যশোরঃ
প্রেমিকাকে ফেসবুক লাইভে রেখে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। আত্মঘাতী ওই যুবকের নাম জিহাদী হাসান। তিনি যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার সাদিপুর গ্রামের তাহের আলীর ছেলে।
জিহাদী চট্টগ্রামে ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) কর্মচারী হিসেবে চাকরি করতেন। সেখানে অফিসে বসেই গত বুধবার প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
পরিবার জানিয়েছে, বেনাপোল পোর্ট থানার সরবানহুদা গ্রামের সেলিমুল হকের মেয়ে সানজিদা হক মিমের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল জিহাদীর। তাদের সম্পর্কের কথা দুই পরিবার জানতো। তাদের বিয়ে হওয়ারও কথা ছিল।
কিন্তু মিম একাধিক ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার মিমকে ভিডিও কল দেন জিহাদী। এ সময় তিনি রশি টাঙিয়ে মিমের কাছে তার শেষ ইচ্ছার কথা জানান। তিনি জানতে চান, মিম তাকে গ্রহণ করবে কিনা, না করলে তিনি আত্মহত্যা করবেন।
অপরপ্রান্ত থেকে মিম সব দৃশ্য দেখছিলেন। একপর্যায়ে ‘আত্মহত্যা করলে তার কিছু যায় আসে না’ মিমের কাছ থেকে এমন কথা শোনর পর জিহাদি গলায় দড়ি দেন।
জিহাদীর ছোট ভাই মেহেদী হাসান বলেন, প্রায় দুই বছর ধরে তার ভাইয়ের সঙ্গে মিমের সম্পর্ক। মিমের পরিবারও আমাদের বাড়িতে যাতায়াত করে। মিমকে তারা তার ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ে দিতেও রাজি হয়েছিল।
তিনি জানান, তার ভাই জিহাদী চট্টগ্রামে সিঅ্যান্ডএফ কর্মচারী। মিম যশোরে থেকে লেখা করেন। তার লেখাপড়ার খরচও ভাই দিত।
‘সম্প্রতি জিহাদী জানতে পারেন মিম আরও ছেলেদের সঙ্গে প্রেম করে। এ বিষয় নিয়ে মিমের সঙ্গে ভাইয়ের কথা হয়। মিম ভাইকে প্রত্যাখ্যান করায় অফিসে বসেই আত্মহত্যা করেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম থেকে তার লাশবাহী গাড়ি রওনা হয়েছে বলে তার পরিবার জানিয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জিহাদী খুবই সরল প্রকৃতির ছেলে ছিল। তিনি ওই মেয়েকে ভালোবাসতেন। এতে উভয় পরিবারের কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু মেয়েটি তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিম জানান, জিহাদীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিন সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি সে সিগারেট খাচ্ছে- এমন কথা শুনে তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখব না বলেছি। এতে সে অভিমান করে আত্মহত্যা করেছে।
মিমের বাবা সেলিমুল হক বলেন, জিহাদীর সঙ্গে মেয়ের সম্পর্কের কথা জানি। তার সঙ্গে মেয়েকে বিয়ে দিতেও আমার কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু কী কারণে সে আত্নহত্যা করেছে জানি না।
বেনাপোল স্থলবন্দর থানার ওসি মামুন খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, খবর শুনেছি। ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।
সবুজদেশ/এসইউ