অস্কার মিনগুয়েজা। এর সুবাদে টানা নয় এল ক্লাসিকোতে গোলবঞ্চিত থাকার পর জাল খুঁজে পেলেন বেনজেমা। আর লিগে টানা ১৯ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ পেল কাতালানরা।
ম্যাচে বরাবরের মতোই বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল বার্সেলোনা। প্রায় ৭০ ভাগ সময় তারাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখে বল। কিন্তু রিয়ালের রক্ষণে গিয়ে লক্ষ্য বরাবর শটই নিতে পারছিল না। পুরো ম্যাচে বার্সেলোনার নেয়া ১৮ শটের মোট ৪টি লক্ষ্যে, যেখান থেকে গোল মিলেছে মাত্র ১টি।
অন্যদিকে ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদ গোলের জন্য শট নেয় ১৪টি, যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল ৩টি এবং গোল হয়েছে দুইটি। অন্য শট লেগেছিল বারে। গোলবার অবশ্য ধোঁকা দিয়েছে বার্সাকেও। মেসির একটি কর্নার সরাসরি লাগে বারে, পরে ম্যাচের একদম শেষদিকে বারে লেগে প্রতিহত হয় তাদের সমতায় ফেরার চেষ্টা।
মূলত প্রথমার্ধেই ম্যাচটি নিজেদের পকেটে নিয়ে নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের মাত্র ১৩ মিনিটের সময় ডান দিক থেকে লুকাস ভাস্কুয়েজের ক্রসে অসাধারণ সাইড-ফুট ফ্লিকে বার্সা রক্ষণের পাশাপাশি গোলরক্ষক টের স্টেগানকেও বোকা বানান বেনজেমা। চলতি লিগে এটি তার ১৯তম গোল।
এরপর ১৫ মিনিটের মধ্যে দ্বিতীয় গোল পায় লস ব্লাংকোসরা। যেখানে টনি ক্রুসের নৈপুণ্যের পাশাপাশি ছিল বার্সা রক্ষণের ভুলও। ম্যাচের ২৭ মিনিটের সময় ফ্রি-কিক থেকে গোলটি করেন তিনি। প্রথমার্ধে অনেক চেষ্টা করেও গোলের দেখা পায়নি বার্সেলোনা, দুই গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় সফরকারীরা।
দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। যে কারণে নিজেদের স্বাভাবিক পরিকল্পনা থেকে সরে গিয়ে রক্ষণাত্মক খেলতে শুরু করে রিয়াল। এর ফায়দাও নিয়ে নেয় বার্সেলোনা। ম্যাচের ৬০ মিনিটের সময় জর্দি আলবার ক্রস থেকে স্কোরশিটে নাম তোলেন মিনগুয়েজা।
পুরো ম্যাচে প্রায় নিজের ছায়ায়ই বন্দী ছিলেন লিওনেল মেসি। প্রথমার্ধে সরাসরি কর্নার থেকে গোলের সম্ভাবনা জাগালেও, সেটি প্রতিহত হয় দূরের পোস্টে লেগে। এর বাইরে তেমন কোনো একক নৈপুণ্য দেখাতে পারেননি তিনি। ফলে এর মাশুলও দিতে হয়েছে বার্সেলোনাকে।
ম্যাচের একদম শেষদিকে গিয়ে জোড়া হলুদ কার্ডের কারণে লাল কার্ড দেখেছেন রিয়াল মিডফিল্ডার ক্যাসেমিরো। অতিরিক্ত যোগ করা সময়ে বদলি নামা তরুণ মিডফিল্ডার ইলাইশ মোরিবার শট ক্রসবারে বাধা পায়। যার ফলে আর সমতায় ফেরা হয়নি বার্সেলোনার, জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে রিয়াল।