চুয়াডাঙ্গা নবান্ন উৎসব পালন অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস
সবুজদেশ ডেক্সঃ চুয়াডাঙ্গা জেলাই গ্রাম-বাংলার মানুষের সাথে মিশে আছে নবান্ন উৎসব জীবনানন্দ দাশের কবিতা‘আবার আসিব ফিরে ধান সিঁড়িটির তীরে এই বাংলায়/ হয়তো মানুষ নয় হয়তো শঙ্খচিল শালিখের বেশে/ হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে’। বাংলার আদিগন্ত মাঠ জুড়ে এখন হলুদে-সবুজে একাকার। নয়নাভিরাম অপরূপ প্রকৃতি। সোনালি ধানের প্রাচুর্য। আনন্দধারায় ভাসছে কৃষকের মন-প্রাণ। বাড়ির উঠোন ভরে উঠবে নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে। এসেছে অগ্রাহায়ণ। হিম হিম হেমন্ত দিন। ধান কাটা ও নতুন চালে তৈরি পিঠা খাওয়ার মধ্যে দিয়ে চুয়াডাঙ্গায় নবান্ন উৎসবকে বরণ করে নিলো কৃষকরা।
এই উৎসবের ধান কাটা, ঝাড়া, ঢেঁকিতে নতুন চালের আটা দিয়ে বিভিন্ন রকমের পিঠা বানানো হয়। মাথায় কোমরে গামছা ও গেঞ্জি পরে মাঠে ধান কাটার মাধ্যমে নবান্ন উৎসবের সূচনা করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে শংকরচন্দ্র ইউনিয়নে পরিষদের সহযোগিতায় ও জেলা প্রশাসকের আয়োজনে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওয়াশীমুল বারীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক গোপাল চন্দ্র দাস।
প্রধান অতিথি গোপাল চন্দ্র দাস জীবনানন্দ দাশের ‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতার কয়েক লাইন আবৃত্তি করে বলেন- নবান্ন আমাদের বাঙালির প্রাণের উৎসব। এ নবান্ন উৎসবের আনন্দ সকলের সাথে ভাগাভাগি করতে পেরে আমি খুশি। এ দেশের গ্রামবাংলার মানুষের সাথে মিশে আছে নবান্ন উৎসব। এ সময় মানুষ মাঠ থেকে ধান কেটে ঘরে তোলে যুগ যুগ ধরে বাংলার মানুষ ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে চলেছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ওয়াশীমুল বারী তার বক্তব্যে বলেন, গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে ও এগুলো চর্চার উদ্দেশ্যে নবান্ন উৎসবের আয়োজন। নবান্ন উৎসবের সাথে মিশে আছে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। প্রাচীনকাল থেকেই বাঙালিয়ানার পরিচয় পাওয়া যায় এই নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে।
নবান্ন উৎসব উপলক্ষে কৃষকদের বাড়িতে বাড়িতে পিঠা মেলার আয়োজন করা হয়। পরে স্থানীয়রা লোক সংগীত পরিবেশন করেন। এ সময় স্থানীয় এক কৃষক তার ছোটকালের এটা সভার স্মৃতি সকলের সামনে তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) খোন্দকার ফরহাদ আহমদ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা পারভীন, সহকারি কমিশনার (রাজস্ব, ভূমি অধিগ্রহণ শাখা) হাসিনা মমতাজ, সহকারি কমিশনার পপি খাতুন, সহকারি কমিশনার ইফফাত আরা জামান উর্মি, সহকারি কমিশনার শিবানী সরকার, সহকারি কমিশনার আমজাদ হোসেন, সহকারি কমিশনার জান্নাতুল ফেরদৌসসহ বিভিন্ন কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ।
আল মামুন সোহাগ
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি