ঢাকা ০৫:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নয়াপল্টনে হেলমেট পরা লোকজন ছাত্রলীগের: ফখরুল

Reporter Name

সবুজদেশ ডেক্সঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, নয়াপল্টনে হেলমেট পরা কিছু মানুষ এসে গাড়ির ওপরে আক্রমণ শুরু করল। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, এই হেলমেট পরা লোকজন ছাত্রলীগের; অসমর্থিত খবরে আমরা এটা জানতে পেরেছি। আজকের এ হামলার সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত। পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে আমরা মনে করি।

আজ বুধবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিনা কারণে, বিনা উসকানিতে যখন নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণ মিছিল আসছিল, সেখানে পুলিশ ঢুকে গিয়ে হঠাৎ করে বাঁধা দিতে শুরু করে এবং এরপরেই টিয়ারগ্যাস ছোড়া হয়েছে, গুলি চালানো হয়েছে। বহু নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তারপরে হঠাৎ করেই পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগাল। পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগাল কারা?

নয়াপল্টনে সংঘর্ষের ঘটনার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ঘটনা ঘটানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে, নির্বাচনের কর্মসূচিকে বানচাল করা, নির্বাচনকে বানচাল করা। এই আক্রমণ শুধু বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ নয়, এটা গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ, এটা সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের ওপর আক্রমণ। তিনি বলেন, যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে, বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে, যখন উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তখনই এই আক্রমণ। সেই আক্রমণটা সরাসরি সরকারের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশে আসল।

ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নয়াপল্টনের এই ঘটনার পর সন্ধ্যায় অফিস থেকে যারা বেরিয়েছেন, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বগুড়ার সাবেক সাংসদ ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হেলালুজ্জামান লালু, গ্রাম সরকার সম্পাদক আনিসউজ্জামান খান এবং খুলনা জেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমির রেজা খানসহ কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এটাকে আমরা হালকা করে দেখছি না। আমরা নির্বাচন কমিশনকে পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে বলতে চাই, অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় এই নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে এতটুকু দ্বিধাবোধ করব না। এর দায়-দায়িত্ব বর্তাবে সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের ওপর ও সরকারের ওপর।

ফখরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর সরকারের একটি নির্দিষ্ট মহল অভিযোগ করল যে, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা অত্যন্ত সাজানো একটি পরিকল্পনা। সেই পরিকল্পনা হচ্ছে, এই সাজানো হামলা করে বিএনপিকে দায়ী করে আবার বিএনপির ওপর হামলা, নির্যাতন শুরু করা। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আজকে সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এই প্লট তৈরি করেছে।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী আজকে গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থী প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ব্যক্তির সঙ্গে মিটিং করেছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান গণভবনে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর পদকে অপব্যবহার করে সরকারি সুযোগ, সুবিধা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। তিনি বলেন, আমরা দেখতে চাই, নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

About Author Information
আপডেট সময় : ০৯:৩১:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৮
১০৩৪ Time View

নয়াপল্টনে হেলমেট পরা লোকজন ছাত্রলীগের: ফখরুল

আপডেট সময় : ০৯:৩১:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ নভেম্বর ২০১৮

সবুজদেশ ডেক্সঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, নয়াপল্টনে হেলমেট পরা কিছু মানুষ এসে গাড়ির ওপরে আক্রমণ শুরু করল। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, এই হেলমেট পরা লোকজন ছাত্রলীগের; অসমর্থিত খবরে আমরা এটা জানতে পেরেছি। আজকের এ হামলার সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত। পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে আমরা মনে করি।

আজ বুধবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিনা কারণে, বিনা উসকানিতে যখন নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণ মিছিল আসছিল, সেখানে পুলিশ ঢুকে গিয়ে হঠাৎ করে বাঁধা দিতে শুরু করে এবং এরপরেই টিয়ারগ্যাস ছোড়া হয়েছে, গুলি চালানো হয়েছে। বহু নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তারপরে হঠাৎ করেই পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগাল। পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগাল কারা?

নয়াপল্টনে সংঘর্ষের ঘটনার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এই ঘটনা ঘটানোর উদ্দেশ্য হচ্ছে, নির্বাচনের কর্মসূচিকে বানচাল করা, নির্বাচনকে বানচাল করা। এই আক্রমণ শুধু বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণ নয়, এটা গণতন্ত্রের ওপর আক্রমণ, এটা সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের ওপর আক্রমণ। তিনি বলেন, যখন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে, বিরোধী দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে, যখন উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তখনই এই আক্রমণ। সেই আক্রমণটা সরাসরি সরকারের কাছ থেকে নির্বাচন কমিশনের যোগসাজশে আসল।

ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নয়াপল্টনের এই ঘটনার পর সন্ধ্যায় অফিস থেকে যারা বেরিয়েছেন, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বগুড়ার সাবেক সাংসদ ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হেলালুজ্জামান লালু, গ্রাম সরকার সম্পাদক আনিসউজ্জামান খান এবং খুলনা জেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমির রেজা খানসহ কমপক্ষে ৬০ থেকে ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এটাকে আমরা হালকা করে দেখছি না। আমরা নির্বাচন কমিশনকে পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই মামলাগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। পুলিশ প্রশাসনকে বলতে চাই, অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় এই নির্বাচনের ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে এতটুকু দ্বিধাবোধ করব না। এর দায়-দায়িত্ব বর্তাবে সম্পূর্ণ নির্বাচন কমিশনের ওপর ও সরকারের ওপর।

ফখরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর সরকারের একটি নির্দিষ্ট মহল অভিযোগ করল যে, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা অত্যন্ত সাজানো একটি পরিকল্পনা। সেই পরিকল্পনা হচ্ছে, এই সাজানো হামলা করে বিএনপিকে দায়ী করে আবার বিএনপির ওপর হামলা, নির্যাতন শুরু করা। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আজকে সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এই প্লট তৈরি করেছে।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী আজকে গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থী প্রায় সাড়ে ৪ হাজার ব্যক্তির সঙ্গে মিটিং করেছেন, সরকারি প্রতিষ্ঠান গণভবনে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর পদকে অপব্যবহার করে সরকারি সুযোগ, সুবিধা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন। তিনি বলেন, আমরা দেখতে চাই, নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।