ঢাকা ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১৫ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় মৃত হিন্দু নারীকে সমাহিত করলো মুসলিমরা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:৫৭:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুলাই ২০২১
  • ২৭৩ বার পড়া হয়েছে।

ছবি:প্রতীকী

যশোরঃ

যশোরের চৌগাছায় করোনায় জোসনা রানী (৭০) নামে এক হিন্দু নারী উপজেলা মডেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

শুক্রবার ভোরে মৃত্যুর পর হাসপাতালের মেজেতে লাশ পড়ে থাকলেও তা নিতে আসেনি তার স্বজন কিংবা স্বজাতির কেউই।

এ খবর জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী এনামুল হক স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অগ্রযাত্রা টিমকে খবর দেন। তারা ভ্যানে করে লাশটি পৌর শহরের কপোতাক্ষ নদের পাড়ে পান্টিপাড়া শ্মশানে সমাহিত করেন।

অগ্রযাত্রা সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি হাজী হাসিবুর রহমান বলেন, আমরা করোনার সময়ে মানুষের সেবা দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আজ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহাদয় আমাকে জানান হাসপাতালে করোনায় মৃত এক হিন্দু নারীর লাশ রয়েছে। দীর্ঘ সময় হাসপাতালের মেজেতে লাশ পড়ে থাকলেও তা নিতে আসেননি তার স্বজন কিংবা স্বজাতির কেউ। ফলে লাশটি সমাহিত করতে হবে। পরে আমরা ভ্যানে করে লাশটি পৌর শহরের কপোতাক্ষ নদের পাড়ে পান্টিপাড়া শ্মশানে সমাহিত করেছি।

অগ্রযাত্রা সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, জগতে কেউ কারো নয়, আজ আবারো তা প্রমাণ হলো, বৃদ্ধা হিন্দু মহিলা মারা যাওয়ার পর তার আত্মীয়-স্বজনরা লাশের পাশেই আসেনি। অনেকক্ষণ হাসপাতালের মেঝেতে পড়েছিল। আমরা কয়েকজন মুসলিম যুবক তাকে সমাহিত করেছি। তবে এ সময় বৃদ্ধার এক ছেলে উপস্থিত থাকলেও তারা মায়ের লাশ স্পর্শ করেনি। এগিয়ে যাননি আত্মীয়-স্বজন বা শ্মশান কর্তৃপক্ষও।

অগ্রযাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান প্রিয় বলেন, ‘খবর পেয়ে অগ্রযাত্রা সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি হাজী হাসিবুর রহমান, আলমগীর হোসেন আলমসহ আমাদের টিমের সদস্য আব্দুর রশিদ রাজু, ফয়সাল আহমেদলাশ ও আমি বৃদ্ধার লাশটি হাসপাতাল থেকে নামিয়ে ভ্যানযোগে শ্মশানে নিয়ে যায়। পরে সদস্যরা লাশের গোসল দিয়ে কাপড় পরিয়ে সমাহিত করে।

এ ব্যাপারে সুখপুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোতা মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, ঘটনাটি দুঃখজনক। হিন্দুরা কেউ এগিয়ে আসেনি। এমন কি পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলে মায়ের লাশ বাড়িতে নিতেও অপারগতা প্রকাশ করেন বৃদ্ধার ছেলেরা। করোনার রোগী হওয়ায় শ্মশান কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসেননি। তবে মুসলিম যুবকরা যারা এ কাজটি করেছেন তাদেরকে আমি সাধুবাদ জানাই।

জোসনা রানী উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের পুড়াপাড়া গ্রামের ক্লাবপাড়ার মৃত সনতোষ কর্মকারের স্ত্রী।

Tag :

করোনায় মৃত হিন্দু নারীকে সমাহিত করলো মুসলিমরা

Update Time : ০৭:৫৭:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ জুলাই ২০২১

যশোরঃ

যশোরের চৌগাছায় করোনায় জোসনা রানী (৭০) নামে এক হিন্দু নারী উপজেলা মডেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

শুক্রবার ভোরে মৃত্যুর পর হাসপাতালের মেজেতে লাশ পড়ে থাকলেও তা নিতে আসেনি তার স্বজন কিংবা স্বজাতির কেউই।

এ খবর জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী এনামুল হক স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অগ্রযাত্রা টিমকে খবর দেন। তারা ভ্যানে করে লাশটি পৌর শহরের কপোতাক্ষ নদের পাড়ে পান্টিপাড়া শ্মশানে সমাহিত করেন।

অগ্রযাত্রা সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি হাজী হাসিবুর রহমান বলেন, আমরা করোনার সময়ে মানুষের সেবা দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আজ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহাদয় আমাকে জানান হাসপাতালে করোনায় মৃত এক হিন্দু নারীর লাশ রয়েছে। দীর্ঘ সময় হাসপাতালের মেজেতে লাশ পড়ে থাকলেও তা নিতে আসেননি তার স্বজন কিংবা স্বজাতির কেউ। ফলে লাশটি সমাহিত করতে হবে। পরে আমরা ভ্যানে করে লাশটি পৌর শহরের কপোতাক্ষ নদের পাড়ে পান্টিপাড়া শ্মশানে সমাহিত করেছি।

অগ্রযাত্রা সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সহ-সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, জগতে কেউ কারো নয়, আজ আবারো তা প্রমাণ হলো, বৃদ্ধা হিন্দু মহিলা মারা যাওয়ার পর তার আত্মীয়-স্বজনরা লাশের পাশেই আসেনি। অনেকক্ষণ হাসপাতালের মেঝেতে পড়েছিল। আমরা কয়েকজন মুসলিম যুবক তাকে সমাহিত করেছি। তবে এ সময় বৃদ্ধার এক ছেলে উপস্থিত থাকলেও তারা মায়ের লাশ স্পর্শ করেনি। এগিয়ে যাননি আত্মীয়-স্বজন বা শ্মশান কর্তৃপক্ষও।

অগ্রযাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হাসান প্রিয় বলেন, ‘খবর পেয়ে অগ্রযাত্রা সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতি হাজী হাসিবুর রহমান, আলমগীর হোসেন আলমসহ আমাদের টিমের সদস্য আব্দুর রশিদ রাজু, ফয়সাল আহমেদলাশ ও আমি বৃদ্ধার লাশটি হাসপাতাল থেকে নামিয়ে ভ্যানযোগে শ্মশানে নিয়ে যায়। পরে সদস্যরা লাশের গোসল দিয়ে কাপড় পরিয়ে সমাহিত করে।

এ ব্যাপারে সুখপুকুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোতা মিয়া বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি, ঘটনাটি দুঃখজনক। হিন্দুরা কেউ এগিয়ে আসেনি। এমন কি পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলে মায়ের লাশ বাড়িতে নিতেও অপারগতা প্রকাশ করেন বৃদ্ধার ছেলেরা। করোনার রোগী হওয়ায় শ্মশান কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসেননি। তবে মুসলিম যুবকরা যারা এ কাজটি করেছেন তাদেরকে আমি সাধুবাদ জানাই।

জোসনা রানী উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের পুড়াপাড়া গ্রামের ক্লাবপাড়ার মৃত সনতোষ কর্মকারের স্ত্রী।