কালীগঞ্জে পিস হিসেবে তরমুজ কিনে ওজনে বিক্রির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
পিস হিসাবে তরমুজ ক্রয় করে ওজনে কেজি দরে বিক্রি করায় নিন্ম ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে এই গ্রীষ্মকালীন ফল তরমুজ।
সরেজমিনে শুক্রবার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে জুম্মার নামাজ পর মেইন বাসষ্ট্রান্ডে ঘুরে দেখা যায়, ছোট বড় ৮ থেকে ১০ জন খুচরা ব্যবসায়ি চার ধরনের তরমুজ বিক্রয় করছে। দামের প্রকার ভেদে নেই, তারা বলছে যেটাই নিবেন একদাম ৫০ টাকা কেজি। দামের ব্যাপারে বিক্রেতা কথিত উলফা (ষষ্টি দাস) নামের এক খুচরা তরমুজ ব্যবসায়ীর কাছে জানতে চাইলে তিনি সংবাদ কর্মির উপর চড়াও হয়। তার নাম কি জানতে চাইলে তিনি মিথ্যা নাম বলেন আমার নাম উলফা।
কতিথ এই উলফার ব্যাপারে বাসস্ট্যান্ডের আশেপাশের ব্যবসায়ি ও খুচরা ক্রেতারা জানান, তার খারাপ আচরণে আশেপাশের ব্যবসায়ীরাও অতিষ্ঠ, আছে ওজনে ফল কম দেওয়ার অভিযোগ। ফল কিনে বাসায় নিয়ে ফলের প্যাকেট খুলে দেখা যায় খারাপ পচা ফল দিয়েছে।
স্থানীয় কিছু সাধারণ খুচরা ফল ক্রেতারা জানান, মাহে রমজান মাসে প্রচুর রোদ গরম, সে ক্ষেত্রে ইফতারির সময় কিছু ফল দিয়ে ইফতারির করার ইচ্ছা থাকলেও কিনতে গিয়ে লাগামহীন দাম শুনে আর কেনা হয় না।
তারা বলেন, কালীগঞ্জ শহরে ৮/১০জন খুচরা তরমুজ বিক্রেতা আছে। এরা সিন্ডিকেট করে তরমুজ বিক্রি করছে। সাধারণ ক্রেতারা দাম শুনলে বলছে এক দাম ৫০ টাকা কেজি। তখন তরমুজটি ওজন দিলে একটি তরমুজের দাম হচ্ছে কমপক্ষে ৩০০/৫০০ টাকা পর্যন্ত।
অন্যদিকে, লকডাউনে ক্রেতা ও জনসাধারণের উপস্থিত কম থাকায় বিক্রি তুলনামূলক কম থাকলেও তাদের সিন্ডিকেটের দাম ঠিক থাকছে। কারণ কমলাভে ১০ টি তরমুজ বিক্রি করলে যে লাভ হয় সেটা যদি সিন্ডিকেট করে ১টি বিক্রি করে ১০টির সমান লাভ করছে। তবে, রোজার আগে তরমুজের দাম ছিলো ২০ /২৫ টাকা এখন বর্তমানে সেটা ৫০টাকা কেজি দরে বিক্রয় করছে।
সাধারণ খুচরা এক ক্রেতা আমিনুল ইসলাম নামে এক যুবক জানান, গত ৫দিন আগে তিনি খুলনা শহরে গিয়েছিলাম, সেখান থেকে একটি তরমুজ কিনেছিলাম ১৫টাকা কেজি দরে, ফলটির ওজন হয়েছিল ১৬কেজি দাম নিয়েছিল বিক্রেতা ২৪০টাকা, কিন্তুু কালীগঞ্জে এসে দেখলাম তরমুজের কেজি ৪৫/৫০টাকা।
এ বিষয়ে বরিশালের সময়ের খবর অনলাইন পোর্টাল পত্রিকার সম্পাদক আরিফুল ইসলাম সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি জানান, বরিশালের তরমুজের চাষে এবার অন্য বছরের চেয়ে ফলন বেশি এবং বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি না হওয়ার কারণে জমিতে তরমুজের সাইজ ভালো ও রোগ তেমন একটা নেই, যে কারণে ফলন বেশি হয়েছে।
তিনি আরও জানান বরিশালের তরমুজ পাইকারি ব্যাপারীরা জমির থেকে দামদর করে গড়ে সব কিনে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলার আড়ৎদার নিকট বিক্রয় করে থাকেন, সেই আড়ৎ খুচরা ক্রেতারা কিনে বাজারে বিক্রি করে, তবে দামের ব্যাপারে বললে তিনিও চমকে ওঠেন। তিনি বলেন বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, সাতক্ষীরা সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে তরমুজ ট্রলার কিংবা ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যায়। ভোর থেকেই চলে বেচাকেনা। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর তরমুজের ফলন ভালো। কৃষকরাও দাম পাচ্ছে তাদের চাহিদা অনুযায়ী এবং খুচরা বিক্রেতারা আড়ৎ থেকে নিয়মিতই তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
মেহেদী হাসান নামে এক ক্রেতা বলেন, এরা বিভিন্ন জায়গা থেকে এক একজন তরমুজ ক্রয় করলেও সকলের কাছে একই দাম। এ তরমুজ ব্যবসায়িদের একটা সিন্ডিকেট আছে, যে সিন্ডিকেটর কাছে সাধারণ মানুষ জিম্মি হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে শুক্রবার জুম্মার নামাজ পর সাংবাদিক ফিরোজ আহম্মেদ কালীগঞ্জ বাসষ্টান্ডে খুচরা এক তরমুজ ব্যবসায়ী উলফা ও কার্তিকের কাছে প্রশ্ন করলে তার সাথেও নানা প্রকার মিথ্যা কথা বলে তর্ক ও খারাপ আচারণ করে।
তখন তার কাছে নাম জানতে চাইলে সে নিজের নাম গোপন করে অন্য এক ব্যবসায়ির নাম বলে। বারবার তার নাম উলফা বলে পরিচয় দেয়। যা স্থানীয়রা এগিয়ে এসে সংবাদ কর্মিকে দেখে বলে আপনার কাছে যে নাম বলছে সেটা মিথ্যা, সে একজন হিন্দু ধর্মাবলাম্বী। এরা রমজান মাসে অসাধু ব্যবসায়ী হয়ে সাধারণ ক্রেতাদের ঠকিয়ে এরা সিন্ডিকেট করে দাম নির্ধারণ করে ক্রেতাদের জিম্মি করে ব্যবসা করে।
সবুজদেশ/এএম