নড়াইলে পুলিশকে মারপিট করে অস্ত্র-গুলি ছিনতাই
নড়াইলঃ
লোহাগড়া থানা পুলিশের দু’জন এএসআইকে মারপিট করে গুলিসহ পিস্তল ছিনিয়েনিয়ে গেছে একদল দুর্বৃত্ত।
ঘটনার পরপরই নড়াইলের পুলিশসুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় দু’জন মহিলাকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসি সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ওকুমড়ি গ্রামের পূর্ব পাড়ার ওহিদ সরদার সমর্থিত লোকজনদের সাথে পাশের মাউলি গ্রামের রোকনউদ্দিন মোল্যা সমর্থিত লোকজনদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার করাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলে আসছে। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার সাড়ে ১১টার দিকে ওহিদ সরদার সমর্থিত বুলু সরদারকে (৫৫) প্রতিপক্ষ রোকনউদ্দিন মোল্যা সমর্থিত লোকজন অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতিদ্বন্দ্বি দুটিপক্ষ টিকেরডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সংঘাতের প্রস্তুতি নেয়।
খবর পেয়ে লোহাগড়া থানার এএসআই মীর আলমগীর ও মিকাইল হোসেন ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেধড়ক লাঠিচার্জ করেন। পুলিশের লাঠিচার্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ সরদার (৭৫) ও সনি সরদারসহ ৪/৫জন কমবেশি আহত হন। এরপর ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই দু’জন পুলিশকর্মকর্তার ওপর চড়াও হয়ে তাদের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এএসআই মীর আলমগীরের কাছে থাকা চীনের তৈরি সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু (৭.৬২) মিলিমিটার পিস্তল ও ৮ রাইন্ড গুলি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। গুরুতর আহত ওই দু’জন পুলিশের এএসআইকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে নড়াইলের পুলিশসুপার প্রবীর কুমার রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানজিলা সিদ্দিকা, লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), জেলা বিশেষশাখা (ডিএসবি) সহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং প্রায় ৩ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বেলা আড়াইটার দিকে মাউলি এলাকার একটি পাকা সড়কের পাশ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় লুন্ঠিত অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার অফিসারইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সৃষ্ট ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে জাহানারা বেগম (৫৫) ও সোহানা রোজিকে (৩২) আটক করা হয়েছে। পুলিশকে মারপিট করে অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে পুলিশি গ্রেফতার আতংকে কুমড়ি পূর্বপাড়াসহ আশপাশের এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।